Mysterious Death

গড়িয়ায় ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার একই পরিবারের ৩ সদস্যের ঝুলন্ত দেহ

রাজ্য

একই পরিবারের ৩ জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ। বুধবার সকালে গড়িয়া স্টেশনের কাছে উত্তর বালিয়া এলাকায় ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে পুলিশ তাঁদের মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মৃতরা হল স্বপন মৈত্র (৭৫), অপর্ণা মৈত্র (৬৮) ও সুমনরাজ মৈত্র (৩৯)। মৃতদেহ তিনটি ময়নাতদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে। আত্মঘাতীর ঘটনা বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা। আর্থিক অনটনে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই পরিবার অভিমত প্রতিবেশীদের। 
এদিকে একই পরিবারের বাবা, মা ও তাঁদের একমাত্র পুত্র’র আত্মঘাতীর ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। শোকস্তব্ধ এলাকার মানুষ। ঘটনার কয়েকদিন আগে সুমনরাজ মৈত্র ফেসবুক লাইভে বলেছিলেন ‘সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি’। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা এই বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলে জানা গেছে। প্রতিবেশীরা জানান, সকাল থেকেই বন্ধ ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। কলিং বেল টেপার পরও কোন সাড়া শব্দ না পাওয়ায় তাঁরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। ফ্ল্যাটের ভিতরে তিন জায়গায় ৩ জনের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। 
প্রতিবেশীরা জানান, কর্মজীবনে পেশায় সিরামিক ইঞ্জিনীয়ার ছিলেন স্বপন মৈত্র। পরিবার নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় ভাড়া ছিলেন। পরবর্তী সময়ে তাঁর শ্যালক দেবাশিস ঘোষ ওই ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেন। সেখানেই তাঁরা ছিলেন। বছর দুয়েক আগে স্বপন মৈত্র’র বাইপাস সার্জারি হয়। তাঁর স্ত্রীরও বয়সজনিত অসুস্থা ছিল। মাসে তাঁদের নিয়মিত ওষুধের খরচ ছিল। তাঁদের একমাত্র পুত্র কাজের চেষ্টা করেও কোন কাজ পাননি। স্বাভাবিক কারণেই এই পরিবারটি আর্থিক অনটনে মানসিক অবসাদে ভুগছিল। সেকারণেই এই পরিবারের আত্মঘাতীর ঘটনা বলে তাঁরা অনুমান করছেন। 
এদিন তাঁরা আরো জানান, গত শুক্রবার স্বপন মৈত্রকে শেষ দেখা গিয়েছিল। কারো সঙ্গে তাঁরা তেমন মেলামেশা করতেন না। তাঁর শ্যালক দেবাশিস ঘোষ অবিবাহিত। তিনিই দিদি, জামাইবাবুর পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করতেন। এই পরিবারকে প্রতি মাসে ১৪ হাজার টাকা করে তিনি দিতেন বলে শোনা যায়। মাসে প্রায় ৬ হাজার টাকা তাঁদের ওষুধেরই খরচ ছিল। তাঁদের একমাত্র পুত্রও কোন কাজ না পাওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এই আত্মহত্যার ঘটনার নেপথ্যে আর্থিক অনটনই দায়ী বলে তাঁদের ধারণা।
 

Comments :0

Login to leave a comment