MD SALIM SANDESHKHALI

৫৬-৩৫৬ নয়, জনতার জোটই রুখবে লুটের রাজত্ব: সেলিম

রাজ্য

ছবি সংগ্রহ থেকে।

‘‘কোনও ৫৬ ইঞ্চি নয়, কোনও ৩৫৬ নয়, বাংলার মানুষ জাত-পাত-ভাষা-ধর্ম নির্বিশষে এককাট্টা হয়ে এই লুটের রাজত্ব শেষ করবে। দিল্লিতে মোদীর লুট আর রাজ্যে দিদির লুট, এই বন্দোবস্ত চলবে না।’’ 
শনিবার মেদিনীপুর শহরে সিপিআই(এম) জেলা দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। 
এদিনই পুলিশের নজর এড়িয়ে সন্দেশখালিতে ঢুকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি, সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা সহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ছিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য পলাশ দাশও। জনতা জানিয়েছেন আসল লড়াই লুটের বিরুদ্ধে। জমি, ভাত, সম্ভ্রমরক্ষার। তৃণমূলের নেতা শেখ শাহজাহান এবং শিবু হাজরা, উত্তম সর্দাররা লুটে নিয়েছে জমি।
সন্দেশখালি প্রসঙ্গেই সেলিম বলেছেন, ‘‘ডিএম, এসপি আইসি-রা তৃণমূলের তাঁবেদার হবে আর লুট চলবে। ৭৫ শতাংশ কালীঘাটে পৌঁছে দিতে হবে আর ২৫ শতাংশ স্থানীয়রা রাখবে। যখন আদালত ইডি, সিবিআই’কে ধরতে বলছেতখন কেন ভাইপোকে ধরছে না? কেন মমতাকে ধরছে না?’’
বিজেপি’র ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন সেলিম। সংবাদমাধ্যমে বিজেপি’র পক্ষে প্রচারের পালটা তথ্যও হাজির করেন। সন্দেশখালির মানুষ লুটেরাদের গ্রেপতারি, শাস্তি চাইছে। কেন্দ্রীয় টিম এসে ৩৫৬ ধারা জারির কথা বলছে। একই সুর বিজেপি নেতাদের মুখে। 
তিনি বলেন, ‘‘তিন মহিলাকে হাইকোর্টে এনে মামলা দায়ের করে বামপন্থীরা। বামপন্থী আইনজীবীরাই সওয়াল করেন। তার ভিত্তিতে ১৪৪ ধারা তোলা হয়েছিল। সংবাদমাধ্যম ‘শুভেন্দু’, ‘শুভেন্দু’ করছে। বামপন্থী আইনজীবীরা আদালতে যান। বলেন যে সব অভিযোগ নিতে হবে। ইন্টারনেট চালু করতে হবে, ১৪৪ ধারা রাখা যাবে না এবং বিরোধী দলের নেতা ও কর্মীদের ঢুকতে দিতে হবে। তার ভিত্তিতে আদালত রায় দেয়।’’
তিনি মনে করিয়ে দেন কাশ্মীর এবং মণিপুরে একই কাজ করেছে বিজেপি। হাথরসেও তাই করেছিল। সেলিম বলেন, ‘‘অপরাধকে আড়াল করার জন্য, অপরাধীকে আড়াল করার জন্য, দু’জনের কায়দা এক।’’ 
সেলিম জানিয়েছেন যে সন্দেশখালির ২৩ মহিলা সই করেছেন অভিযোগপত্রে। শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের নামে অভিযোগ করেছেন। সেগুলো হাইকোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে।
সেলিম বলেন, ‘‘আমরা চাই বিচার হোক। এসব হওয়ার পর পুলিশের ডিজি গিয়েছেন। আগে যাননি।’’ ঘটনাক্রম তুলে তিনি বলেছেন, ‘‘বিজেপি-তৃণমূল, তৃণমূল-বিজেপি করে ধর্মের নামে ভাগাভাগি হতে পারে কিন্তু অপরাধ দমন হতে পারে না।’’ 
সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য নিরাপদ সর্দারের গ্রেপ্তারির মধ্যেও তৃণমূল এবং বিজেপি’র যোগসাজশ থাকার অভিযোগ তুলেছেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘‘৭ জানুয়ারি আমরা ইনসাফ ব্রিগেড করেছি। সেদিন মহিলারা ঝাঁটা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন সন্দেশখালিতে। ওরা খেতমজুর নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক নিরাপদ সর্দারকে ধরল। তিনি কিন্তু ওখানে ছিলেন না। কেন ধরল ফেব্রুয়ারিতে মিথ্যা মামলা করে?’’ 
তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘দু’মাস আগে যে বিজেপি এত গালাগাল দিচ্ছিল তারা এখন অভিষেককে নিয়ে কিছু বলছে না। এখন শাহজাহানকে নিয়ে পড়েছে। কিন্তু শাহজাহান কেন শাহজাহান হলো? যদি শুভেন্দু না থাকত, মুকুল রায় না থাকত, মমতা না থাকত, অভিষেক না থাকত, তা’হলে হতো?’’ 
বিজেপি’র ভূমিকা প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘খুব কৌশল করে ‘কাকু’, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, কয়লা পাচার দুর্নীতি এসব কিনারায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এজন্যই লড়াইকে আরও শক্তিশালী করার জন্য মানুষকে বলছি ঐক্যবদ্ধ হোন। একসঙ্গে থাকুন। ভাগ হয়ে গেলে লুটের রাজত্ব চালিয়ে যাবে। ৭৫ ভাগ যদি কালীঘাটে যায় তা’হলে তার থেকে দিল্লির সরকার, মোদীর সরকার, অমিত শাহের সরকার কত ভাগ নিচ্ছে যাতে এই বন্দোবস্ত চলতে পারছে?

Comments :0

Login to leave a comment