গত বছর ডিসেম্বর মাসে নিম্ন আদালত এই একই রায় দিলে তাকে চ্যালেজ্ঞ জানিয়ে হাই কোর্টের যায় ঈদগাহ কমিটি।
উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি অযোধ্যায় মসজিদ ভেঙে মন্দির করার আন্দোলনের সময় থেকে বারাণসী এবং মথুরা নিয়ে স্লোগান তুলে এসেছে। বলা হতো, ‘ইয়ে তো সিরফ ঝাঁকি হ্যায়, কাশী মথুরা বাকি হ্যায়’।
মথুরাতেও শাহী ঈদগাহ মসজিদ ঘিরে বিতর্ক তোলা হয়েছে যে হিন্দু মন্দির ভেঙে তৈরি এই মসজিদ। আদালতে তা নিয়ে আবেদনের জেরে বৃহস্পতিবার সমীক্ষায় অনুমোদন দেয় এলাহাবাদ হাইকোর্ট।
এর আগে বারাণসী বা কাশীতে জ্ঞানবাপী মসজিদে ‘বিজ্ঞানসম্মত সমীক্ষা’-র আবেদনে সায় দিয়েছিল আদালত। সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয় ভারতীয় প্রত্নতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ বা এএসআই’কে। কিন্তু বারবার সময়সীমা পিছাচ্ছে এএসআই। গত ১১ ডিসেম্বর ফের বারাণসী জেলা আদালতে সময়সীমা পিছানোর আবেদন দাখিল করে এএসআই। মেয়াদ বাড়িয়ে ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছে আদালত।
সব মিলিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার সময়সীমা চারবার পিছালো এএসআই। দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিক কেন্দ্রগুলি রক্ষণাবেক্ষণ এবং সমীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত এই প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য, বিজ্ঞানসম্মত সমীক্ষার কাজ শেষ হয়েছে। তবে সমীক্ষার রিপোর্ট দিতে হলে প্রাপ্ত প্রমাণের পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। তার জন্য দেরি হচ্ছে।
উল্লেখ্য বাবরি মসজিদ ভেঙে রামমন্দির তৈরির মামলায় রায় দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে পরে অন্য ধর্মীয় উপাসনা ক্ষেত্রে দেশে চালু আইন মানা হবে। ১৯৯১ সালে উপাসনাস্থল আইনে বলা হয়েছিল যে তার চরিত্র বদলানো যাবে না। ১৯৪৭’র ১৫ আগস্ট যে উপাসনা স্থলের যা চরিত্র তা বজায় রাখতে হবে। বারাণসীর জ্ঞানবাপী এবং মথুরার শাহী ঈদগাহ এই আইনের আওতায় পড়ে।
বিভিন্ন অংশই মনে করাচ্ছেন যে হিন্দুত্ববাদীদের ভেঙে দেওয়া বাবরি মসজিদ ঘিরেও একাধিক সমীক্ষা হয়েছে। কিন্তু কোনও সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়নি যে মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোনও সমীক্ষা থেকে মেলা তথ্যের উল্লেখও ছিল না। ভাবাবেগের ভরসায় ভেঙে দেওয়া মসজিদের জমিতে মন্দির গড়ার অনুমোদন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।
মথুরায় শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের পাশেই এই ঈদগাহ। তিন সদস্যের ‘অ্যাডভোকেট কমিশনার’-দের দল তৈরি করেছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট জানিয়েছে আদালতের তত্ত্বাবধানে হবে সমীক্ষা।
রাজনৈতিক স্তরে বিভিন্ন অংশের বক্তব্য, নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে তত মন্দির-মসজিদ বিবাদকে মদত দেওয়া হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থেই। ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। ভাবাবেগে হাওয়া দেওয়ার কাজ চলবে কাশী, মথুরা নিয়েও।
Comments :0