জমির দখল নিয়ে দুই পরিবারের সংঘাতে নিহত হলেন ৬ জন। তার মধ্যে রয়েছে এক শিশু এবং মহিলারাও। উত্তর প্রদেশের দেওরিয়া জেলার ফতেপুর গ্রামে হত্যাকাণ্ডের জেরে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের শাসনে আইন-শৃঙ্খলার ভয়াবহ অবস্থা দেখিয়েছে দেওরিয়া।
রুদ্রপুর এলাকার গ্রাম ফতেপুর। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান প্রেম যাদবের সঙ্গে জমির খণ্ড নিয়ে লড়াই চলছিল সত্যপ্রকাশ দুবের। প্রেম যাদবের বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে খুন করে সত্যপ্রকাশের লোকজন, জানিয়েছে পুলিশ।
এরপরই প্রেম যাদবের অনুগামীরা চড়াও হয় সত্যপ্রকাশ দুবের বাড়িতে। পালটা হামলায় দুবে এবং তাঁর পরিবারের পাঁচজনকে হত্যা করে। ৫৪ বছরের দুবে, তাঁর স্ত্রী কিরণ, কন্যা ১৮ বছরের সালোনি, এবং ১০ বছরের নন্দিনীকে হত্যা করে। দুবের পুত্র ১৫ বছরের গান্ধীও নিহত হয় এই হামলায়। আরেক পুত্র ৮ বছরের আনমোল গুরুতর আহত অবস্থায় গোরক্ষপুরের বিআরডি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি।
দেওরিয়ার জেলাশাসক অখণ্ড প্রতাপ সিং জানিয়েছেন সকালে সংঘাতের খবর আসে প্রশাসনের কাছে। তিনি জানিয়েছেন, দুবের বাড়িতে ৬ জনকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
প্রশাসন জানিয়েছে যে এক টুকরো জমি নিয়ে দুই পরিবারের বিবাদ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। সত্য প্রকাশ দুবের ভাই সাধু দুবে সেই জমি বেচে দেন প্রেম যাদবকে। সাত বছর আগের এই লেনদেনের পরও বিবাদ মেটেনি।
ঘটনার জেরে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। বিরোধী সমাজবাদী পার্টির সভাপতি অখিলেশ যাদব বলেছেন, ‘‘সরকার এবং প্রশাসনের ব্যর্থতা না থাকলে এত বড় হত্যাকাণ্ড কোথাও ঘটতে পারে না।’’ কংগ্রেস বলেছে, ‘‘যোগীর শাসনে পুরো রাজ্য অপরাধের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থা যে ঘরে বসে এক মহিলা এবং তাঁর সন্তানরা আক্রান্ত হলেন, নিহত হলেন।’’
যোগী আদিত্যনাথের সরকার বিচারবহির্ভূত পুলিশ হস্তক্ষেপকে অপরাধ দমনে কার্যকর ব্যবস্থা বলে প্রচার চালিয়ে গিয়েছে। অপরাধী সন্দেহে ভুয়ো এনকাউন্টারের একের পর এক অভিযোগ উঠেছে। পুলিশি হেপাজতে মৃত্যুর ঘটনাতেও উত্তর প্রদেশে দেশের শীর্ষে থাকা রাজ্যগুলির অন্যতম। বিজেপি শাসিত অন্য রাজ্যেও এমন কৌশল নেওয়া হচ্ছে। তবে অপরাধ কমছে না। দেওরিয়ায় বেপরোয়া হামলা পালটা হামলায় ৬ জনের খুন তার আরেক নজির।
Comments :0