SALIM on MAMATA

দুর্নীতি ঢাকতে মিথ্যা প্রচারে মমতা, সরব সেলিম

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

‘‘রাজ্যশাসন ভুলে গিয়ে সিপিআই(এম)-কে নিয়ে পড়েছেন। বস্তাপচা মিথ্যা কথা নিয়ে আবার হাজির হয়েছেন। যত মানুষ ক্ষিপ্ত হচ্ছে তৃণমূলের ওপরে, যত পিসি-ভাইপো কোম্পানির দুর্নীতি ফাঁস হচ্ছে একটার পর একটা, আদালতে গিয়েও স্বস্তি পাচ্ছেন না, তদন্তকে পাশ কাটাতে চেষ্টা করছেন, তখনই তিনি সিপিআই(এম)-কে আক্রমণ করছেন।’’ 
নদীয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার এই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন সিপিআই(এম) সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ‘‘রাস্তায় থেকে দুর্নীতি বিরুদ্ধে লড়েছে সিপিআই(এম)। দুর্নীতি একের পর এক ধরা পড়ছে। দুর্নীতি ঢাকতে সিপিআই(এম)’কে আক্রমণ মমতার।’’ সেলিম বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় এজেন্সির ভূমিকার জন্য বিজেপি’কেও জবাব দিতে হবে।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরে লাগাতার রাস্তায় আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছি। আইনের ফাঁক গলে লাইন করে যাতে বাঁচতে না পারেন তার জন্য আমরা সজাগ সতর্ক থেকেছি। কোটি মানুষের সই সংগ্রহ করে জমা করেছি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে। সে কারণেই আক্রমণ সিপিআই(এম)’কে।’’ 
মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার নদীয়ার শান্তিপুরে প্রশাসনিক সভায় বলেন যে ‘জেলে ভরলে ফুটো দিয়ে বেরিয়ে আসব।’ সেই সঙ্গে লাগাতার আক্রমণ করেছেন সিপিআই(এম)-কে।
সেলিম বলেন, ‘‘এখন বলছেন জেলে পুরে দিলেও ফুটো দিয়ে বেরিয়ে আসব। কেন বলছেন? তাঁদের যে গুণ্ডাবাহিনী যাদের নিয়ে লুট করেছেন, তারা ঘাবড়েছে, তাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। সন্দেশখালির পর তাঁর মস্তান বাহিনীকে সন্দেশ দিতে চেয়েছেন। যারা মনে করছিল কিছুরেই ধরা পড়বেন না, তারা এখন বুঝছে ধরা পড়ে গিয়েছে। সেজন্য বলছেন ফুটো দিয়ে বেরিয়ে আসব।’’
সেলিমের ব্যাখ্যা, এই ‘ফুটো’ হচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। নাগপুরের সঙ্গে এমন যোগসাজশ হয়েছে যে ফুটো রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এফআইআর থেকে চার্জশিট, তারপর তদন্ত রিপোর্ট, সিজার লিস্ট সবেতেই ফাঁক রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। কয়লা পাচার কাণ্ডে আমরা দেখেছি নাগপুরের যোগসাজশে ভাইপোর নাম চার্জশিটের বাইরে রেখেছেন।’’ 
উল্লেখ্য, বিজেপি’র ভিত্তি সংগঠন আরএসএস’র প্রধান দপ্তর নাগপুরে। আরএসএস’র সমালোচনা থেকে বরাবর বিরত থেকেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি। নদীয়ায় সিঙ্গুরে তাপসী মালিকের প্রসঙ্গ তুলে সিপিআই(এম)’কে আক্রমণ করেছিলেন মমতা। বৃহস্পতিবারই মালদহে এক ছাত্রীর মুণ্ডহীন দেহ উদ্ধার ঘিরে তোলপাড় হয়।
সেলিম বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবারই মালদায় দশ বছরের ছাত্রী খুন হলো, সেই ঘটনা নিয়ে কোনও কথা নেই, নিন্দা পর্যন্ত নেই। তিনি এখন তাপসী মালিকের কথা বলছেন। তাপসী মালিকের বাবা বলছেন মিথ্যা রাজনীতি হয়েছে মেয়েকে নিয়ে। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বলেছিলেন বড় ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল এগুলি। মোদীকে সানন্দে গাড়ির কারখানা উপহার দেওয়ার জন্য।  নদীয়ায় দাঁড়িয়ে সিঙ্গুরের গল্প শোনাচ্ছেন।’’
সেলিম বলেন, ‘‘হাঁসখালির কথা মনে নেই? তৃণমূল অপরাধ করেছে, জীবন্ত মেয়েকে শ্মশানে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। পুলিশ এফআইআর নেয়নি। উলটে তৃণমূলের লোকেদের নাম নিলে এফআইআর’র হুমকি দিয়েছে, এমনকি মৃত ছাত্রীর বাবা-মায়ের নামে এফআইআর করে দিয়েছে। এই অপশাসনের জন্যই অপরাধীদের বুকের পাটা বেড়েছে। সে কারণেই ‘চোর ধর, জেল ভর’ স্লোগানে রাস্তায় নেমেছে সিপিআই(এম)।’’
২০২২’র এপ্রিলে হাঁসখালিতে ধর্ষিতা হন ওই ছাত্রী। তৃণমূলের স্থানীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। ছাত্রীর পরিবারই জানায় তৃণমূলের বাধায় থানা বা হাসপাতালে যাওয়া যায়নি। সেই ছাত্রী মারা যায়। পরিবারকে দূরে রেখে দাহ করা হয়। মমতা ব্যানার্জি আবার প্রশ্ন তুলেছিলেন, ঘটনাটিকে আদৌ ধর্ষণ বলা হবে না ‘লাভ অ্যাফেয়ার’।

Comments :0

Login to leave a comment