দীপশুভ্র সান্যাল
বন্যার পর প্রায় দু’সপ্তাহ কেটে গেলেও জলপাইগুড়ির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা টুন্ডু, বামনডাঙ্গায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের স্থায়ী ব্যবস্থা হয়নি। সরকারি ত্রাণ বিতরণেও দলবাজির অভিযোগ করছেন বিপর্যস্ত মানুষ।
বিপর্যয়ের প্রথম দিন থেকে পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের স্বার্থে কাজ করে চলেছে এলাকার সমস্ত সিপিআই(এম) কর্মী নেতৃবৃন্দ। বিভিন্ন গণসংগঠনের উদ্যোগে চলছে বিপর্যস্ত মানুষের মধ্যে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহের কাজ। জেলাশাসক থেকে বিডিও দপ্তরে প্রয়োজন জানিয়েছে আগেই। এবার পানীয় জলের স্থায়ী সমাধানের লক্ষে টুন্ডু এলাকায় গভীর নলকূপ বসানোর উদ্যোগ নিল সিপিআই(এম)। একাজে সহায়তা করছে বিভিন্ন বামপন্থী গণসংগঠন।
গত শনিবার সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের রাজ্য সম্পাদক নিরাপদ সরদার ছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। ময়নাগুড়ির আমগুড়িতে নিরাপদ সরদারকে কাছে পেয়ে গ্রামের মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। অভিযোগ করেন সরকার সামান্য চাল, ডাল দিয়ে কাজ সারতে চাইছে। যে সমস্ত ত্রাণ আসছে সেগুলি মাঝ পথে তৃণমূলের কর্মীরা সরিয়ে দিচ্ছে। যাঁদের প্রকৃত প্রয়োজন তাঁরা ত্রাণ পাচ্ছেন না।
সিপিআই(এম) কর্মীরা গত ৭ দিন ধরে চলছে ' আমাদের রান্নাঘর'। নিরাপদ সরদার সহ নেতৃত্ববৃন্দ নাগরাকাটার টুন্ডু ও বামনডাঙ্গায় পৌঁছান। শনিবার নিরাপদ সরদারের সঙ্গে ছিলেন সারা ভারত খেতমজুর ইউনিয়নের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক কৌশিক ভট্টাচার্য, শ্রমিক নেতা রামলাল মুর্মু, সিকান্দার মাঝি, ইন্দ্রনীল বসু, কৃষ্ণা ওঁরাও, নবিউল ইসয়াম সহ অনেকে।
টন্ডুতে পরিস্থিতি উন্নত হয়নি। খাওয়ার জলের অভাব প্রতিদিন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। টুন্ডু থেকে বামনডাঙায় যান নেতৃবৃন্দ। বামনডাঙায় সিপিআই(এম) চালাচ্ছে 'হামারি রসোই'। বামনডাঙায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে। নিরাপদ সরদার সহ নেতৃবৃন্দ মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন।
টুন্ডু এলাকায় পানীয় জলের নলকূপ বসানোর পর সিপিআই(এম) জেলা সম্পাদক পীযূষ মিশ্র বলেন, ‘‘জেলাশাসক থেকে বিডিও সকলকে বন্যার্ত মানুষের স্বার্থে কি কি করা উচিত তা জানিয়ে কাজ হয়নি। আমরাই টুন্ডু এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জলের নলকূপ বসানো হয়েছে। আমরা চাই সরকার নিরপেক্ষভাবে সকল বন্যা পীড়িত মানুষের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক। অবিলম্বে সমস্ত এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং গৃহহীন মানুষের জন্য গৃহ নির্মাণের ব্যবস্থা করুক।
শনিবার জলপাইগুড়ি নাগরিক সংসদের উদ্যোগে পঞ্চম অভয়া ক্লিনিক ও চতুর্থ ত্রাণ শিবিরে ২২ স্বেচ্ছাসেবক ও ৫ চিকিৎসক চিকিৎসা পরিষেবা ও ত্রাণ বিতরণ করা হয় ময়নাগুড়ির রামসাই ও ধুপগুডির কুল্লাপাড়া ও হেগলাপাতা অঞ্চলে বলে জানান জলপাইগুড়ির নাগরিক সংসদের সভাপতি ডাঃ পান্থ দাশগুপ্ত।
Comments :0