DYFI Brigade Rally

লড়াইকে নিতে হবে বুথে বুথে সেলিম

রাজ্য

 ইনসাফের জন্য এই লড়াইকে এবার গ্রাম শহরে বুথে বুথে নিয়ে যান। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষের যে প্রতিরোধে তীব্র স্পৃহাকে দেখা গেছে, এবার লোকসভা নির্বাচনে সেটাকেই চূড়ান্ত রূপ দিতে হবে। রবিবার ব্রিগেড সমাবেশের মঞ্চ থেকে এই আহবান জানিয়েছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, কাজ, মজুরী, ফসলের দাম, রাস্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রতিটি ক্ষেত্রে হক আদায় করতে এবার বুথে বুথে ইনসাফ চাইতে হবে। 
ইনসাফের লড়াইকে বুথে বুথে ছড়িয়ে দেওয়ার বার্তা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিক থেকে শুরু করে তৃণমূলের কর্মীদের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেছেন, ভাইপোকে ছাড়া আর কাউকে বাঁচানোর মুরোদ এখন আর মুখ্যমন্ত্রীর নেই। তিনি প্রচার করেন যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন না। অথচ ভাইপো’কে বাঁচাতে মরিয়া মমতা ব্যানার্জি জি২০ সামিটের ডিনারে যাওয়ার নাম করে মোদীর সঙ্গে বসতে গেলেন। একশো দিনের কাজের টাকা আনার নাম করে আবার দিল্লি গিয়ে মোদীর পায়ে পড়ে গেলেন। দুর্নীতির মামলায় ভাইপো’কে বাঁচাতে রাজ্যের ভবিষ্যৎকে বাজি রেখেছেন তিনি। 
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি আদালতের একের পর এক বেঞ্চে সুরক্ষা চেয়েও প্রত্যাখ্যাত হচ্ছেন। আদালতের চাপ বাড়ছে তদন্তকারী সংস্থার ওপরেও। এই পরিস্থিতির উল্লেখ করে সেলিম বলেছেন, মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি গ্রেপ্তার হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করলেও মুখ্যমন্ত্রী ফোন ধরেননি। আর ভাইপোর বেলা এমন তৎপর যে ৬ মাস ধরে সিবিআই কালীঘাটের কাকুর গলার স্বর বের করতে পারছে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজে এবং তাঁর পরিবার ছাড়া কাউকে নিয়ে ভাবেন না। পার্থ, অনুব্রত, বালু জেলে গেছে, বাকিরা জেলে গেলেও ওঁর কিছু যায় আসে না। যে পুলিশ মিথ্যা মামলা সাজাচ্ছে, যে অফিসাররা পঞ্চায়েত ভোটের ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দিচ্ছেন তাঁদের বাঁচাতে এই মুখ্যমন্ত্রী এগিয়ে আসবেন? 
এই মুখ্যমন্ত্রী বামপন্থীদের কণ্ঠস্বর বন্ধ করাতে মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগাতে বলেছিলেন। সেলিম সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে উত্তাল ব্রিগেডকে ঐকিক নিয়মের অঙ্ক দেওয়ার ঢঙে বলেছেন, ‘একটা কাকুর কণ্ঠস্বর বের করাতে এক ব্রিগেড জমায়েত লাগলে একটা পিসির গলার স্বর নামাতে কত মানুষের কাছে যেতে হবে?’ সেলিমের আহ্বান, ‘মনে রাখবেন তৃণমূল বিজেপি’র এই শাসনের অবসান ঘটাতে আরও বহু মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। হিজাব পরে কিংবা গীতা পাঠ করে যাঁদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে তাঁদের ভুল ভাঙাতে হবে। বাংলাকে বাঁচাতে কোনও হিল্লিদিল্লি ছুটতে হবে না, ধর্ম জাত ভাষার ঊর্ধ্বে উঠে সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করলেই হবে। 
তৃণমূলের প্রতি ক্ষিপ্ত মানুষ যাতে বিজেপি’র মোহে পা না দেয় তার জন্য তিনি বলেন, মণিপুরকে দেখুন। ডবল ইঞ্জিনের সরকার দাঙ্গা থামিয়েছে? যারা দেশের সীমানা দেখিয়ে ভোট চায়, তারাই মানুষের মধ্যে ভাগাভাগি করে জাত ধর্মের মধ্যে সীমানা তুলছে। কেন্দ্রে এই মোদী ক্ষমতায় আসার পরেই এরাজ্যে কালীঘাটের সম্পত্তি বেড়েছে। চৌকিদার যদি নিজেই চোর হয়, তবে চোর ধরবে কে?
বাংলার পুনর্জাগরণে বামপন্থাকে শক্তিশালী করার আবেদন করে সেলিম বলেছেন, ফসল ঘরে তুলতে হলে কাস্তেটাতে ভালো করে শান দিতে হয় কৃষকদের। বাংলার কৃষকদের বলবো, কাস্তেটায় শান দিন, তাতে তৃণমূলের লুটেরাদের হাত থেকে রক্ষা করে নিজের ফসল কেটে তুলতে পারবেন। শ্রমিক মজুর সহ সব খেটে খাওয়া মানুষকে বলবো, হাতুড়ি মানে আপনাদের হাতিয়ার। সেটা মজবুত করে ধরবেন। সিলকিয়ারা টানেলে আটকে পড়া মজুরদের যদি মজুররাই রক্ষা করতে পারে তাহলে দেশটা টানেলে আটকে পড়লে শ্রমজীবীরাই দেশকে উদ্ধার করতে পারবে। 
ডিওয়াইএফআই’র সাদা পতাকার লাল তারা দেখিয়ে তিনি বলেন, দেশ ও বাংলাকে বাঁচানোর এই পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য লাল তারা আপনাদের পথ চেনাবে, ঠিক যেমন ধ্রুবতারা পথ চেনাতো অতীতদিনে। 
নতুন বাংলা গড়ার স্বপ্ন পূরণে সব মানুষকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে সেলিম বলেছেন, আমরা বামপন্থীরা চেয়েছিলাম বাঙালি মাথা উঁচু করে বাঁচবে। কাজের অভাবে ভিনরাজ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরতে হবে কেন? যারা কাজের সম্ভাবনাকে বুলডোজার চালিয়ে ধ্বংস করেছে, যারা দিল্লি উত্তর প্রদেশ আসামে বুলডোজার দিয়ে মানষের ঘর ভাঙছে, তাদের বামপন্থীরাই রুখতে পারে। বাংলাকে কোনোভাবেই মণিপুর হতে দেবেন না।
 

Comments :0

Login to leave a comment