DENGUE CENTRE

পতঙ্গবিদের অভাব কেন, ডেঙ্গু রোধে ড্রোন কোথায়

জাতীয়

রাজ্য দিচ্ছে না তথ্য। ডেঙ্গু মোকাবিলায় তৃণমূল সরকারের ভূমিকায় ক্ষোভও সর্বত্র। তথ্য না পাওয়ার অভিযোগ তুলছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবিয়া নিজে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রের সরকারই বা কী করছে। 

কেবল কলকাতাতেই ডেঙ্গু আক্রান্ত বেড়েছে আড়াই গুন। কলকাতা কর্পোরেশনের হিসেবেই মাঝ সেপ্টেম্বরে কলকাতায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে গত বছর এ রাজ্যে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬৭ হাজার ২৭১, দেশে সবচেয়ে বেশি।  

দেশেও উদ্বেগজনক মাত্রায় বাড়ছে এডিস মশাবাহিত এই রোগ। সংসদেই তা স্বীকারও করেছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এসপি সিং বাঘেল স্বীকার করেছেন  যে পতঙ্গবিদের অভাব ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। ১৯৯৬ সালে মাত্র ৭টি রাজ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। এখন মধ্য ভারত বাদে প্রায় সব রাজ্যে মিলছে রোগী। 

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে পতঙ্গবিদ নিয়োগে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বাজেটে। কিন্তু নিয়োগ হবে চুক্তিভত্তিক। গত জুলাইয়ে লোকসভায় বাঘেল তা নিয়ে প্রশ্নের মুখেও পড়েন। কিন্তু পতঙ্গবিদের অভাব পূরণের কাজ এগিয়েছে কতটা জানাতে পারেননি।  

১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কলকাতা কর্পোরেশনের ডেঙ্গু নির্ণয় কেন্দ্রগুলিতে ৩ হাজার ৮০০ জনের রক্তে ডেঙ্গু ধরা পড়েছে। এই সময়ে গত বছরে ১ হাজার ৫০০ জনের ডেঙ্গু ধরা পড়েছিল। 

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল সরকারের তথ্য আড়ালের অভ্যাস বারবারই প্রশ্নের মুখে পড়েছে। এবারই রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃতের স্পষ্ট তথ্য নেই। সরকারি হিসেব অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ৩। তবে বেসরকারি হিসেব অনুযায়ী এই সংখ্যা ৫২ ছাড়িয়েছে। 

১৯৯৬ সালে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ৫১৭। ২০০৯ পর্যন্ত বছরে আক্রান্তের সংখ্যা কমই থেকেছে। ২০১০-এ আক্রান্তের সংখ্যা হয় ২৮ হাজার ২৯২। ২০১৩’তে হয় ৭৫ হাজার ৮০৮। ২০১৫’তে ৯৯ হাজার ৯১৩, ২০১৬ তে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ১৬৬। ২০১৯ সালে সংখ্যা বেড়ে হয় ২ লক্ষ ৫ হাজার ২৪৩। 

কেন্দ্রের তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে করোনা সংক্রমণের বছর ২০২০’তে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা নেমে হয় ৪৪ হাজার ৫৮৫।  কিন্তু ২০২১ সালেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষে পৌঁছায়, ২০২২ সালে আরও বেড়ে হয় ২ লক্ষ ৩৩ হাজার। 

কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী গত বছর আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি পশ্চিমবঙ্গেই, ৬৭ হাজার ২৭১। উত্তর প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৯ হাজার ৮২১, বিহারে ১৩ হাজার ৯৭২।

কেন্দ্রের বক্তব্য, বাস্তুতন্ত্র এবং পরিবেশের পাশাপাশি পতঙ্গবিদের অভাব গুরুত্বপূর্ণ কারণ। কিন্তু ব্যবস্থা কী? প্রতিমন্ত্রী বাঘেল বলছেন, ‘‘জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনে বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে চুক্তিতে পতঙ্গবিদ নিয়োগের জন্য।’’ তাঁর আরও দাবি, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) রিমোট সেনসিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে উপগ্রহ থেকে তোলা ছবির সাহায্য নেবে। জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম বা জিআইএস, ড্রোন এবং আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স ব্যবহার করছে বিপজ্জনক এলাকা চিহ্নিতকরণে। 

প্রশ্ন উঠছে সংক্রমণের বাড়াবাড়ির সময় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে কতটা।

Comments :0

Login to leave a comment