নিউল্যান্ডসের উইকেটে সবুজ ঘাস। দ্বিতীয় টেস্টের জন্য এমনই উইকেট বানিয়েছে স্থানীয় ক্রিকেট সংস্থা। নতুন পিচ কিউরেটর ব্রারাম মংয়ের হাতে তৈরি হয়েছে কেপটাউনের বাইশ গজ। তবে এখানে যা গরম, বোলারদের জন্য কতটা সাহায্য মজুত থাকবে বলা যাচ্ছে না। টেস্টে ক্রিকেটে প্রথম এক ঘণ্টা বোলারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। লাঞ্চের আগে অবধি ধৈর্য ধরে কাটাতে পারলে বাকি দিনটা হয়ে যেতে পারে ব্যাটারদের।
টেস্ট ক্রিকেটে পার্থক্য গড়ে দেয় বাইশ গজ। পিচ ভালোভাবে বুঝে উঠতে না পারলে, পরিকল্পনা, রণনীতি, নীল নকশা সাজাতে সমস্যা হবেই যে কোনও দলের। তাই ম্যাচের আগের দিন কোচ, অধিনায়ক, বাকি ক্রিকেটাররা গিয়ে নিয়মমাফিক পিচ দেখে আসেন। এদিন দেখা গেল শুয়ে পড়ছেন বাইশ গজ দেখছেন রবীন্দ্র জাদেজা ও অভিমন্যু ঈশ্বরন। তার আগে উইকেটে গিয়ে শ্যাডো করে এলেন রোহিত শর্মা। নতুন বছরে বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেল রোহিতকে। অনেক বেশি ঝকঝকে। ডিন এলগারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকায় এটি তাঁর শেষ টেস্ট ম্যাচ চলেছে। আফ্রিকার মাটিতে ব্যাটার হিসাবে তাঁর পরিসংখ্যান ভালো নয়। সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে ভারত। কেপটাউনে ওপেন করতে নেমে যদি রোহিত বড় রান করে, ভিত গড়ে দিতে পারেন, তাহলে অনেকটাই ভালো জায়গায় থাকবে তাঁর দল।
রোহিত ছাড়া এদিন ভারতের প্র্যাকটিসে দেখা গেল শুভমন গিল, অভিমন্যু ঈশ্বরন, ঈশ্বরন, আবেস খান, কেএস ভরতদের। ম্যাচের আগের দিন বলেই খুব বেশি অনুশীলন করেননি তাঁরা। তবে নেটে শুভমন নিজের টেকনিক ঝালাতে ব্যস্ত ছিলেন। অভিমন্যু নকিং করলেন অনেকটা সময় ধরে। দু’দিনের প্রস্তুতি দেখে যা বোঝা যাচ্ছে প্রসিদ্ধ কষ্ণার বদলি হবে? তাঁর জায়গা কে নেবে? মুকেশ না আবেস খান। নেটে দু’জনই এক প্রকার নিঁখুত ছিলেন। মুকেশের চেয়ে আবেসের পেসটা বেশি। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে তা কার্যকরী হতে পারে। কিন্তু টেস্টে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে মুকেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তাঁর অভিষেক হয়েছিল। সেখানে খুব বেশি ওভার বল না করলেও, আঁটসাঁট বোলিং করে রান চাপিয়ে নজর কেড়েছিলেন। ফলে মুকেশ না আবেস চিন্তায় ভারতীয় দল। গরমের কারণে পিচে ফাটল ধরে। সেক্ষেত্রে জোড়া স্পিনারে নামার সম্ভাবনাও উজ্জ্বল। তবে একটা পরিবর্তন হচ্ছেই, সেটা রবীন্দ্র জাদেজা দলে ঢুকছেন।
তবে টেস্ট সিরিজে সমতা ফেরাতে হলে, রান করতে হবে ব্যাটারদের। টপ অর্ডার রোহিত, যশস্বী ও গিলের অবদান রাখাটা জরুরি। রোহিত-গিলরা রান পেলে সুবিধে হবে মিডল অর্ডারের। তাঁরা চাপমুক্ত হয়ে ব্যাটিং করতে পারবে। ৩০/৩ আর ২০০/৩ হওয়ার মধ্যে বিশাল পার্থক্য। আর সবদিন বিরাট কোহলি, কেএল রাহুল রান করবে না। বিদেশের মাটিতে বহুদিন ধরে ভারতীয় টপ অর্ডারের পারফরম্যান্স। সিরিজে পিছিয়ে থাকাটা অবস্থাতে দায়িত্ব নিতে হবে টপ অর্ডারকে। কেপটাউনের উইকেটে ভারত যদি প্রথম ব্যাট করে তাহলে বোর্ডে অন্তত ৩৫০ রান তুলতে না পারলে মুশকিল। বোলারদের হাতেও পুঁজি থাকবে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করলে তৃতীয় ইনিংসে বিপক্ষকে চাপে রাখতে হলে ৫০ রানের বেশি লিড নেওয়া জরুরি।
অন্যদিকে,শেষ টেস্ট খেলতে নামার আগে আবেগি ডিন এলগার। চোটের জন্য বাভুমা ছিটকে যাওয়ায় তিনি অধিনায়ক সিরিজের শেষ টেস্টে। গত সফরে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে সিরিজ জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এবার প্রথম টেস্টে দলকে জেতাতে তাঁর শতরান বড় ভূমিকা নিয়েছিল। তিনি চাইছেন, এই ম্যাচটা জিতে শেষটা স্মরণীয় করে রাখতে। বাকি সতীর্থরাও মরিয়া, অধিনায়কের জন্য নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দিতে। টেস্ট দলে ফিরছেন লুঙ্গি এনগিডি। বাভুমার জায়গায় খেলানো হবে স্থানীয় জুবেউর হামজাকে। প্রথম টেস্টে এলগার, বেডিংহ্যাম ছাড়া বাকি ব্যাটাররা রান পাননি। ব্যাটিংটা একপ্রকার চিন্তার প্রোটিয়া থিঙ্কট্যাঙ্কের। তবে কাগিসো রাবাডা, নান্দ্রে বার্গার, মার্কো জানসেন ফর্ম সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
ভারত:দক্ষিণ আফ্রিকা
(ম্যাচ শুরু দুপুর দেড়টা)
India vs South Africa
আজ শুরু শেষ টেস্ট সিরিজ, হার বাঁচাতে পারবে ভারত?
×
Comments :0