World TB day

যক্ষ্মা রোধের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ভারত পিছিয়েই

জাতীয়

বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হয় ২৪ মার্চ। যক্ষ্মা আক্রান্তের নিরিখে ভারত বিপজ্জনক জায়গাতেই রয়েছে।
২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যক্ষ্মা নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল। ২০৩০’র মধ্যে ভারতের মতো যক্ষ্মাপ্রবণ দেশগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা নামিয়ে আনতে হবে ৮০ শতাংশের নিচে।


কিন্তু পরিসংখ্যান যা বলছে তা বাস্তবতা থেকে বহু যোজন দূরে। তার মূল কারণ সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়া। বিজ্ঞান পত্রিকা ‘ল্যান্সেট’-র একটি রিপোর্ট অনুযায়ী কোভিড পরিস্থিতিতে আরও বৃদ্ধি পেয়েছে যক্ষ্মা। কারণ সঠিক ভাবে রোগ নির্ণয় না হওয়া এবং চিকিৎসা না হওয়া। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ীই ২০১৯’’এ যক্ষ্মা আক্রান্তদের কমলেও ২০২১’এ তা অনেকটাই বেড়ে যায়। প্রায় ২১.৪ লক্ষ মানুষ নতুন করে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। ২০২০’র তুলনায় ২০২১’এ প্রায় ১৮ শতাংশ বেড়ে যায় যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা।


শুধু যে যক্ষ্মা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে তাই নয়, মাত্রাতিরিক্ত ভাবে বেড়েছে ‘ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট’ যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যাও। ‘ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট’ অর্থাৎ যক্ষ্মা চিকিৎসায় ওষুধ কাজ করছে না। এই ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট (DR-TB) যক্ষা রোগীদের নিয়ে সম্প্রতি মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়ার্স (MSF) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন। তাদের দাবি এই ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট যক্ষ্মা রোগীদের খুব দ্রুত চিহ্নিত করে নতুন পদ্ধতিতে চিকিৎসা শুরু করা দরকার। সাধারণ যক্ষ্মা রোগীদের থেকে ‘ড্রাগ রেসিস্ট্যান্ট’ যক্ষ্মা রোগীদের চিকিৎসার ধরণ আলাদা। সেক্ষেত্রে তাঁদের দ্রুত এবং স্বল্প মেয়াদী চিকিৎসা দরকার। সেই সঙ্গে দরকার পুষ্টিকর খাবার।


খাদ্যের প্রসঙ্গে আসলেই ওঠে আরেকটি প্রশ্ন। বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ভারতের স্থান ১০৭ নম্বরে। ১২১ টি দেশের মধ্যে তলানির দিকেই স্থান রয়েছে দেশের। যক্ষ্মা আক্রান্তেরা মূলত দরিদ্র, নিম্নবিত্ত পরিবারের। পুষ্টির অভাবে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে খুব সহজেই যক্ষ্মা দানা বাঁধে শরীরে।


কেন্দ্রের সরকারে বিজেপি আসীন হওয়ার পর থেকে ক্ষুধা সূচকে ক্রমাগত নিচের দিকেই নেমেছে ভারত। বেকারত্বের হারও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় রেকর্ড হারে বেড়েছে। যে দেশের মানুষ সঠিকভাবে দু’বেলা খেতেই পান না, খুব স্বাভাবিক সে দেশে যক্ষার মতো রোগ আরও বাড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যক্ষ্মার সঙ্গে লড়তে গেলে দরকার পুষ্টিকর ভালো খাবার। বহু পরিবারে সঠিকভাবে আহারই জোটে না, সেখানে সুষম আহার স্বপ্নাতীত!

Comments :0

Login to leave a comment