BRIGADE SALIM LOKSABHA

পঞ্চায়েতে ঝলক, লোকসভায় আরও বড় প্রতিরোধ: সেলিম

রাজ্য কলকাতা

রবিবার ব্রিগেডে সমাবেশের একাংশ। ছবি: শুভ্রজ্যোতি মজুমদার

পঞ্চায়েতে বামপন্থীদের প্রতিরোধ দেখেছে বাংলা। সে তো ঝলক। লোকসভা ভোটে ভোট লুটের বিরুদ্ধে আরও বড় মাপের প্রতিরোধ হবে জনতাকে নিয়ে।
রবিবার ব্রিগেডের ময়দান থেকে এই মর্মে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এদিন ডিওয়াইএফআই’র সমাবেশে তিনি নিজেই বলেন, ‘‘কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, এত লোক তো হলো, কিন্তু ভোট কী হবে?’’ 
এরপরই তাঁর মন্তব্য, ‘‘পঞ্চায়েত ভোট দেখেছে বাংলা। তা ছিল ট্রেলার। লোকসভায় পুরো ‘পিকচার’ দেখা যাবে।’’
এদিনই তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ এবং বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ব্রিগেড মিটিং নিয়েই মন্তব্য করে গিয়েছেন। লোক হলেও ভোট না হওয়ার প্রচার চালিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে।
সেলিম বলেছেন, ‘‘পঞ্চায়েতের আগে বলেছিলাম চোর ধর জেল ভরো। বলেছিলাম চোর তাড়াও গ্রাম বাঁচাও। মানুষ নেমেছিলেন রাস্তায়। পঞ্চায়েত ভোটে বামপন্থীদের দেখেছেন মানুষ।‘‘ 
ভোট লুটের প্রতিরোধে রাজ্যজুড়ে নেমেছেন মানুষ। সেই বাস্তবতা স্মরণ করিয়েছেন সেলিম। বাংলা এবং দেশ বাঁচানোর আহ্বানে সেলিম বলেন, ‘‘দেশকে বাঁচাতে হলে বাংলাকে বাঁচাতে হবে। বাংলার পুনর্জাগরণের জন্য বামপন্থার পুনরুত্থান জরুরি।’’
লোকসভায় ভোট কাদের, এই প্রসঙ্গে বলেছেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জিও। তিনি বলেন, ‘‘দেশ বেচে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কাজ দেশ বাঁচানোর। বিজেপি সব বেচে দিচ্ছে। এরা রেল, জঙ্গল, নদী নালা সব বিক্রি করছে। ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে কারা জিতেবে? যারা দেশের অর্থনীতি শেষ করছে? নাকি যারা দেশ বাঁচাতে চাইছে তাদের জেতাতে হবে? যারা মানুষের হয়ে কথা বলে সেই বাঘের বাচ্চাদের পাঠাতে হবে লোকসভা, বিধানসভায়।’’ 

লোকসভার সদস্য ছিলেন সিপিআই(এম)’র বাসুদেব আচারিয়া, মহম্মদ সেলিম। এই প্রসঙ্গ তোলেন মীনাক্ষী। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভায় যখন বাসুদেব আচারিয়া, মহম্মদ সেলিমরা ছিলেন তখন এনআরসি নিয়ে কথা বলার দম হয়নি। আবাসের দুর্নীতি, একশো দিনের টাকা চুরি করার দম হয়নি।’’  
সেলিম সংসদে বামপন্থীদের ভূমিকা মনে করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছি ৩৬৫ দিন কাজ। কাজের অধিকারের স্বীকৃতি। স্বাধীনতার পর সেই আইন হয়নি। কিন্তু একশো দিন কাজের আইন করা গিয়েছিল। কারণ দেশের সরকারকে বামপন্থীদের কথা শুনে চলতে হতো। আর মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েই বুঝিয়েছিলেন এই প্রকল্প তুলে দিতে চান। বলেছিলেন, ‘গর্ত খোঁড়ার প্রকল্প’।’’
বামপন্থী কর্মী সমর্থকদের কাছে সেলিমের আহ্বান, ‘‘বহু মানুষকে গীতাপাঠ-চণ্ডীপাঠ করে, হিজাব পরে ভুল বুঝিয়ে রাখা হচ্ছে। এই মানুষের কাছে যেতে হবে। সবার কাছে যেতে হবে। তৃণমূলের সমর্থকদের বলছি। পার্থ চ্যাটার্জি, অনুব্রতরা জেলে। পিসি নিজের ছাড়া কারও দেখবেন না। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকও ভাইপোকে বাঁচাতে।’’ বামপন্থী কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘ফিরে গিয়ে মহল্লায় মহল্লায়, বুথে বুথে প্রতিরোধ গড়তে হবে
দিল্লিতে জি-২০ গোষ্ঠীর বৈঠকে মমতা ব্যানার্জির যোগদান মনে করিয়েছেন সেলিম। বলেছেন, ‘‘রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি যাননি। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে ডাকা হয়নি। অথচ মমতা ব্যানার্জির জন্য আলাদা সমাদর। মমতা নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কট করেন। তিনি নাকি বিজেপি সরকারের ডাকে সাড়া দেবেন না। অথচ জি-২০ বৈঠকে হাজির।’’
বিজেপি’র রাজনীতিকে প্রতিরোধ করার ডাক দিয়ে সেলিম বলেন, ‘‘মেহনতির হিন্দু মুসলিম নেই। মেহনতির ঐক্য তাই জরুরি। বামপন্থা দুর্বল হয়েছে বলা হচ্ছে। আসলে দুর্বল হয়েছে মেহনতির ঐক্য।’’

 

Comments :0

Login to leave a comment