Bhubaneswar Rape

ভুবনেশ্বরে ধর্ষণ বিহারের নাবালিকা, অবস্থা আশঙ্কাজনক

জাতীয়

ভুবনেশ্বরে ধর্ষণের অভিযোগ। ১৬ বছর বয়সী এক নাবালিকাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার গভীররাতে ওড়িশার ভুবনেশ্বরের অশোক নগর এলাকায় রাস্তার ধারে যন্ত্রণায় কাতর মেয়েটিকে উদ্ধার করে ক্যাপিটাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে মেয়েটি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা। তবে তার পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ড পুলিশের সহায়তায় নির্যাতিতার ঠিকানার খোঁজ করা হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী নির্যাতিতার বয়স প্রায় ১৬ বছর। তার কাছে কোনও মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি।
টুইন সিটির পুলিশ কমিশনার এস দেব দত্ত সিং জানিয়েছেন যে ক্যাপিটাল থানা এলাকার রাস্তার ধার থেকে কিশোরীরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে। নির্যাতিতার চিকিৎসা চলছে। তিনি বলেন, এখনও অপরাধীদের সম্পর্কে কোনও তথ্য দিতে পারেননি নির্যাতিতা। হাসপাতাল থেকে ঘটনার তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ নিজেই মামলা দায়ের করেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ওই কিশোরীর উপর নির্মম অত্যাচার চলেছে। ট্রমার মধ্যে রয়েছে সে। এমনকী পরিষ্কার করে কথাও বলতে পারছে না। তবে যে টুকু বুঝিয়েছে, বিহারের বাসিন্দা সে।
স্থানীয়দের কথায়, যখম অবস্থায় কিশোরীকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। কিছু অটোরিকশা চালক তাকে যন্ত্রণায় কাতরাতে দেখে উদ্ধার করতে ছুটে যান। পুলিশকে খবর দেওয়ার পর তাঁরা তাকে সামনে থাকা ক্যাপিটাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেই সময় ওই কিশোরী কথা বলতে পারছিল না তার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে নাবালিকাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তবে নির্যাতিতা কথা বলতে না পারলেও, সে চিকিৎসকদের জানিয়েছে যে সে বিহারের বাসিন্দা। খবর পেয়ে ক্যাপিটাল থানার পুলিশ হাসপাতালে পৌঁছায়। পকসো আইনে মামলা দায়ের করে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিবারের কোনও সদস্য হাসপাতাল বা থানায় আসেননি। পুলিশ জানিয়েছে যে নির্যাতিতাকে যে এলাকায় পাওয়া গেছে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পশ্চিমবঙ্গে আরজি কর বা দুর্গাপুর, কিংবা কসবা— ঘটনাগুলি শিক্ষাঙ্গনেই ঘটেছে। রাজস্থানের সাম্প্রতিকতম ঘটনাটিও স্কুলে। কোন রাজ্যে কত বেশি ধর্ষণ হবে, তার প্রতিযোগিতা চলছে দেশজুড়ে। দুর্গাপুরে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে সম্প্রতি। তার আগে রাজস্থানের জয়পুরে স্কুলের শৌচাগারে লুকিয়ে থেকে সাত বছরের ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে এক ব্যক্তি। উত্তর প্রদেশে নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছে তারই এক দাদা সহ তিন জন। ত্রিপুরায় ১৪ মাসের শিশুকে মায়ের কোল থেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে ৪৩ বছরের এক ব্যক্তি। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত সহ সঙ্ঘ-বিজেপি’র নেতারা ধর্ষণের জন্য মেয়েদের পোশাক, তাদের শালীনতাকেই দায়ী করে থাকেন। যদিও ১৪ মাসের শিশুর কেন ধর্ষণ হয়, সে প্রশ্নের জবাব তারা কখনোই দিতে পারেননি। সঙ্ঘের সুরে সুর মিলিয়েই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও রাজ্যে সমস্ত ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মহিলাদের দিকেই আঙুল তোলেন। আরজি করের নৃশংসতম ঘটনার পর তিনি অপরাজিতা বিল আনতে উদ্যত হয়েছিলেন, যাতে মহিলাদের রাতে বেরনোয় নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায়। দুর্গাপুরের ঘটনার পরও তিনি নিঃসঙ্কোচে বলে দিয়েছেন, অত রাতে মেয়েটি কেন ক্যাম্পাসে বেরিয়েছিল? ঠিক এভাবেই বারবার বিজেপি এবং তাদের দোসর রাজনৈতিক দলগুলি ধর্ষকদের অপরাধ লঘু করে দেয়। স্বাভাবিকভাবেই ধর্ষকদের উপযুক্ত শাস্তিও হয় না। মেয়েদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এই সরকারগুলি নির্লজ্জের মতো তাই মেয়েদেরই কাঠগড়ায় তুলে দেয়। দুর্গাপুরে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় মমতা ব্যানার্জির মন্তব্য সমাজের বিভিন্ন স্তরে অভিঘাত তৈরি করলেও প্রায় কেউই বিস্মিত হননি। গত দেড় দশকে একের পর এক নারী নির্যাতন, ধর্ষণের ঘটনায় তদন্তের আগেই উপসংহার টেনে দিতে মুখ্যমন্ত্রীর নানান মন্তব্য শুধু অপরাধীদের মনোবল বাড়ায়নি, বরং পিছিয়ে থাকা পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবকেও বারেবারে সামনে এনেছে।

Comments :0

Login to leave a comment