Sikkim Flood Migrant Death

সিকিমে বানে ভেসে নিখোঁজ এরাজ্যের তিন পরিযায়ী

জাতীয় রাজ্য

বন্যায় ভেসে যাওয়া সিকিম।

সঞ্জিত দে: ধূপগুড়ি


 

পেটের টানে বাড়ির বাইরে গিয়ে কাজ করা। পুজোর সময় বাড়ি ফিরে উৎসবের কেনাকাটা করার কথা ছিল। কিন্তু ফেরা অনিশ্চিত অজিত মুণ্ডার। হড়পা বান ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে সিকিমে। 

চরম বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে পড়শি রাজ্য। সেখানে বাংলা থেকে শুধু পর্যটকরাই নন, গিয়েছিলেন বহু পরিযায়ী শ্রমিকও। বুধবার বিকাল থেকে নিখোঁজ ডুয়ার্সের দুই পরিযায়ী শ্রমিক। সিকিমে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভেসে গেলেন বানারহাটের কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের বাসিন্দা দুই শ্রমিক। নাম পঞ্চন ওঁরাও (৩৫) ও অজিত মুণ্ডা (৩০)। চা বস্তির বাসিন্দা তাঁরা। শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন সিকিমে। সেখানেই তিস্তায় ভেসে যান দু’জন।

একইভাবে ময়নাগুড়ির আরও এক যুবকও সিকিমের এই বিপর্যয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। পরিবার সুত্রে জানা গেছে, মাস কয়েক আগে সেনাবাহিনীর পোর্টার (মালবাহক) পদে সিকিমে কাজে যোগ দিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমহনী ২নং গ্রাম পঞ্চায়েতের চাতরার পার গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জিত রায়। মঙ্গলবার রাতে পরিবারের সাথে শেষ কথা হয়েছিল তাঁর। বুধবার থেকে আর ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। বুধবার রাতে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন মারফত রঞ্জিতের নিখোঁজ হওয়া সংক্রান্ত খবর তাঁর বাড়িতে এসে পৌঁছানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর পরিবারের লোকেরা। এরপর আজ এই খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়তেই গোটা গ্রাম কার্যত থমথমে।

এদিন বানারহাটের কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, সিকিমের কারপানিতে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলন পঞ্চন, অজিতরা। তিস্তা নদীর ধারে ক্যাম্প করে থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে ক্যাম্পে তখন তাঁরা ঘুমিয়ে। আচমকাই শুরু হয় মেঘ ভাঙা বৃষ্টি। ভাঙে বাঁধ। বাঁধ ভাসিয়ে নিয়ে যায় এলাকার পর এলাকায়। তাতেই ভেসে যান ওই ক্যাম্পে থাকা শ্রমিকরাও। এখনও অবধি একজনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে এখনও খোঁজ নেই কাঁঠালগুড়ি চা বাগানের এই দুই যুবকের। রাতভর জেগে বাড়ির লোকেরা। তাঁদের সঙ্গে কার্যত গোটা গ্রামই জেগে। উদ্বেগ কাটছে না। ওই বুঝি খবর এলে কিছু।

অজিত মুণ্ডার বোন সরস্বতী ওঁরাও বলেন, “বুধবার বিকাল ৫টায় ফোন আসে আমাদের কাছে। বলল, ওখানে বান এসেছে। আপনাদের পরিবারের যিনি গিয়েছেন, উনি নিখোঁজ। আমাদের গ্রাম থেকে দু’জন গিয়েছিল। দু’জনেরই খোঁজ নেই। খুব চিন্তায় আছি। প্রশাসনের লোকজন এসেছিল। ওরা বলেছে, সমস্ত ব্যবস্থা করবে। চিন্তার কিছু নেই। এখনও অবধি তো কোনও খবর এল না।” 

অজিতের স্ত্রী রজনিতা মুণ্ডা জানান, দুর্গাপুজোর সময় বাড়ি ফেরার কথা ছিল।  তিনমাস হলো সিকিমে কাজে গিয়েছেন বেশ কয়েকজন বাগান থেকে। এখানেই কাজ করত। তবে এখানে বর্ষায় কাজ কমতেই সিকিমে যান শ্রমিকের কাজ করতে।

Comments :0

Login to leave a comment