গরিব মানুষ, যাঁদের কাঁচা বাড়ি, তাদের নাম আনতে হবে আবাস যোজনার তালিকায়। বাদ দিতে হবে যাদের বাড়ির পাকা ছাদ রয়েছে। প্রকাশ করতে হবে তালিকা। ছবি তুলে রাখতে হবে। প্রধান, বিডিও’কে দায়িত্ব নিতে হবে।
শুক্রবার করিমপুরে সিপিআই(এম)’র ডাকে জনসভায় এই দাবি তুলেছেন নেতৃবৃন্দ। পার্টির করিমপুর-১ এরিয়া কমিটির ডাকে করিমপুর পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে এই জনসভা হয়। বক্তব্য রাখেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী, নদীয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে। তাঁরা বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ থেকে আবাস যোজনা, সর্বত্র দুর্নীতি করছে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকার। নিয়োগ নেই, যেটুকু হচ্ছে তার মধ্যেও স্বচ্ছতা নেই রাজ্যে।
এদিন জনসভায় দু’টি মিছিল করে আসেন জনতা। একটি নাটনা থেকে অপরটি আসে নতিডাঙ্গা থেকে। উদ্দীপ্ত জনসভায় যোগ দিয়েছেন হাজারে হাজারে মানুষ।
সুজন চক্রবর্তী বলেন, কেউ কেউ ভেবেছিলেন বিজেপি’কে এনে তৃণমূলকে শায়েস্তা করা যাবে। এখন আবার ভাবতে হবে। আট বছর হয়ে গেল চিট ফান্ড দুর্নীতিতে কারও বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়নি। নারদায় জেলে থাকার কথা যাদের, তারা বাইরে ঘুরছে। শিক্ষায় দুর্নীতির মাথারা যেই জেলে যেতে শুরু করেছে দিদিমণি দিল্লিতে দাদার কাছে ছুটে যাচ্ছে। বোঝাপড়া হয়ে যাচ্ছে।
মানুষ ভোটে দাঁড়াতে পারছেন না। অথবা ভোটে দাঁড়ালেও প্রার্থী পদ তুলে নিতে হচ্ছে। জিতলেও গণনা কেন্দ্রে কারচুপি হচ্ছে। এ রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ছিল। বহু পঞ্চায়েতে বামফ্রন্ট প্রার্থীরা হেরেছেন। তার জন্য সে সময়ের বিরোধীদের জেলে যেতে হয়নি। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়নি।
চক্রবর্তী বলেছেন, হিন্দু, মসুলিম, তফসিলি জাতি, আদিবাসী- সব মিলিয়ে মেহনতী মানুষের ঐক্যের ওপর ভর করেই চলেছে বামফ্রন্ট সরকার। সেই ঐক্য ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।
সুমিত দে বলেন, বামপন্থীরা চেয়েছেন যে গরিব মানুষের হাতে থাকবে ক্ষমতা। পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা হয়েছিল। ভোটে বামপন্থীরা কখনও হেরেছে। কিন্তু ওসি’কে দিয়ে বিরোধীদের নামে ‘গাঁজা কেস’ দেয়নি। পুলিশকে বলতে হয়নি ভয় দেখিয়ে দল বদলাতে বাধ্য করে পঞ্চায়েত দখল করে দাও। মানুষের হাতে ক্ষমতা ছিল। আবার মানুষের হাতে পঞ্চায়েতকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
চক্রবর্তী বলেন, তৃণমূলকে ভোট দেওয়া মানুষও প্রশ্ন তুলছেন। প্রশ্ন তুলছেন, খাটের তলা থেকে কোটি কোটি টাকা এল কোথা থেকে। এ তো আমাদের রক্ত জল করা অর্থ। এত দুর্নীতি কেন? এদের মধ্যে গোপন বোঝাপড়া রয়েছে।
শুক্রবারই সীমান্ত এলাকায় যান সুজন চক্রবর্তী। কথা বলেন মানুষের সঙ্গে। জনসভায় বক্তব্য রাখেন পার্টিনেতা লিয়াকত হোসেন, সুমিত বিশ্বাস, নাদির হোসেন মন্ডল প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন পার্টিনেতা মানস মন্ডল। সভাপতিত্ব করেন সন্দীপন ব্যানার্জি।
Comments :0