ICDS Bhandiguri Tea Estate

ভান্ডিগুড়ি বাগানের অঙ্গনওয়াড়ি বেহাল, কমছে শিশুর সংখ্যা

জেলা

অঙ্গনওয়াড়ির পরিষেবা প্রায় নেই, অসহায় শিশুরা।

দীপশুভ্র সান্যাল: জলপাইগুড়ি

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বরপেটিয়া নতুনবস গ্রাম পঞ্চায়েতের ভান্ডিগুড়ি চা বাগান এলাকায় অবস্থিত ৩১৭ নম্বর আইসিডিএস (অঙ্গনওয়াড়ি) সেন্টারে চরম অনিয়ম ও অব্যবস্থার ছবি সামনে এসেছে। 
পঞ্চায়েত প্রধান মালা ওরাওয়ের নিজের বুথ থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এই সেন্টার। প্রায় এক বছর ধরে অঙ্গনওয়াড়ির কর্মী দিদিমণি আসছেন না বলে অভিযোগ। কিন্তু গ্রাম পঞ্চায়েত বা ব্লক স্তর থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আইসিডিএস সেন্টারে শিশুদের জন্য রান্না করা পুষ্টিকর খাবার, ডিম, প্রাক্‌-প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, নিরাপদ পানীয় জল ও পরিচ্ছন্ন শৌচাগারের ব্যবস্থা থাকার কথা। কিন্তু বাস্তবে এই সেন্টারে নথিভুক্ত ২৭ জন শিশুর নাম থাকলেও প্রতিদিন রান্না হয় মাত্র ১০–১২ জনের জন্য। অভিযোগ, খাতায় দেখানো হয় ২৬–২৭ জন শিশুর উপস্থিতি। দিদিমণির দীর্ঘ অনুপস্থিতির ফলে সেন্টারের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ভেঙে পড়েছে। শৌচাগার ব্যবহার হয় না। সেখানে থালা-বাসন ও অন্যান্য সামগ্রী মজুত করে রাখা হয়েছে। রান্নাঘরে ডিম ও খাবার অস্বাস্থ্যকরভাবে রয়েছে। চারদিকে মাছি, তেলাপোকা ও টিকটিকির উপদ্রব। 
সেন্টারের ভেতর-বাইরের পরিবেশ এতটাই শোচনীয় যে এটি শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র বলে বোঝা যায় না। শুধুমাত্র অঙ্গনওয়াড়ির হেল্পার প্রতিমা রায় শিশুদের রান্না করা খাবার দিয়ে কাজ চালাচ্ছেন।
সেন্টারের পরিস্থিতি দেখে সেন্টারে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। শিশুদের অভিভাবক সাঙ্গ ওরাও, সুনীতা ওরাও, সূর্য ওরাও ও শচীন থাপার বক্তব্য এই নোংরা ও অ-নিরাপদ পরিবেশে তাঁরা ভবিষ্যতে আর সন্তানদের সেন্টারে পাঠাতে চান না। এর ফলে ধীরে ধীরে শিশুর সংখ্যা কমছে। চা বাগানের এই আইসিডিএস সেন্টার কার্যত বন্ধের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সিপিআই(এম) কর্মী ও চা শ্রমিক নেতা অমল নায়েক বলেন, “তৃণমূলের লোকদেখানো উন্নয়নের প্রচারের আড়ালে বামফ্রন্ট আমলে গড়ে ওঠা চা বাগানের আইসিডিএস সেন্টারগুলি আজ শিক্ষিকা ও শিশুর অভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রধানের নিজের বুথে এমন ঘটনা ঘটলেও পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের নীরবতা প্রমাণ করে এই অবহেলা ইচ্ছাকৃত।”
নিয়ম অনুযায়ী, এমন অনিয়মের অভিযোগ উঠলে ব্লক ও জেলা প্রশাসনের উচিত খতিয়ে দেখা। ব্যবস্থাও নেওয়ার কথা। কিন্তু ব্যবস্থা আদৌ নেওয়া হবে কিনা তা নিয়েই সন্দিহান চা শ্রমিকরা।

Comments :0

Login to leave a comment