7 January Brigade Salim

সাজানো দ্বৈরথ ভাঙতে তৈরি হচ্ছেন জনতা, ব্রিগেডের আহ্বানে সেলিম

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

মানুষ প্রস্তুত হচ্ছেন। মাটিতে কান পাতলেই বোঝা যাচ্ছে। বিজেপি-তৃণমূলের সাজানো দ্বৈরথ ধরা পড়ে যাচ্ছে। যৌবনের ডাকে জনতা ইনসাফের দাবিতে রাস্তায়। যৌবনের ডাকে জনতার ব্রিগেড হবে ৭ জানুয়ারি। সাজানো দ্বৈরথ ভাঙতে তৈরি হচ্ছেন জনতা। 
মঙ্গলবার মুজফ্‌ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেছেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বিজেপি এবং তৃণমূল প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘কৃষকদের থেকে ফসল সংগ্রহ হচ্ছে না। একশো দিনের কাজ নেই। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে ভাইপোকে বাঁচাতে।’’ 
ব্রিগেডের সমাবেশের পাশাপাশি বিবেকানন্দকে সামনে রেখে বিজেপি-তৃণমূলের দ্বৈরথ ঘিরেও মন্তব্য করেছেন সেলিম। কলকাতায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের সফর, ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চে বামপন্থীদের ভূমিকা প্রসঙ্গেও বলেছেন সিপিআই(এম)’র এই পলিট ব্যুরো সদস্য।
এক প্রশ্নে সেলিম বলেন যে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চেই ঠিক হয়েছে রাজ্যের অবস্থা অনুযায়ী আসন সমঝোতা হবে। যে তৃণমূলের পিছনে আরএসএস রয়েছে তাদের সঙ্গে বামপন্থীরা আসন সমঝোতা করবে না। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার রাজনীতি সিপিআই(এম) এবং বামপন্থীরা বোঝে।’’  
‘‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের ঐতিহ্য দেশের। সেই ঐতিহ্য অটুট রাখতে এ রাজ্যের পাশাপাশি সারা দেশে লড়াইয়ে আছেন বামপন্থীরা। খেটে খাওয়া মানুষ, সমান অধিকারের দাবিতে মহিলারা, উচ্ছেদ হওয়া হকার সমবেত হতে চাইছেন। রাজ্যের এবং কেন্দ্রের দুই সরকারকে চাইছেন না তাঁরা।’’
এদিন বিবেকানন্দকে উপলক্ষ্য করে বিজেপি এবং তৃণমূলের ‘লড়াই’ ঘিরে সেলিমের মন্তব্য, ‘‘কে কত বেশি বাঙালি সাজতে পারে তার চেষ্টা হচ্ছে। গত নির্বাচনের আগে দেখেছিলাম সুভাষ বসুকে নিয়ে, কখনও বিদ্যাসাগরকে নিয়ে রাজ্যের রাজনীতিতে এমনই ‘বাইনারি’ তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। এখন আবার বিবেকানন্দকে সামনে রেখে সেই চেষ্টা চলছে।’’
সেলিমের ব্যাখ্যা, ‘‘বিবেকানন্দই বলেছিলেন যে ‘চালাকির দ্বারা মহৎ কাজ হয় না।’ মনে রাখা ভালো বিবেকানন্দ ভারত পথিক ছিলেন। তিনি ধর্মীয় সংকীর্ণতা, জাতিভেদের ঊর্ধ্বে ওঠার ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর সেই চিন্তাই আরএসএস’র আক্রমণের শিকার।’’ 
আরএসএস এবং তৃণমূল প্রসঙ্গে সেলিম এদিনও বলেছেন, ‘‘আরএসএস মনে করছে বামপন্থীদের শক্তি বাড়লে বিপদ। ওদের কাছে মন্দের ভালো তৃণমূল। তৃণমূল থাকলে ওদের সাংগঠনিক বিস্তার হওয়া সুবিধাজনক। মমতাও আরএসএস’কে সন্তুষ্ট রাখছেন।’’  
সেলিমের সংযোজন, ‘‘তৃণমূল গোড়া থেকে আরএসএস পরিবেষ্টিত। আরএসএস মনে করে মমতাকে ব্যবহার করে শাখা প্রশাখা বাড়াতে পারে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও দখল করতে চাইছে আরএসএস।’’
অমিত শাহ এদিন বিজেপি’র রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। লোকসভা নির্বাচনের জন্য কোর কমিটি গড়েছেন দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীদের নিয়ে। এক প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘আরএসএস নামিয়ে, মমতা নামিয়ে, সরকারি প্রচার করে,মোদীর মুখ দেখিয়েও হচ্ছে না। নিজেদের মধ্যেই মারামারি চলছে। কমিটির পর কমিটি হচ্ছে। কোন নেতা দিল্লির কত কাছে তার প্রতিযোগিতা চলছে।’’
তিনি বলেন, কেউ কেউ ভেবেছিলেন ছাপ্পান্ন বুঝি নবান্নকে শায়েস্তা করবেন। তাঁরাও বুঝছেন। রাজনীতিতে দ্বৈরথ তৈরির চেষ্টা করছে তৃণমূল এবং বিজেপি।’’ সেলিম বলেন, ‘‘গোটা উত্তরবঙ্গে বিজেপি’কে ত্যাগ করছে। সারা দেশেও তাই। শিবেসনা, আকালি দল ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে জোট। দক্ষিণবঙ্গে বিজেপি ভেঙে চুরমার।’’ তিনি বলেন, ‘‘বাংলার মানুষকে তৃণমূলকে ছুঁড়ে ফেলতে চাইছে। টিকিয়ে রাখতে চাইছে আরএসএস।’’
‘ইন্ডিয়া’ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে সেলিম বলেন, ‘‘সংসদে সদস্যদের সাসপেন্ড করা হলো। তার মধ্যে তৃণমূলের সাংসদরাও রয়েছে। ‘ইন্ডিয়া’-র সব দল প্রতিবাদ জানালো, সরে থাকল তৃণমূল। প্রধানমন্ত্রী পদের মুখ নিয়ে কোনও আলোচনাই এই মঞ্চে ছিল না। তৃণমূল এই বিষয়টি টেনে আনল। ওদের একমাত্র দাবি আসন সমঝোতা। যে তৃণমূলের পিছনে আরএসএস আছে তাদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করবে না বামপন্থীরা।’’

Comments :0

Login to leave a comment