STATE-COORDINATION-COMMITTEE CONFERENCE

শনিবার শুরু রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সম্মেলন

রাজ্য

WEST BENGAL-STATE-COORDINATION-COMMITTEE CONFERENCE

অনৈতিক প্রতিহিংসামূলক বদলি বন্ধ করে বকেয়া ৩৫ শতাংশ মহার্ঘভাতা প্রদান, সমস্ত শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ, সমকাজে সমবেতন সহ বিভিন্ন দাবিকে সামনে রেখে আগামী শনিবার জলপাইগুড়িতে শুরু হতে চলেছে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির বিংশতিতম রাজ্য সম্মেলন। সোমবার পর্যন্ত সম্মেলন চলবে। শনিবার সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন কৃষক আন্দোলনের সর্বভারতীয় নেতা হান্নান মোল্লা। সম্মেলন শেষে সোমবার জলপাইগুড়ি রবীন্দ্র ভবন প্রাঙ্গণে প্রকাশ্য সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন সিআইটিইউ’র সর্বভারতীয় সভাপতি কে হেমলতা সহ কর্মচারী আন্দোলনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কো-অর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক বিজয় শঙ্কর সিংহ। 

 


ইতিমধ্যেই সম্মেলন উপলক্ষে ফ্লেক্স, ফেস্টুন, ব্যানার, পতাকা দিয়ে জলপাইগুড়ি শহরের বিভিন্ন মোড় সাজানোর কাজ শুরু হয়েছে। রাজ্য সম্মেলন উপলক্ষে শহরের ব্যস্ততম মোড়গুলিতে তৈরি হয়েছে তোরণ। বিজয় শঙ্কর সিংহ এদিন জানান, জননেতা জ্যোতি বসুর জন্মজয়ন্তীতে রক্তদান শিবিরের মধ্য দিয়ে রাজ্য সম্মেলনের প্রচার অভিযান শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে লোকসঙ্গীত প্রতিযোগিতা, অঙ্কন প্রতিযোগিতা, ক্যুইজ প্রতিযোগিতা, স্বাস্থ্য শিবির, প্রাণী স্বাস্থ্য শিবির, স্বাস্থ্য সচেতনতা ও শিক্ষা সেমিনার, স্বাস্থ্য সচেতনার প্রচার, পদযাত্রা, ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতার মতো বহুবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির জলপাইগুড়ি জেলা শাখা। 

 

তিনি বলেন, দীর্ঘ সাত মাস ধরে বিভিন্ন কর্মসূচির পর আগামী শনিবার শুরু হতে চলেছে রাজ্য সম্মেলন। তার আগে শুক্রবার দুপুর দুটোয় বিংশতিতম রাজ্য সম্মেলনের প্রতিনিধি সহ শ্রমিক-কর্মচারীদের বর্ণাঢ্য মিছিল জলপাইগুড়ি শহর পরিক্রমা করবে। শহরের রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে সেই মিছিলকে সংবর্ধিত করবেন বিভিন্ন গণসংগঠনের কর্মী ও নেতারা। 

 


সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিজয় শঙ্কর সিংহ এদিন বলেন, তৃণমূলনেত্রী মমতা ব্যানার্জি রাজ্যে সরকার গঠন করার আগে কর্মচারীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁদের সমস্ত বকেয়া পাওনা তিনি মিটিয়ে দেবেন। কিন্তু বকেয়া মেটানো তো দূরের কথা, সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের ৩৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বকেয়া রয়েছে গত এক দশকের বেশি সময়। বিভিন্ন রাজ্য সরকারি দপ্তরে নতুন কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। শিক্ষক নিয়োগেও চরম দুর্নীতি হয়েছে। সিবিআই তদন্তের ফলে মন্ত্রি সহ প্রায় গোটা শিক্ষা দপ্তরই এখন জেলে। যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা রাস্তায় বসে আছেন ধরনায়। বাংলার শিক্ষিত ছেলমেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে নবান্ন অভিযানে গেলে বয়স্ক মহিলা থেকে সন্তানসম্ভবা পর্যন্ত কাউকে রেহাই দেয়নি পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কর্মচারী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে। 

 

 

 


তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতিতে এই প্রথম উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির রাজ্য সম্মেলন। সম্মেলনে ৭৫০ জন প্রতিনিধি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপস্থিত হবেন। দেশের অন্যান্য রাজ্য, এমনকী বাংলাদেশ থেকেও সম্মেলনে যোগ দেবেন শ্রমিক-কর্মচারী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। সম্মেলনে শুধু কর্মচারীদের দাবিদাওয়াই নয়, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের দমনপীড়নমূলক ও প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির কারণে দেশ ও রাজ্যে যে অস্থির পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, কর্মচারী অংশের বাইরে বৃহত্তর রাজনৈতিক ক্ষেত্রের সেই অবস্থা নিয়েও আলোচনা হবে। 


সমাবেশ, সম্মেলন ও মিছিলকে সর্বাত্মক সফল করতে জেলার সমস্ত অংশের শ্রমজীবী মানুষ ও গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি ছাড়াও সংগঠনের রাজ্য নেতা দেবব্রত রায়, জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক মনোজিৎ দাস এবং যুগ্মসম্পাদক রাজদীপ দত্ত উপস্থিত ছিলেন। 

Comments :0

Login to leave a comment