Sandeshkhali

বেহাল রাস্তা, ১২বছরেও হুঁশ নেই প্রশাসনের

জেলা

রাস্তা বললে ভুল হবে। কার্যত মরণফাঁদ! দুর্ঘটনা এখন রোজনামচা। বলছেন প্রত্যন্ত সন্দেশখালির মানুষ। কবে শেষ কাজ হয়েছে মনে করতে পারেন না নদীবেষ্টিত তুষখালী থেকে আমতলীর মানুষ। নির্বাচন এলে প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছুই মেলে না। সামনে আরও একটি বড় নির্বাচন। এবারেও হয়তো সেই প্রতিশ্রুতি জুটবে আমাদের কপালে। বলছেন পথ চলতি সাধারণ মানুষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্কুল শিক্ষক জানালেন, জীবন হাতে করে নিয়ে যাতায়াত করি। ১৫ কিমি এই রাস্তায় পড়ে ২টি এমএসকে, ১টি এসএসকে স্কুল, ২টি সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র। এছাড়াও তুষখালী, ধুচনেখালি, জয়গোপালপুর, আমতলি বাজারে যেতে একমাত্র ভরসা এই দীর্ঘ রাস্তাটি। তাছাড়া আতাপুর কেনারাম, আমতলী, মণিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা যাতায়াত করে এই  রাস্তা দিয়ে। দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে। প্রসূতি মায়েরা অনেক সময় রাস্তাতেই প্রসব করতে বাধ্য হন। অসুস্থ মানুষ, বয়স্কদের যাতায়াত একপ্রকার বন্ধ। একমাত্র ভরসা ইঞ্জিন ভ্যান। প্রবল ঝাকুনির ভয়ে যাত্রীরা ভ্যানের সামনে বসার জায়গা থাকলে যাবেন নতুবা যাবেন না। ৬ জনের পরিবর্তে বেশিরভাগ সময় ২জন যাত্রীকে নিয়ে যেতে বাধ্য হন অধিকাংশ ইঞ্জিন ভ্যান চালক। ফলে আয় কম হচ্ছে। জানালেন কয়েকজন ইঞ্জিন ভ্যান চালক। 
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি বিধানসভার তুষখালী থেকে আমতলী বাজার পর্যন্ত ১৫ কিমি রাস্তার হাল বেহাল। প্রবীণ কিছু মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেল বামফ্রন্টের সময় মাটির রাস্তা করা হয়। পরবর্তী সময়ে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ গঠন হয়। তখন সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদ ওই রাস্তায় ইট পাতে। সম্ভবত ১৯৯০ সালের দিকে। ২০০০ সালে পিচের রাস্তা করা হয়। সিপিআই(এম) নেতা নিরাপদ সর্দার তখন সন্দেশখালি- ২ব্লকের সভাপতি। উত্তর ২৪পরগনা জেলা সভাধিপতি অপর্না গুপ্ত। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী সন্দেশখালির বিধায়ক কান্তি বিশ্বাস সেই রাস্তার উদ্বোধন করেন।
২০১১ সাল পর্যন্ত রক্ষনাবেক্ষণ হয়। তার পর ১২ বছরে একবারও রাস্তার কাজ হয় নি। ওই রাস্তা দিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার গোসাবা, আমতলী, বাঘনা সহ উত্তর ২৪ পরগনা জেলার যোগেশগঞ্জ, সর্দারপাড়া, হেমনগর, সন্দেশখালির মনিপুর, কোড়াকাটি, আতাপুর, দুর্গামন্ডপ, দাউদপুর সুখদোয়ানির হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত এই রাস্তায়। কয়েক শ রিক্সা, টোটো চালকের পরিবার বেঁচে আছেন। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা। মূলত এস সি এস টি মানুষের বাস। প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দার জানান, ২০১২-১৩ সালে বিধানসভায় বার বার বলার পরেও মমতা ব্যানার্জির সরকার গুরুত্ব দেয় নি। উন্নয়নের টাকা আত্মসাৎ করা যাদের প্রধান লক্ষ্য, তারা এসব নিয়ে কেন ভাববে?

Comments :0

Login to leave a comment