Tea Garden Closed

ফের বন্ধ হয়ে গেল কালচিনি বিচ চা বাগান

রাজ্য জেলা

আসন্ন লোকসভা নির্বাচন। ঠিক তার আগে ফের বন্ধ হয়ে গেল আলিপুরদুয়ারের কালচিনির বিচ চা বাগান। শুক্রবার বাগানে প্রি লকআউট নোটিস ঝোলানো হয়েছে। যদিও আলিপুরদুয়ারের ডেপুটি লেবার কমিশনার সুত্রে জানা যায় অচলাবস্থা কাটাতে আগামীকাল রবিবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। জেলার প্রশাসনিক ভবন ডুয়ার্সকন্যায় বৈঠকটি হবে। অসহায় পরিস্থিতিতে পড়ল ২২০০ শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা।
টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (টাই) অধীন টাইয়ের উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান চিন্ময় ধর বলেন, ‘‘নিরাপত্তাজনিত অভাব বোধের কারণে বাধ্য হয়ে বাগানে প্রি লকআউট নোটিস ঝোলানো হয়েছে। এই নিয়ে কালচিনির দুটি বাগান বন্ধ আর একটি বাগান বন্ধের মুখে। কালচিনি ব্লকের দলসিংপাড়া বাগানে শ্রমিক সংখ্যা ৯৪৩। বাগানটি বন্ধ হয়েছে ১৫ অক্টোবর। কালচিনি চা বাগানে শ্রমিক ১২০০। বন্ধ হয়েছে ১ নভেম্বর। 
এর আগেও ডুয়ার্সের কালচিনি চা বাগান বন্ধের জন্য আলিপুরদুয়ার সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলাকে দায়ী করে শ্রমিক থেকে শুরু করে শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্ব। বাগান বন্ধের জেরে রোজগার হীন হয়ে পড়েছিলো ১২০০ শ্রমিক। কালচিনি চা বাগানের সামনে জমায়েত হয়ে তারা অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলো। এরপর সাংসদ জন বারলা নতুন মালিককে বাগানে নিয়ে আশার আস্বাস দিলেও সেটা পুরণ করেনি। আবারো বিচ চা বাগান বন্ধ হলো। শ্রমিকরা আগামীকালের দিকে তাকিয়ে সমস্যা মিটবে কিনা।
অভিযোগ, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিচ বাগানের কয়েকটি চন্দন গাছ চুরি হয়। চুরির ঘটনায় এক শ্রমিকের ছেলেকে বাগান ম্যানেজারের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ উঠে। গত বুধবার ম্যানেজারকে ঘেরাও করে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে শ্রমিকদের একাংশের বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে বৃহস্পতি ও শুক্রবার বাগানের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হয়। নিরাপত্তার অভাব বোধের বিষয়টি নিয়ে বাগান কর্তৃপক্ষ পুলিশকেও চিঠি দিয়েছে। এই অচলাবস্থার জেরে শনিবারও বাগানের অবস্থা ছিল থমথমে। ম্যানেজমেন্ট বাগান ছেড়ে চলে যাওয়ায় শ্রমিকরা অসহায়তা বোধ করছেন। 
সিআইটিইউ আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক বিকাশ মাহালী চা বাগানের প্রি-লক-আউট ঘোষণা করার জন্য মালিক পক্ষ কে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দীর্ঘদিন থেকে বাগান মালিক কমলেশ ঝা একাই সিন্ধান্ত নিয়ে কাজ করতেন। এতে চা শ্রমিকদের মালিকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ ছিলো। বাগানে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে তার জন্য বিভিন্ন ইউনিয়ন গুলোর সাথে কথা বলে কোনো সমস্যা থাকলে মিটিয়ে নিতে হয়। সমস্যা না মিটলে শ্রম দপ্তর কে জানাতে পারে। কিন্তু বাগান বন্ধ করে দেওয়া উচিত নয়। আমরা এর বিরোধিতা করছি। তবে শ্রমিকদের কথা ভেবে বাগানের প্রি- লক-আউট  নোটিশ প্রত্যাহার করা দরকার’’।
চা শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এদিন বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বারবার ভোটের আশায় নানান প্রতিশ্রুতি দেন চা শ্রমিকদের দরদ দেখিয়ে, বাস্তবে সেসব মেলে না। রাজ্য সরকার আজ পর্যন্ত একটা বাগান দেখাতে পারবে, যেটা অধিগ্রহণ করে সঠিকভাবে বাগান পরিচালনা করে শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগী হয়েছে। আসলে বন্ধ বাগান জমি কারবারিদের হাতে তুলে দিতে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Comments :0

Login to leave a comment