মধুসূদন চ্যাটার্জি
হ্যান্ড মাইকে চলছে প্রচার। রানিবাঁধের গ্রামে। জঙ্গলঘেরা বারিকুল অঞ্চলে। আদিবাসী মানুষের বাস বড় সংখ্যায়। রয়েছে মিছিল। আর রয়েছেন গ্রামাবাসীরা।
এভাবেই বাঁকুড়ায় পাড়ায় পাড়ায় প্রচার চালাচ্ছেন নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিআই(এম) প্রার্থী।
নীলাঞ্জন বলছেন, ‘‘রাস্তা থেকে সংসদে খেটে খাওয়ামানুষের কথা বামপন্থীরাই বলেন। সেই বা মায়েদের দেখছি যাদের সন্তানরা ভিন রাজ্যে চলে গিয়েছে খাটতে। আমাদের রাষ্ট্র, আমাদের সরকার কাজ দেয় না। এ রাজ্যের সরকারও কাজ দিতে পারেনি। এখানে ল্যাম্পস বন্ধ। কেঁদুপাতা কুড়িয়ে দু’টি রোজগার করতেন আদিবাসী মায়েরা। তা-ও বন্ধ। আদিবাসী হস্টেল বন্ধ। ২৩টির মধ্যে ১৭টি বন্ধ।’’
বিজয় মুর্মু ও রাজাকাটা অঞ্চলের দেউলি গ্রামের নূপুর মাহাতোর কণ্ঠে এই প্রত্যয়ই ফুটে উঠল। সিঁদুরপুরের বিষ্টু মাহাতো জানান, মানুষ চাইছেন লাল ঝান্ডাকে। তাই এত মানুষের ভিড়।
বামফ্রন্ট সরকার চলে যাওয়ার পরই শবর পরিবারের ঘর থেকে বিদ্যুতের আলো কেড়ে নেওয়া হয়। তিন বছর আগে পার্টিকর্মীরা গভীর জঙ্গলের মাঝে পাহাড় চূড়ায় বাস করা শবর পল্লিগুলিতে গিয়ে মানুষকে সংগঠিত করেন। স্বাধীনতার পর সেই প্রথম শবর মানুষজন রানিবাঁধে এসে বিদ্যুতের দাবিতে মিছিল করেন। বিডিও’কে ডেপুটেশন দেন। শেষ পর্যন্ত প্রশাসন এঁদের বাড়িতে ফের বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে বাধ্য হয়। জয় হয় আন্দোলনের।
কোভিড মহামারির সময় দীর্ঘদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরও স্কুল না খোলায় এসএফআই ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে রানিবাঁধ ব্লক অফিস ঘেরাও করে ডেপুটেশন দেয়। রাজ্যের মধ্যে প্রথম ‘অসময়ের স্কুল’ খোলা হয় রাজাকাটা অঞ্চলের মল্লিকডাঙা গ্রামে। পাশের গ্রামের মানুষেরাও এখানে তাঁদের ছেলে-মেয়েদের পড়তে পাঠান। স্থানীয় শিক্ষিত যুবক-যুবতী ও শিক্ষক, শিক্ষিকারা স্বেচ্ছায় পড়াতে থাকেন। প্রায় এক বছর এই স্কুল চলেছিল।
নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত জানান, অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছেন তিনি। মানুষ ফিরছেন লাল ঝান্ডায়।
প্রচারে বামফ্রন্ট প্রার্থী বলছেন, ‘‘মুকুটমণিপুর থেকে রেললাইন হলো না। জলে ব্যবস্থা করতে হবে। জলের সঙ্কটে চাষ ভালো হয় না। এই কথা সংসদে বলতে চাই আমরা। বামপন্থীরা সংসদে, বিধানসভায় সেই কাজই করে।’’
Comments :0