Money Recoverd

জলপাইগুড়িতে বিজেপি নেতার গাড়ি থেকে উদ্ধার বিপুল টাকা

রাজ্য

দীপশুভ্র সান্যাল- জলপাইগুড়ি

লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপির দুই নেতার কাছ থেকে নগদ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য জলপাইগুড়িতে। আর কয়েকদিন পর ১৯ এপ্রিল ভোট গ্রহণ হবে জলপাইগুড়িতে। ঠিক তার কয়েকদিন আগে অর্থাৎ শনিবার রাতে টাকা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে মাল বাজার শহরে। ঘটনাটি ঘটেছে মাল মহকুমার অন্তর্গত ক্রান্তি ব্লকের মসজিদ মোড় এলাকায়। লক্ষ লক্ষ টাকা সহ আটক হলেন বিজেপির মাল বিধানসভা কেন্দ্রের আয়বাহক রাকেশ নন্দী। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালেও টাকা উদ্ধারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে বিজেপি নেতৃত্ব।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে পাওয়া খবরের বিবরণে জানা গেছে, শনিবার রাতে ক্রান্তি থানার ওসি বুদ্ধদেব ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দলের নাকা তল্লাশি চলছিল। সেই সময় রাকেশ নন্দী দলীয় কাজ সেরে গাড়ি চালিয়ে মালবাজার শহরে ফিরছিলেন। তাঁর গাড়িতে তল্লশি চালালে লক্ষাধিক টাকা উদ্ধার হয়। এরপর ক্রান্তি থানার পুলিশ সেই টাকা বাজেয়াপ্ত করে থানায় নিয়ে যায় রাকেশ নন্দীকে। 
ক্রান্তি আউটপোস্ট থানার পুলিশ জানিয়েছে রাকেশ নন্দীর গাড়ির ডিকি থেকে মোট সাত লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ওই টাকার কোনও নথি দেখাতে পারেনি বিজেপি নেতা। জেরায় তিনি বলেছেন, ওই টাকা তিনি বিজেপি মহিলা মোর্চার জেলা সভাপতি দীপা বনিকের নির্দেশে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই তথ্য পেয়ে পুলিশ বিজেপি মহিলা মোর্চার জেলা সভাপতি দীপা বণিককের গাড়ি তল্লাশি করে। তাঁর গাড়ি থেকেও উদ্ধার হয় আরো ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। যদিও রাতেই পুলিশ রাকেশ নন্দী ও তাঁর গাড়িটি ছেড়ে দেন টাকাগুলি বাজেয়াপ্ত করে।  
টাকা উদ্ধারের ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিআই(এম) নেতা রাজা দত্ত বলেন, ‘‘নির্বাচনী বন্ডের লুটের টাকা ছড়িয়ে ভোটে জেতার রণকৌশল ঠিক করেছে বিজেপি’’। তিনি এই ঘটনার বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে বলেছেন, ‘‘টাকা দিয়ে মানুষের ভোট কেনার চেষ্টা করছে বিজেপি। আসলে বিজেপি ভোটে হারবে সেটা বুঝেই শেষ চেষ্টা করছে’’।
মালটাউনের তৃণমূল সভাপতি অমিত দে বলেছেন, বিজেপি নেতার গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে বিজেপি টাকা ছড়িয়ে ভোটে জিততে চাইছে। 
স্থানীয় বিজেপি নেতা নবীন সাহা টাকা উদ্ধারের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, সাংবাদিকের মাধ্যমে এই খবরটি জেনেছি। বিষয়টি আমার কাছে স্পষ্ট নয়। 
জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে সিপিআই(এম) প্রার্থী দেবরাজ বর্মন বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি যেমন সরকারি ক্ষমতা অপব্যবহার করে জলপাইগুড়ি লোকসভা আসন জেতার চেষ্টা করছে নির্বাচন কমিশনের নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে। ঠিক তেমনি বিজেপি দল কর্পোরেটদের থেকে পাওয়া ‘‘নির্বাচনী বন্ডের লুটের টাকা ছড়িয়ে ভোটে জিততে চাইছে, তৃণমূল ও ইলেক্টোরাল বন্ডের টাকায় একই খেলা খেলছে। তৃণমূল ও বিজেপি ভোটে হারার ভয়ে শেষ মুহূর্তে টাকা ছড়িয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করতে চাইছে। আমরা সমস্ত গণতন্ত্র প্রিয় মানুষের কাছে আবেদন করছি টাকার কাছে বিক্রি হবেন না। ওরা একবার টাকা দিয়ে পাঁচ বছর আর দেখা করবে না। ওদের কাজ করার কোন দায় থাকবে না আর আপনিও কিছু বলতে পারবেন না কারণ আপনি তো ভোট দেওয়ার জন্য ওদের থেকে টাকা নিয়েছেন। তাই টাকা নয় কাজ দেখে ভোট দিন। আমরা এ কথা বলতে পারি জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে ভোটে জিতে আমরা দিল্লিতে গিয়ে তৃণমূল বিজেপির মতো কর্পোরেটের কথা বলব না। ডুয়ার্সের চা বাগান জলপাইগুড়ির সাতটা বিধানসভার মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরে দিল্লি থেকে জলপাইগুড়ি মানুষের দাবি আদায় করে আনব।

Comments :0

Login to leave a comment