Lok Sabha Election 2024

নারী নির্যাতন, ভেরি লুট, সব যেন এখন জানলেন মমতা!

রাজ্য লোকসভা ২০২৪

সন্দেশখালির মা বোনেরা যে দিনের পর দিন নির্যাতিত হয়েছেন মঙ্গলবার বসিরহাটের সভা থেকে কার্যত স্বীকার করে নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর দলের নেতৃত্ব মহিলাদের ওপর নির্যাতনের সব ঘটনাই অস্বীকার করেছিলেন। 

এদিন মমতা বললেন। মা বোনদের আর যেন কোথাও কোন অসম্মান না হয়। সন্দেশখালির জমি মেছোভেরি লুটের ঘটনাও কার্যত মেনে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ‘‘আমরা পলিসি তৈরি করছি যার মেছোভেরি সেই চাষ করবে। নতুবা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি করবে। বা অন্যেরা গ্রুপ করে করবে। কিন্তু সরকারের খাতায় রেকর্ডে নাম থাকতে হবে। জোর করে অন্যের মেছোভেরি কেড়ে নেওয়া যাবে না। সরকারকে রেভিনিউ দিয়ে যে যার মেছোভেরি প্রটেক্টেড রাখবে।’’

সন্দেশখালিতেও রাজ্যের আর বহু জায়গার মতো বামফ্রন্টের সময়ে পাট্টা দেওয়া হয়। জমি বিলি হয় ভূমিসংস্কারের প্রক্রিয়ায়। আর তৃণমূলের সময়ে সেই জমিই কেড়ে নিয়েছে শেখ শাহজাহান , শিবু হাজরারা। কেড়েছে ভোটদানের অধিকার। সেই সঙ্গে চলেছে নারী নির্যাতন। সিপিআই(এম) নেতা এবং সন্দেশখালির প্রাক্তন বিধায়ক নিরপদ সরদার  বিধানসভায় সরব হলেও তাঁর মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়। সিপিআই(এম) নেতা এবং কর্মীদের এলাকাছাডা  করা হয়। সেই ইতিহাস এদিনও অস্বীকার করেছেন মমতা ব্যানার্জি। 
এদিন বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভার মেরুদণ্ডী কর্মতীর্থের মাঠে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হাজী নুরুল ইসলামের সমর্থনে জনসভা হয়। প্রধান বক্তা হিসাবে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। 
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ ,ইস্কন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর করা বক্তব্যে সমালোচনার ঝড় ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর  মতো মুখ্যমন্ত্রীও ধর্মীয় বিভাজনের পথে হাঁটছেন, বলেছে সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেস। মমতা এদিন সিএএ’র ভয় দেখাতে তৎপর ছিলেন। তিনি সিএএ-কে ভো ভ্যা বলে ব্যঙ্গ করে বললেন মতুয়াদের মিথ্যা ছবি দেখাচ্ছে। আবার বললেন, নির্বাচনের সময় কেন হিন্দু মুসলমান করে ভাগাভাগি করবো? মোদি চায় তিনি থাকবেন আর তার গুন্ডারা থাকবে।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে প্রতিবাদ জানান বসিরহাটের বামফ্রন্ট প্রার্থী নিরাপদ সরদার। তিনি বলেন, হাজী নুরুল ইসলাম যদি জেতে তবে মুখ্যমন্ত্রী সন্দেশখালি যাবেন। আসলে এখন সন্দেশখালিতে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার সাহস হলো না। প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বললেন, এখন কেন যাবেন না? সন্দেশখালির মা বোনেদের তার লোকেরা অত্যাচার করেছে। তার লোকেরাই তো জমি লুট করেছে। তার লোকেরাই তো ১০০ দিনের টাকা লুট করেছে। কেন তিনি বলতে পারলেন না ১০০দিনের টাকা লুট হয়েছে আমি দুঃখিত? সেই টাকা আমি ফেরত দিচ্ছি। জমিতে লুট হয়েছে তার জন্য আমি দুঃখিত। সেই জমি আমি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। কেন বলতে পারলেন না? হাজী নুরুল ইসলামকে কেন সন্দেশখালির মানুষ ভোট দেবে? এই হাজী নুরুলের হাত ধরে শেখ শাহজাহান তৃণমূলে যোগ দেয়। ২০১১ সালের পর লুটের রাজত্ব কায়েম করে শেখ শাহজাহান। হাজী নুরুল জানতেন না? সব জানতেন। জেনে চুপ করে থাকতেন। এখন ভাবের ঘরে চুরি করলে হবে? সন্দেশখালির সব মানুষ তা জানে। মুখ্যমন্ত্রী বসিরহাটের সভা থেকে যা বলেছেন তাতে সন্দেশখালির মানুষ ব্যথা পেয়েছেন। তেমনি সন্দেশখালির মানুষ তাঁকে ধিক্কার জানাচ্ছে।
 

Comments :0

Login to leave a comment