বুথে বুথে জানকবুল লড়াই করুন। কেউ হারাতে পারবে না। লড়াই ঠিকমতো দিতে পারলে জানবেন দমদমের বর্তমান সাংসদ হারবেন। তিনি হারবেন, এটা দমদমের মানুষ ঠিকই করে ফেলেছেন। কারণ, ভোটের প্রচারে বেরিয়ে তিনি যখন বলেছেন, মাসিমা, চিনতে পারছেন? মাসিমা উত্তরে বলছেন, কেন চিনতে পারবো না বাবা! তোমাকে টিভির পর্দায় অনেকবার দেখেছি হাত পেতে টাকা নিতে। এমন চোরকে আপনারা জেতাবেন? দমদমের মানুষ কখনোই তা করবেন না এ বিশ্বাস আমাদের আছে। মঙ্গলবার দমদম কেন্দ্রের দুটি জনসভায় একথা বলেন যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি।
তিনি এদিন দমদম লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্টের সিপিআই(এম) প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর সমর্থনে বক্তব্য রাখেন। তিনি ছাড়াও গোরাবাজার লিচুবাগানের মাঠের জনসভায় বক্তব্য রাখেন প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী, পার্টিনেতা পলাশ দাশ, শৈলেন মাকর, কংগ্রেস নেতা শুভঙ্কর সরকার। সভাপতি ছিলেন দেবশংকর রায়চৌধুরি। এদিন দমদমের বাগুইআটি ৪৪নং বাসস্টান্ডে অপর একটি জনসভায় বক্তব্য রাখেন মীনাক্ষী মুখার্জি। এখানে বক্তব্য রাখেন প্রার্থী সুজন চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকার। সভাপতি ছিলেন শুভজিৎ দাশগুপ্ত। দুটি জনসভায় প্রচুর ভিড় হয়েছিল। মহিলাদের উপস্থিত ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিন উভয় সভায় মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, রাজ্যের শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা যোগ্যতা সত্ত্বেও চাকরির আশায় রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে বসে আছেন। আর শূন্য খাতা লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে যারা জমা দিয়েছে, তারা মাস্টারি করছে। এই হলো বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার পরিবর্তন চান কি না? তিনি বলেন, এই নির্বাচন দেশ বাঁচানোর নির্বাচন। দেশের গণতন্ত্র, সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় থাকবে কী না, তার নির্বাচন। বাম-কংগ্রেস দেশজুড়ে লড়াই করছে এই দাবিতে। দেশের মানুষ যখন এই দাবিগুলির সপক্ষে ভোটের লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন, তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মাথা খারাপ হয়ে গেছে। ৫ম দফার নির্বাচন শেষে এটা পরিষ্কার তিনি আর সরকার গড়ছেন না। তাই ভুল বকছেন। কখনো মুসলমানদের গালি পাড়ছেন, আবার কখনো সাংবাদিকদের বলছেন, আমি হিন্দু-মুসলমান নিয়ে কোনও কুকথা কখনো বলিনি। তিনি বলেছেন, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগীর কাছ থেকে শিখতে হবে কীভাবে বুলডোজার চালাতে হয়। দিল্লিতে বুলডোজার চালিয়ে লাখো মানুষকে বেঘর করেছেন মোদী। ভারতে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য, এই কথা মোদী মানেন না। তিনি সন্দেশখালির মহিলাদের ওপর নির্যাতনের কথা বলেন, আর মণিপুরে যখন মহিলাদের রাস্তায় নগ্ন করে হাঁটানো হয় এবং তার ভিডিও করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, তখন তার কোনও প্রতিবাদ তিনি করেন না।
মীনাক্ষী এদিন বলেন, মোদী দেশের অর্থনীতির ওপর বুলডোজার চালিয়েছে। দেশের মুষ্টিমেয় বড়লোকদের হাতে সম্পদ তুলে দিয়ে দেশের গরিবদের আরও গরিব করে বলছেন দেশ এগিয়ে চলেছে। মোদী ক্ষমতায় আসার পর ১৪ টাকার আটা ৫০ টাকা আর ১৪ টাকার কেরোসিন ৯০ টাকা হয়েছে। বেড়েছে ওষুধের দাম, বিদ্যুতের দাম। শিক্ষা, স্বাস্থ্যের বেহাল অবস্থা হয়েছে দেশে, একইভাবে এরাজ্যেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের হাল বেহাল হয়েছে। বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে রাজ্যে ১লক্ষ ৩৮হাজার ছেলেমেয়ের এসএসসি’র মাধ্যমে চাকরি হয়েছিল। কোনদিন কাউকে ধরনায় বসতে হয়নি বা আদালতের দরজায় কড়া নাড়তে হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা হলো, তখন যুবতী মেয়েকে নিয়ে তার বাবা, মায়েরা রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যেতেন। রাত ১২টার সময় দরজায় কড়া নেড়ে কোনও দুষ্কৃতীর বলার সাহস হয়নি, মেয়েকে রাতে আমাদের ঠেকে পাঠিয়ে দেবেন। তাই মানুষ বলছেন, আগের সরকারই ভালো ছিল।
Minakshi Mukherjee
বুথে বুথে জানকবুল লড়াইয়ের আহ্বান দমদমের সভায়
×
Comments :0