খাতা পেন হাতে বিভিন্ন অংশের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কথা শুনলেন সৃজন ভট্টাচার্য।
প্রতীকী চাবি হাতে তৃণমূল শাসনে মহেশতলা জোকার বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানা খোলা প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রতিক উর রহমান।
মে দিবসের সকাল-বিকেল ডায়মন্ড হারবার এবং যাদবপুর লোকসভার দুই সিপিআইএম প্রার্থী ব্যস্ত থাকলেন শ্রমজীবী মানুষের অভাব অভিযোগ বোঝার কাজে।
এদিন সকালে প্রতিক উর রহমান জোকা মহেশতলায় বন্ধ হয়ে যাওয়া ধুকতে থাকা বিভিন্ন কারখানার গেটে গেটে গিয়ে শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন। তাদের অভাব অভিযোগের কথা শুনেন।
তিনি বলেন, "মালিক পক্ষ মুনাফা নিয়ে চলে যাচ্ছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। কিন্তু একজন শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে না। কলকারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কোনটা ধুকছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। সংসদে বামপন্থীদের শক্তি বৃদ্ধি পেলে ডায়মন্ড হারবারের বন্ধ হয়ে যাওয়া কলকারখানা গুলো চালু করা হবে অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।"
লোকসভা নির্বাচনে প্রচারে প্রথম দিন থেকেই সিপিআই(এম) প্রার্থীরা বলে আসছেন তাদের ইলেক্টোরাল বন্ড নেই কিন্তু তাদের সাথে রয়েছেন ইমোশানাল বন্ড। ডায়মন্ডহারবার লোকসভার প্রার্থী প্রতিক উর রহমানের মুখেও শোনা গেল এই কথা তিনি বলেন, "আমি নিজে এক মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। বাবা ছোট ব্যবসায়ী। আমাদের কোন ইলেক্টোরাল বন্ড, নেই আমার বাড়িতে চলমান সিঁড়ি নেই বা বড় ঝাড়বাতি নেই। বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা এদিন লাল সালুতে করে নির্বাচনী তহবিলে কিছু আর্থিক সাহায্য করেছেন। তাদের এই সাহায্যের মর্যাদা রাখতে পারাই হবে আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।।"
বুধবার বিকেলে কামালগাজি অঞ্চলে যাদবপুর লোকসভা এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শ্রমিকদের সাথে মুখোমুখি কথা বললেন যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। এই দিন রিক্সা শ্রমিক, কলকারখানার শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, গৃহ সহায়িকারা সৃজন ভট্টাচার্যের কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। সবার কথা শোনার প্রথমেই সৃজন দলীয় কর্মী সমর্থকদের থেকে পেন ও কাগজ চেয়ে নেন। তার দিকে আশা প্রশ্নগুলো নিজের কাগজে লিখতে থাকেন সিপিআই(এম) প্রার্থী। তিনি এদিন বলেন, "কমিউনিস্ট পার্টি এবং ছাত্র আন্দোলন করার সুবাদে শ্রমিক শ্রেণীর বিভিন্ন সমস্যার কথা জানা ছিল। কিন্তু আজ অনেক কথা জানলাম যা সুযোগ পেলে সংসদে ভীতর তুলে ধরবো। কিন্তু আগামী ২৮ দিন প্রচারের যেই সময় হাতে রয়েছে তা এই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে প্রচারে তুলে ধরবো।"
এদিন সংরক্ষণ সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন সৃজনের দিকে ধেয়ে আসে। সে প্রশ্নের উত্তরে সৃজন বলেন, "সংরক্ষণ নিয়ে তর্কবিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে আরএসএসের ব্রাহ্মণ্যবাদী চিন্তাধারার কারণে আরএসএসের শাসনকালে ভারতবর্ষে দলিত, আদিবাসী, পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়েছে তা কত কয়েক বছরের সরকারি রিপোর্ট থেকে স্পষ্ট হয়েছে।"
তিনি বলেন, "কমিউনিস্ট পার্টির একজন প্রার্থী হিসেবে শ্রমিক শ্রেণীর স্বার্থ দেখায় তার প্রধান কাজ।"
কয়েকদিন আগে কলকাতা পৌরসভার ১১২ নম্বর ওয়ার্ডে পরিক্রমার সময় একজন রিক্সা চালক সৃজন এর হাতে একটি টিনের কৌটো তুলে দেন। তিনি জানান যেদিন প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা হয়েছে সেই দিন থেকে কিছু কিছু টাকা জমিয়েছেন তার হাতে তুলে দেবেন বলে। সেই সাহায্য পেয়ে নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সৃজন ভট্টাচার্য।
Comments :0