Dengue

ডেঙ্গুতে মৃত্যু, আক্রান্ত বেড়েই চলেছে রাজ্যে

রাজ্য

কমার লক্ষণ নেই, ডেঙ্গুতে মৃত্যু অব্যাহত রাজ্যে। কলকাতা সহ  বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় প্রতিদিনই আসছে মৃত্যুর খবর। একইভাবে ক্রমশ বেড়েই চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ৪ দিনে আরও দুটি মৃত্যুর খবর মিলেছে। এই নিয়ে চলতি মরশুমে রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ৬৬ বলে জানা যাচ্ছে। যদিও সরকারিভাবে মৃত্যু সেই ৩-এর পর আর বাড়েনি! ওদিকে বেসরকারি সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা চলতি মরসুমে ৫০ হাজারের আশেপাশে। 
পুজের মুখে এলাকায় এলাকায় প্রবল গতিতে হানা দিয়েছে ডেঙ্গু ভাইরাস। ডেঙ্গু আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে পড়ছেন মানুষ, দিশাহারা সরকারও। বাড়ছে ক্ষোভ বিক্ষোভ। নিশ্চুপ প্রশাসন, রাজ্য সরকারের তরফে শোনা যাচ্ছে না আর কোনও কথাই। একইভাবে প্রশাসনের উদাসীনতা আর গাফিলতিতে ব্যাহত এলাকা সাফাইয়ের কাজ।
শুক্রবার রাতে কলকাতার এক বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রে মৃত্যু হয়েছে সীমা বিশ্বাস (৪০) নামে এক মহিলার। তাঁর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁর বৈরামপুরে। জ্বর ও ডেঙ্গু উপসর্গ দেখা দেওয়ায় চিকিৎসা শুরু করার পর রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে ডেঙ্গু পজিটিভ মেলে। এরপর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার একটি নার্সিংহোমে। সেখানে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় তাঁকে। শুক্রবার তিনি মারা যান। গত এক মাসে বনগাঁয় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে বুধবার নদীয়ার এক কিশোরের ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। বছর পনেরোর ওই কিশোরের নাম রনি দেবনাথ। তাঁকে প্রথমে বারাসতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে স্থানান্তরিত করা হয় কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। 
প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। সব সময়ে সব মৃত্যুর খবর সামনে আসছে না। একেবারেই চুপচাপ হয়ে গেছে প্রশাসন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে হাতের বাইরে। উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, নদীয়ায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর খবর সর্বাধিক। এরপরেই আছে হাওড়া, হুগলী, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, মালদহ, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি। যতদিন যাচ্ছে ডেঙ্গু রোগীর ভিড় আরও বাড়ছে বিভিন্ন হাসপাতালগুলিতে।
রাজ্য সরকার মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করছে না। আক্রান্তের সংখ্যারও কোনও নির্দিষ্ট লিখিত তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি রাজ্য ডেঙ্গুর কোনও তথ্য কেন্দ্রকেও সরবরাহ করছে না বলে অভিযোগ। ডেঙ্গুর সঠিক তথ্য প্রকাশ না করলে সাধারণ মানুষ সচেতন হতে পারবে না বলে বক্তব্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। তাঁরা বলছেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রথম থেকে যা যা সাফাই কার্যের দরকার ছিল তার কিছুই হয়নি। তাই এত বাড়াবাড়ি হয়েছে। কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় শহর ও গ্রাম এলাকায় ঘরে ঘরে জ্বর চলছে একইভাবে। ৩ মাস আগেও হাসপাতালে যে ভিড় ছিল সেই একইরকম ভিড় এখনও। বলছেন ডেঙ্গু রোগীর পরিবারের সদস্যরাই।
ক্রমাগত ডেঙ্গু ছড়ানোয় ক্ষোভ বাড়ছে এলাকাবাসীর। ইতিমধ্যে তাঁরা বিক্ষোভও দেখিয়েছেন। প্রশাসনের ওপর ভরসা না করে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ডেঙ্গু প্রতিরোধে অঞ্চলের মানুষ নিজেরাই কাজে নেমে পড়েছেন। যেমন, রবিবার কলকাতার ১২২ নম্বর ওয়ার্ডে পরিবেশপ্রেমী সংগঠন দিবাকর মেমোরিয়াল এক্সপ্লোরারস ফাউন্ডেশনের সদস্যদের উদ্যোগে ডেঙ্গু সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি মশার লার্ভা নিধন প্রক্রিয়া চলে এলাকায়।                     
 

Comments :0

Login to leave a comment