‘এক দেশ এক ভোট’ ধারণা আমাদের সংবিধানের মর্মবস্তুর বিরোধী। অগণতান্ত্রিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। মঙ্গলবার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ নেতৃত্বাধীন কমিটির কাছে এই মত জানিয়ে দিল সিপিআই(এম)। গোড়া থেকেই পার্টি এই ধারণার বিরোধী।
এদিন কমিটির বৈঠকে যান সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, পলিট ব্যুরো সদস্য নীলোৎপল বসু এবং কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য মুরলীধরণ। তাঁরা লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন কমিটিতে।
ইয়েচুরি বলেন, ধরেই নেওয়া হচ্ছে এক দেশ এক নির্বাচন সম্ভব। কেবল কিভাবে সম্ভব জানাতে বলা হচ্ছে। কমিটি গঠন করা হয়েছে এই বোঝাপড়ার ভিত্তিতে। আমরা তার বিরুদ্ধে, কারণ এই ধারণাটিই ভুল।
তিনি বলেন, ‘এক দেশ এক ভোট’ ধারণা আমাদের সংবিধানের মর্মবস্তুর বিরোধী। অগণতান্ত্রিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। এই নিয়ম কার্যকর করতে হলে হয় কোনও রাজ্যের বিধানসভার মেয়াদ জোর করে কমাতে হবে, না হলে বাড়াতে হবে অন্য রাজ্যের। দু’টিই অগণতান্ত্রিক। জনতা পুরো মেয়াদের জন্যই ভোট দেন।
তিনি বলেন, সরকারের গরিষ্ঠতা না থাকলেও তাকে চলতে দিতে হবে এই নীতি অনুযায়ী। গণতন্ত্রে গরিষ্ঠতা না থাকলে সরকার চলতে পারে না। পুরো ধারণাটিই অগণতান্ত্রিক। রাজ্য বিধানসভার অধিকার নির্দিষ্ট। সেখানে গরিষ্ঠতা না থাকলে সরকারকে জনতার কাছেই যেতে হয়, অর্থাৎ ভোট করতে হয়।
তিনি বলেন, কার্যকর করতে হলে সাংবিধানিক সংশোধন করতে হবে। অন্তত চারটি ধারায় সংশোধন করতে হবে। ১৯৫২ এবং ১৯৫৭ একসঙ্গেই হয়েছিল। তারপর থেকে বিধানসভা এবং লোকসভা ভোট একসঙ্গে হয়নি। কারণ ওই পর্বেই ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করে বিভিন্ন নির্বাচিত সরকারকে ভেঙে দেওয়া হয় একাধিক রাজ্যে। কমিটিকে সিপিআই(এম)’র প্রতিনিধিরা জিজ্ঞেস করেন যে সংবিধানের ৩৫৬ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কিনা। ইয়েচুরি জানান, রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটি কোনও জবাব দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, ‘‘তা’হলে একসঙ্গে সব রাজ্য এবং কেন্দ্রে ভোট হবে কিভাবে?’’
Comments :0