ব্যাস আড়াই ফুটের কম। বসে কাজ করারও উপায় নেই। সরু এমন পাইপে প্রায় হামাগুড়ি দিয়ে ঢুকছেন শ্রমিকরা। হাতে ধস কাটার যন্ত্র নিয়ে এভাবেই কাজ করে বেরিয়ে আসতে হচ্ছে।
ধসের ওপারে আটকে রয়েছেন ৪১ সহকর্মী। আটকে রয়েছে ১২ নভেম্বর থেকে। পনেরো দিনেও বের করে আনা যায়নি সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে বন্দি এই শ্রমিকদের। বাড়ছে ক্ষোভ।
একাধিক বিকল্প নিয়েই পরিকল্পনা চালাচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা প্রাধিকরণ বা এনডিএমএ। যুক্ত রয়েছেন একাধিক সংস্থার বিশেষজ্ঞ পেশাদাররা। ধরা পড়ছে হিমালয়ের বুকে ঝুঁকি নিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরির প্রকল্পের বিপদ।
সুড়ঙ্গ তৈরির মূল কাজের দায়িত্বে এনএইচডিসিএল। সংস্থার এমডি মাহমুদ আহমেদ জানিয়েছেন সুড়ঙ্গের ওপরে, পাহারের ওপর থেকে খনন বা ‘ভার্টকাল টানেল’ তৈরির কাজ ৩১ মিটার পর্যন্ত এগিয়েছে। কেবল সুড়ঙ্গের ছাদে পৌঁছাতে কাটতে হবে প্রায় ৮৬ মিটার। তারপর ছাদ ভাঙতে হবে।
ফলে উদ্ধারকারীরা সবচেয়ে ভরসা করছেন মাটির সমান্তরালে যতদূর পাইপ ধস কেটে ঢুকেছে তার মধ্যে দিয়ে কাজ চালানোয়। সিল্কিয়ারায় চারধাম প্রকল্পের এই টানেলের মুখ থেকে ২০০ মিটার দূরে নেমেছিল ধস। আটকে যায় প্রায় ৬০ মিটার রাস্তা। তার ওপারে আটকে রয়েছেন ৪১ শ্রমিক। ধস কাটতে ব্যবহার করা হয় আমেরিকান অগার মেশিন। কিন্তু সেই মেশিন কেবল বিগড়েই যায়নি, ব্লেড এবং যন্ত্রাংশ ভেঙে ছড়িয়ে পড়েছে।
উদ্ধারের কাজে জড়িত শ্রমিকরা পাইপের মধ্যে ঢুকছেন এক একজন করে। ধসের মধ্যে যন্ত্রের ব্লেড বা ভেঙে থাকা অংশ সরাচ্ছেন। চেষ্টা করছেন আরও অন্তত ১০-১২ মিটার খুঁড়তে, যার মধ্যে পাইপ ঢোকানো যায়।
উত্তরাখণ্ডের চার ধাম জুড়ে দেওয়ার চওড়া রাস্তা তৈরির প্রকল্প ঘিরে দুর্ভাবনা আগে থেকেই ছিল। তার প্রধান কারণ হিমালয়ের ভূ-প্রকৃতি, তার শিলার গঠন। চওড়া রাস্তার সবটা পাহাড়ের গা বেয়ে হওয়া সম্ভব নয় বলে কিছু অংশ সুড়ঙ্গে মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। উত্তরকাশীর কাছে সিল্কিয়ারা থেকে বারকোট সেই কাজই চলছিল।
১৫ দিন আটকে থাকা বিপন্ন শ্রমিকদের দেখিয়ে প্রশ্ন উঠছে, নির্মাণকাজে সুরক্ষাবিধিতে আদৌ কতটা নজর দেওয়া হয়েছিল। নাকি, রাজনৈতিক প্রচারের জন্য কেন্দ্রের এই প্রকল্প বিধি উড়িয়ে শেষ করার ওপরেই নজর রেখেছিল বিজেপি সরকার।
সোমবার প্রশাসন জানিয়েছে যে ধসের শেষ মাথা পর্যন্ত ২০০ মিলিমিটারের আরও সরু একটি পাইপ বসেছে বাধা কতটা বোঝার জন্য।
UTTARKASHI DAY 15
আড়াই ফুটের কম চওড়া পাইপে শুয়ে শ্রমিকরা কাটছেন ধস
×
Comments :0