নরসিংহপুর মোড় থেকে প্রায় দু কিলোমিটার ভেতরের গ্রাম। বাইকে আসার সময় মাসিদুল ইসলাম জানিয়েছেন সীমান্ত একেবারেই কাছে।
গ্রামের নাম বারমাসিয়া জলঙ্গী বিধানসভায়। এই এই বুকে গত পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছে সিপিআই(এম)। এগিয়েছিল লোকসভা ভোটেও।
আধো অন্ধকারে এই গ্রামেই মত বিনিময় সভায় বসলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ‘বাংলা বাঁচাও যাত্রা’য় এমনই ছিল সূচি।
রেল যোগাযোগ বলতে ষাট কিলোমিটার দূরে বহরমপুর। কৃষ্ণনগর স্টেশন বাসে তিন ঘন্টা।
দাওয়ায় হচ্ছে বৈঠক। প্রবীণ
আবু সাঈদ বললেন, “ভয়কর সন্ত্রাস ছিল ২০১১’র পর। পানি কেস। গাঁজা কেস দেওয়া হয়েছে নিয়মিত। সে কঠিন সময় গিয়েছে। তারপর আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়িয়েছি।”
সেলিম বললেন, “পানি বা গাঁজা কেস নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করি। কোনো থানা নিজে থেকে পানি কেস, গাঁজা কেস দিতে পারবে না। এসপি’র অনুমতি লাগবে। তৃণমূলের নেতারা ফাঁসায়। সেক্ষেত্রে, এসপি-কে জবাবদিহি করতে হবে আদালতে। এটার প্রচার দরকার।”
আলোচনা শুরু ফের। নাফিজুর সরকার বললেন, “একশ দিনের কাজ নেই। কৃষিজীবী এলাকা। স্কুলে পড়াশোনা হয় না। প্রধান বিষয় কর্মসংস্থান।”
সেলিমের সঙ্গে এসেছেন এসএফআই নেত্রী দীধিতি রায়। ছাত্রীরা এসেছে কয়েকজন। ছিলেন মহিলারা কাছেই। ক্ষুদ্র ঋণ এর জ্বালা রয়েছে এই গ্রামে। কিস্তির টাকার জন্য তাগাদার যন্ত্রণা জানিয়েছেন পুরুষরাও।
মুকুল মন্ডল ওড়িশার কোরাপুটে কাজ করতে যায়, “ব্যবসা করে। এই যুবক বলল, খুব সমস্যা হচ্ছে। আধার চায় যখন তখন। বলে বাংলাদেশী। এমনি লোকজন আধার কার্ড চেক করে। কদিন আগে একটা ছেলেকে খুব মারল।”
সেলিম বললেন , “এখন তো কোচবিহারে মুর্শিদাবাদের ছেলেকে বাংলাদেশী বলে মারছে। ওড়িশায় যুব নেতারা গিয়েছিল।
এর মধ্যেই আরও ক’জন বলে উঠলেন, একশ দিনের কাজ করে টাকা পাইনি। চার বছর বকেয়া। পঞ্চায়েত গেলে সার্টিফিকেট টাকা ছাড়া দেয় না। দীধিতি বললেন, “স্কুলের সমস্যা গোটা রাজ্যে। কম্পোজিট গ্রান্টে টাকা নেই। শিক্ষক নেই। নিয়োগ নেই। ছাত্রছাত্রীরা আসছে না।”
বাসিন্দারা জানালেন, কাছের হাসপাতাল রোগীকে নিয়ে যেতে খরচ ৭০০ টাকা।
সেলিম বললেন, “কাজের জন্য আইন হলো। দুর্নীতি হলে আইন তদন্ত করে শাস্তির ব্যবস্থা আছে আইনে। তা হলো না। গরিব শাস্তি পেলো। এই হচ্ছে বিজেপি। এর মধ্যে হিন্দু মুসলিম নেই।
আর রাজ্যের সরকার বলছে টাকা দেয় না। কিন্তু চুরি তো হয়েছে। ব্যবস্থা নেয়নি কেন। “
একজনের প্রশ্নে সেলিমই বললেন, “কাজ নেই গ্রামে বলে শহরে যাচ্ছে। তাকে বাংলাদেশী বলছে। বিজেপির এই রাজনীতি বর্বর। আবার তৃণমূল বলছে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ব। কি করে লড়বে। বিজেপির সঙ্গে মিলে তো দল করেছিল। কংগ্রেস ভেঙে করেছিল। বলেছিল স্বাভাবিক মিত্র। বিজেপির মূলে আরএসএস। মমতা কখনও তার বিরূদ্ধে বলে না। এরা থাকলে গণতন্ত্র থাকবে না, সংবিধান থাকবে না। তাই বাংলা বাঁচাতে হবে, দেশ বাঁচাতে হবে। তাই লাল ঝান্ডা জোর বাড়াতে হবে।”
এদিন সাতটি জায়গায় সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আভাস রায়চৌধুরী সহ নেতৃবৃন্দ এমনই মতবিনিময় সভা করেছেন বিভিন্ন গ্রামে।
Md Salim
রাজ্য সম্পাদককে যন্ত্রণা জানালো লড়াকু বারমাসিয়া
বারমাসিয়ায় উঠোন সভায় মহম্মদ সেলিম
×
Comments :0