কেন্দ্রীয় আইনে চালু হবে প্রকল্প। কিন্তু একশো দিন কাজের আইন (এমজিএনরেগা)’র মতো নয়। বেশিরভাগ রাজ্যে মজুরি বাবদ খরচের ৪০ শতাংশ দায়ভার চাপবে রাজ্যের ওপর।
বস্তুত নাম পালটে নতুন আইন ‘ভিবি জি রাম জি’ গ্রামে কাজের আইনি অধিকারের আর্থিক দায়ভারের বড় অংশই ঠেলে দেবে রাজ্যের ওপর।
মঙ্গলবার গ্রামীণ পরিসরে জনপ্রিয় এমজিএনরেগা-র পরিবর্তে বিকশিত ভারত রোজগার ও আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ) বিল (ভিবি জি রাম জি), ২০২৫ পেশ করা হয় সংসদে। তুমুল প্রতিবাদ জানান বিরোধী সাংসদরা। এমজিএনরেগা বাতিলের প্রতিবাদে সংসদ ভবনের বাইরে বিক্ষোভ দেখান বামপন্থী সাংসদরা। বিলে ১২৫ দিন কাজের নিশ্চয়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিরোধীরা বলেছেন, চালু আইন সংশোধন করেই তা করা যেত। দুশো দিন কাজ দেওয়ার দাবিও রয়েছে। আসলে গ্রামে কাজের নিশ্চয়তার আইনি অধিকারকে চৌপাট করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান পেশ করেন এই বিল। তাতে বলা হয়েছে, বিল পাশের ছয় মাসের মধ্যে আইন অনুযায়ী প্রকল্প রূপায়ণ করতে হবে রাজ্যগুলিকে। এতদিন এই দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রের উপরই। এজন্য, বিল পেশ হওয়ার পরেই লোকসভায় সামনে বিলের বিরোধিতা করে প্রতিবাদ জানায় বিরোধী দলগুলি। পাশাপাশি, বিল থেকে মহাত্মা গান্ধীর নাম সরিয়ে দেওয়া নিয়েও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ শিং চৌহান বিল পেশ করার সময় বলেন, সরকার শুধুমাত্র মহাত্মা গান্ধীর আদর্শকে নয়, তাঁর নীতিকেও মান্যতা দেয়। পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, আগের সরকারের তুলনায় মোদী সরকার গ্রামীণ জনজীবনের উন্নয়নের জন্য অনেক বেশি চিন্তা করে।
বিভিন্ন বিরোধী দল বিরোধিতা করায় বিশদ পর্যালোচনার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
নতুন বিলে সরকার একটি আর্থিক বর্ষে ১২৫দিনের কর্মসংস্থান সহ মজুরি গ্যারান্টি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
‘ভিবি জি রাম জি,২০২৫ বিল’ অনুযায়ী, মজুরি বাবদ খরচের ৬০ শতাংশ বইবে কেন্দ্র। বাকি ৪০ শতাংশ বইতে হবে রাজ্যকে। কেবল জম্মু ও কাশ্মীর, উত্তর পূর্বের রাজ্য, পাহাড়ি রাজ্যে এই অনুপাত হবে ৯০:১০। যে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিধানসভা নেই কেবল আন্দামান ও নিকোবরের মতো এমন কয়েকটি এলাকায় মজুরি খরচের পুরোটাই বইবে কেন্দ্র।
এখন চালু এমজিএনরেগা অনুযায়ী মজুরি খরচের গোটাটাই বইতে হয় কেন্দ্রকে। রাজ্যকে খরচ করতে হয় জবকার্ড হোল্ডার কাজ না পেলে তার জন্য ভাতা। এছাড়া সামগ্রী সরঞ্জাম বাবদ খরচের ২৫ শতাংশ বইতে হয়, রাজ্যকে। আর রাজ্য স্তরে প্রশাসনিক খরচ করতে হয়।
সিপিআই(এম) সাংসদ জন ব্রিটাস বলেছেন যে কাজের নিশ্চয়তার আইনি অধিকারের ধারণাকেই ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। কংগ্রেস সাংসদ এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, গ্রামসভা থেকে কাজের পরিকল্পনা করার সংস্থান রয়েছে চলতি আইনে। নরেন্দ্র মোদীর গোড়া থেকে এই আইনে। পুরোপুরি কেন্দ্রীকরণ করা হচ্ছে এই প্রকল্পের। অথচ আর্থিক দায়ভারের বড় অংশ চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের ওপর।
New bill pushes
নতুন বিলে গ্রামীণ কাজে রাজ্যের ওপর ঠেলা হচ্ছে দায়ভার
×
Comments :0