প্রবন্ধ | মুক্তধারা
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জ্ঞানী
তপন কুমার বৈরাগ্য
পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন পিথাগোরাস।
আজো দশম শ্রেণিতে তাঁর সেই বিখ্যাত উপপাদ্য আছে --সমকোণী ত্রিভুজের অতিভুজের উপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল ঐ ত্রিভুজের অপর দুই বাহুর উপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের সমষ্টির সমান।
সারা পৃথিবীতে তাঁকে উপপাদ্যর জনক বলা হয়।এটা তাঁর
জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য। আজ থেকে ২৬০০বছর আগের
এই তত্ত্ব সারা পৃথিবীর ছাত্রছাত্রীদের জ্যামিতির অনেক
সমাধান সহজ সরল করে দিয়েছে।পিথাগোরাস ৫২৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে
গ্রীসের সামোসে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটোবেলা থেকেই তিনি
ভাবুক প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। অসাধারণ স্মৃতিধর ছিলেন।
নতুন নতুন চিন্তা সবসময় তাঁর মাথায় আসতো।তখনকার দিনের মানুষের দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো পৃথিবী সমতল । তিনি বেশ কিছুদিন ধরে চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্যগ্রহণ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করলেন।
চন্দ্রগ্রহণের সময় দেখলেন পৃথিবীর ছায়া চন্দ্রের উপর পড়ছে।
পৃথিবীর ছায়াটা গোল। তিনি স্থির সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন
পৃথিবী চ্যাপটা নয়,পৃথিবী গোল। তাই বলা যায় পৃথিবীর
গোলীয় তত্ত্বের কথা তিনিই প্রথম বলেছিলেন।
পিথাগোরাসের উপপাদ্যর বিপরীত উপপাদ্য হলো কোন ত্রিভুজের
বৃহত্তম বাহুর উপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল অপর দুই
বাহুর উপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলের সমষ্টির সমান
হলে বৃহত্তম বাহুর বিপরীত কোণ সমকোণ হবে। তিনি এর
মাধ্যমে জমি জরিপের অনেক বিষয় সহজেই সমাধান
করে দিলেন।সারা গ্রীসে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল।
তিনি তখন বৃদ্ধ। ইতালীর মেটাপনটাম গ্রামে তাঁর ডাক পড়ল
জমি সংক্রান্ত এক জটিল বিষয় সমাধান করার জন্য।
কারণ পৃথিবীর মানুষ জেনেগেছেন তাঁর মতন জ্ঞানী ব্যক্তি
পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি কেউ নেই। তিনি সেখানে পৌঁছলেন।
তিনি তখন বৃদ্ধ হয়েছেন।গ্রীস থেকে ইতালী আসার এতোটা রাস্তার
ধকল তিনি সহ্য করতে পারলেন না। অসুস্থ হয়ে পড়লেন।
যাহোক অসুস্থ অবস্থায় তিনি জমি সংক্রান্ত বিষয়টা সমাধান
করে দিলেন।লোকে তাঁর নামে ধন্য ধন্য করে উঠলেন।
এখানেই কয়েকদিন পর অর্থাৎ ৪৯৭খ্রিস্টপূর্বাব্দে শেষ নিঃশ্বাস
ত্যাগ করলেন।মেটাপনটাম গ্রামে তাঁর পাথরের মূর্তি আজো
তাঁর কীর্তির স্বাক্ষর রেখে চলেছে। যেন বলছে--তুমি পৃথিবীর
প্রাচীন জ্ঞানী ব্যক্তি।
Comments :0