Surjya Kanta Mishra coochbeher

তৃণমূলের স্বৈরশাসন রুখতে না পারলে বাড়বে বিজেপি: সূর্য মিশ্র

রাজ্য

Surjya Kanta Mishra

পশ্চিমবাংলায় তৃণমূলের যে শাসন চলছে, তা আসলে স্বৈরশাসন। এর মোকাবিলা না করতে পারলে এখানে বিজেপি’র শক্তি বাড়বে। আর বামপন্থীরাই একমাত্র পারবে এই স্বৈরশক্তিকে মোকাবিলা করতে। সোমবার কোচবিহারে সিপিআই(এম) জেলা কার্যালয়ের সামনের মাঠে জেলায় পার্টির প্রবীণ নেতা প্রয়াত কমরেড প্রদীপ নাথের স্মরণসভায় একথা বলেন পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য সূর্য মিশ্র। তিনি বলেন, বিজেপি যে কী ভয়াবহ শক্তি সেটা বুঝতে হলে ত্রিপুরার দিকে তাকাতে হবে। ত্রিপুরা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে। বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াইকে শিথিল করলে তৃণমুলের শক্তি বাড়বে। 

উল্লেখ্য, কোচবিহার জেলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের নেতা কমরেড প্রদীপ নাথ গত ৬ নভেম্বর ৭৮ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন। 
এদিন সূর্য মিশ্র বলেন, মোদী সরকারের আমলে বিজেপি-ঘনিষ্ঠরা ব্যাঙ্কের লক্ষ কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এদের সব সম্পত্তি যদি বিক্রি করে দেওয়া হয়, তবুও ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ হবে না। এই লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা দেশের সাধারণ মানুষের আমানত। আমেরিকার মতো দেশও আজ সঙ্কটে ধুঁকছে। সেখানে ভারতের মতো দেশের ব্যাঙ্কের নিশ্চয়তা কোথায়? দেশের ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হলে কী হবে দেশের সাধারণ মানুষের! দেশকে এক ভয়ঙ্কর বিপদের সামনে নিয়ে গেছে বিজেপি সরকার।


সূর্য মিশ্র বলেন, এই ভয়াবহ সঙ্কটকে চাপা দেওয়ার জন্য, দেশের সাধারণ মানুষকে নিয়ে ধর্মের তাস খেলছে কেন্দ্রের সরকার। বিভাজন করা হচ্ছে আদিবাসীদের মধ্যেও। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আবার আদিবাসীদের বনবাসী হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছে। আদিবাসীদের অস্তিত্বকেই স্বীকার করতে চাইছে না। তিনি বলেন, রাজ্যের খেটে খাওয়া মানুষের মধ্যে ৭১ শতাংশ মানুষ হয় তফসিলি, নয় আদিবাসী অথবা ওবিসি। শাসকের লক্ষ্য এদের মধ্যে জাতপাত, ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি করতে পারলেই ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে। এই ৭১ ভাগ মানুষকে একত্রিত করতে হবে। সমাজের মধ্যে যে বৈষম্য রয়েছে তার বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন লড়াই চালাতে হবে। এদিন সূর্য মিশ্র বলেন, মানুষের কাছে যেতে হবে। মানুষের থেকে আমাদের ধৈর্যের সাথে অভিজ্ঞতা নিতে হবে। 
এদিনের স্মরণসভায় সূর্য মিশ্র বলেন, কমরেড প্রদীপ নাথের জীবনে আত্মগোপন করে দীর্ঘসময় দলকে সংগঠিত, মজবুত করার বিরাট অভিজ্ঞতা ছিল। সেই সময়ে তিনি মানুষের থেকে শিখেছিলেন অনেক কিছু। মানুষের মনকে বুঝতে পারতেন অনায়াসে। তিনি বলেন, সংগঠন কী করে পরিচালনা করতে সেটা বুঝতেন কমরেড প্রদীপ নাথ। যে কোনও কঠোর কঠিন পথকে মোকাবিলা করেই দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতেন। তাঁর ত্যাগস্বীকারের ঘটনাও আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে আদর্শ হতে পারে। দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পরের প্রজন্মকে তৈরি করতে হবে।


এদিন স্মরণসভার শুরুতে কমরেড প্রদীপ নাথের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন সূর্য মিশ্র, পার্টির রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জীবেশ সরকার, কোচবিহার জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অনন্ত রায়, পার্টিনেতা তমসের আলি, বিপিন শীল, হরিশ বর্মণ, সফিজ আহমেদ, মহানন্দ সাহা, অমিত দত্ত, মোকসেদুল ইসলাম, প্রবীর পাল, পূণ্যেশ্বর অধিকারী, ধনেশ্বর রায়, প্রসেনজিৎ সরকার সহ  পার্টির প্রবীণ নেতৃত্ব তারিণী রায়, অখিল প্রামাণিক, অরুণ চৌধুরি, মনোজ রায় প্রমুখ। এই স্মৃতিচারণ সভায় শোকপ্রস্তাব পাঠ সহ কমরেড প্রদীপ নাথের স্মৃতিচারণ করেন অনন্ত রায়। স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন তমসের আলি।

Comments :0

Login to leave a comment