প্রবন্ধ | মুক্তধারা
সপ্তর্ষিমন্ডলের সাত ঋষি
তপন কুমার বৈরাগ্য
সারা বছর উত্তর আকাশে যে সাতটি তারাকে দেখা যায়
তাদের বলা হয় সপ্তর্ষিমন্ডল।এই তারাগুলোকে এপ্রিলমাসে
আরও উজ্জ্বলভাবে দেখা যায়।আকাশের অন্যদিকে থাকে
এম আকৃতির ক্যাসিওপিয়া,ক্রুশচিহ্নের মতন বকমন্ডল,
আর সবচেয়ে সুন্দর নক্ষত্রপুঞ্জ কালপুরুষ।যাকে একজন
শ্রেষ্ঠ শিকারী হিসাবে কল্পনা করা হয়। গ্রিকের প্রাচীন জ্যোতির্বিদরা
সপ্তর্ষিমন্ডলের নাম দেয় উর্সামন্ডল।বাংলায় যাকে বলা হয় ঋক্ষমন্ডল।
এইরূপ নামকরণের কারণ এই সাতটা তারাকে যোগ করলে
একটা জিজ্ঞাসা চিহ্নের মতন লাগে বলে। আমাদের দেশের
প্রাচীন জ্যোতির্বিদরা এই সপ্তর্ষিমন্ডলের নামকরণ করেন আমাদের
দেশের প্রাচীন সাতজন মহান ঋষির নাম অনুসারে।যারা
বৈদিকযুগে সংস্কৃতির ধারক ও বাহক ছিলেন। এই সাতজন
ঋষি হলেন বশিষ্ঠ, মরীচি,পুলস্ত্য,পুলহ, অত্রি,অঙ্গিরা ,ক্রতু।
বশিষ্ঠঃ সপ্তর্ষির অন্যতম ঋষি।বশিষ্ঠকে ঋগ্বেদের সপ্তম মন্ডলের
অন্যতম রচয়িতা বলা হয়।সপ্তর্ষির কাছাকাছি যে অরুন্ধতী আছে তিনি তার স্বামী।
মরীচিঃ ইনি ছিলেন ব্রহ্মার মানসপুত্র ও মহামুণি কশ্যপের পিতা।
দেবগণ ও অসুরদের পিতামহ ছিলেন।তিনি ছিলেন বেদান্তের
প্রতিষ্ঠাতা।
পুলস্ত্যঃ ব্রহ্মার মননশীল পুত্রদের অন্যতম ছিলেন তিনি। যিনি
দশজন প্রজাপতির একজন প্রজাপতি ছিলেন।
পুলহঃ ইনিও ছিলেন ব্রহ্মার মানসপুত্র।তিনি সেইসময়কার
একজন শ্রেষ্ঠ পন্ডিত ছিলেন।মহাভারতে তার কথা উল্লেখ আছে।
অত্রিঃ সবচেয়ে সুপরিচিত এবং ঋষিশ্রেষ্ঠ ছিলেন।ইনার
ধর্মগ্রন্থ ঋগ্বেদে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছে।
ক্রতুঃ ইনিও ব্রহ্মার মানসপুত্র ছিলেন।যিনি দুটি ভিন্ন যুগে
পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং অনেক মহানকীর্তি
রেখে গেছেন।
অঙ্গিরাঃ ইনিও একজন বৈদিক ঋষি ছিলেন।ইনি ঐশ্বরিক
জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।তিনি মানুষ এবং দেবতাদের মধ্যে
সংযোগ রক্ষাকারী ছিলেন।
ঋগ্বেদের যুগের এই সাতজন ঋষি আজো অমর হয়ে আছে উত্তর
আকাশের সপ্তর্ষিমন্ডলের মধ্যে।
Comments :0