প্রবীর দাস- সন্দেশখালি
ঠিক ২৩ দিনের মাথায় ফের অভিযান ইডির। একেবারে কোমর বেঁধে অনেক বেশি সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে শেখ শাহজাহানের বাড়ি ঘিরে ফেললো বুধবার সাত সকালেই। সাথে চাবি খোলার চাবিওয়ালা। পুলিশ বাধা দেয় তল্লাশিতে। সার্চ ওয়ারেন্ট দেখতে চায় ইডি আধিকারীকদের কাছে। সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে সামান্য তর্ক বিতর্কের পর অবশেষে তল্লাশিতে যাওয়ার বাধা অতিক্রম করে ঠিক হয় দুজন ব্যক্তির উপস্থিতিতে তল্লাশি হবে।
গতকাল সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপারকে ফোন করে ইডি জানিয়ে দেয় এদিনের তল্লাশি কথা। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর। এদিন ইডি যায় সকাল ৭টা নাগাদ। সাক্ষীদের সার্চ ওয়ারেন্টে সই করিয়ে নিয়ে ৭টা ৩৯মিনিটে মূল প্রবেশদ্বারের তালা ভাঙা শুরু হয়। দুটি তালা ভেঙে পুলিশের দুজন সাধারণ সাক্ষী দুজন, ভিডিও ফটোগ্রাফার ইডি আধিকারীক সহ মোট ১৩ জন বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে কোন ভিডিও গ্রাফারকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় নি ইডির পক্ষ থেকে।
বর্তমানে দোতলার ঘর গুলিতে তল্লাশি চলছে। অধিকাংশ আলমারির চাবি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ডুপ্লিকেট চাবি তৈরির কাজ চলছে বলে সূত্রের খবর।
গত ৫ জুন রেশন দুর্নীতি কান্ডে সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে এই সাতসকালেই যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি আধিকারীকরা। শাহজাহানের কোবরা বাহিনীর হাতে আক্রান্ত রক্তাক্ত হয় ইডি আধিকারীক ও সংবাদমাধ্যম। শেখ শাহজাহান সহ বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারি নিয়ে নাটকের যবনিকাপাত শেষ হতে না হতেই ফের এদিন হানা ইডির। মামলা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। শেষে কলকাতা উচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজ্য পুলিশ ও সিবিআইকে নিয়ে সিট গঠনের নির্দেশ দেয় আদালত। তাতেও তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ইডি। ফের তারা আদালতের দ্বারস্থ হয়। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ মামলা গ্রহনের অনুমতি দেয়। আজ আদালতে মামলার শুনানি রয়েছে।
তারই মধ্যে এদিন ফের ইডির অভিযান তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
শেষে পাওয়া খবরে জানা গেছে তিনটি তালা ভেঙে বাড়ির ভিতরে ঢোকে ইডি আধিকারিকরা। ৫জুন এই তালা ভাঙার সময় ইডি আধিকারীকদের মাথা ফাটিয়ে দেয় শাহজাহানের কোবরা বাহিনী।
ইডি সূত্রে খবর জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের চিঠিতে শাজাহানের নাম ছিল। তার জন্যই তল্লাশিতে আসে ইডি। আজ ফের তল্লাশি শুরু হয়েছে। ভিতরে রাজ্য পুলিশের ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। জানা গিয়েছে, মোট ১৩ জন আছেন শাহজাহানের বাড়ির ভিতরে। ৬ জন আধিকারিক, ২ জন স্থানীয় সাক্ষী, ৩ জন ইডির সাক্ষী, ১ জন তালা ভাঙার লোক, ১ জন ইডি ভিডিয়োগ্রাফার। যদিও শাহজাহান এখনও বেপাত্তা।
ভাঙা হয় শেখ শাহজাহানের বাড়ির তালা। শাহজাহানের বাড়ির ভিতরে ঢুকল ইডি। প্রথমে ঢুকলেন ভিডিয়োগ্রাফার। যিনি গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো করছেন। তারপরে প্রবেশ তৃণমূল নেতার বাড়ি প্রবেশ করলেন ইডি আধিকারিকরা।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ শুরু হয়েছে সরবেড়িয়া ধামাখালি রোডে। টহলে কিন্তু রাজ্য পুলিশও আছে। অর্থাৎ রুটমার্চে সমান্তরালভাবে সি আর পি এফ ও পুলিশ। আকুঞ্জিপাড়া শেখ শাহজাহানের বাড়ি। দ্বিতীয়বার তল্লাশি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এতদিন পর আদৌও কী কোন তথ্যের সন্ধান পাবে ইডি? যদিও কিছু ফাইল পাওয়া গিয়েছে। ল্যাপটপে তা সিজার লিস্টে অন্তর্ভূক্তি করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশের বিশাল বাহিনী ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ১২৫জন জওয়ান ঘটনাস্থলে রয়েছে। তালা ভেঙে শেখ শাহজাহানের বাড়ির একতলা ও দোতলা সহ গোটা বাড়িতে তল্লাশি চলছে জোরকদমে। এক ঘন্টা পঁয়ত্রিশ মিনিট হলো তল্লাশি চলছে। এখনও পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কোন নথি পাওয়া যায় নি। এখন দেখার শেখ শাহজাহানের খোঁজে ইডির কোন তৎপরতা শুরু হয় কিনা।
Comments :0