PARLIAMENT RAM MANDIR

খাদ্য-কাজের আইন নেই, সংসদেও এবার রামমন্দির

জাতীয়

ইউপিএ সরকারের মেয়াদে খাদ্যের অধিকারে আইন হয়েছিল। আইন হয়েছিল বছরে একশো দিন কাজের। আইন হয়েছিল তথ্য জানার অধিকারের, শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করতেও এসেছে আইন। 
এমন আইন আপনাদের সময়ে কোথায়?
শনিবার, যেদিন রামমন্দির আলোচনা ঢুকে পড়ল একেবারে সংসদের মধ্যে, সেদিনই এমন প্রশ্নের মুখে পড়ল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এদিনই শেষ হয়েছে সংসদের বাজেট অধিবেশন। ভাষণ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। লোকসভা ভোটের ঠিক মুখে বিদায়ী ভাষণ দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও। 
প্রশ্ন উঠেছে ‘মোদী কা গ্যারান্টি’ প্রচারেও। রাজ্যসভায় সরকারের ‘শ্বেতপত্র’ নিয়ে স্বল্প মেয়াদী আলোচনায় এমন একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস সাংসদ কেসি বেণুগোপালের মতো বিরোধীরা। 
সংসদে রামমন্দির নিয়ে আলোচনায় অংশ নেয়নি সিপিআই(এম)। সরাসরি অবস্থান জানিয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ জন ব্রিটাস। শ্বেতপত্রের বিরোধিতা করে কক্ষ ছাড়েন বিরোধী বেশিরভাগ দলের সাংসদরা। শ্বেতপত্র নিয়ে আলোচনার পরপরই রামমন্দির নির্মাণের প্রশংসাসূচক প্রস্তাব পেশ হয় দুই কক্ষে। 
ব্রিটাস বলেন, ‘‘রাজনীতির সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হচ্ছে। সিপিআই(এম) এই প্রক্রিয়ার অংশ হবে না।’’ 
রামমন্দির উদ্বোধনেই স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল যে পুরোটাই রাজনৈতিক কর্মসূচি, কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়। প্রধানমন্ত্রীই পুরোহিতের ভূমিকা নিয়ে রেখেছিলেন। সেখানেই শেষ নয়, সংসদে বিজেপি’র একাধিক সাংসদ রামমন্দির নির্মাণের কৃতিত্ব দিলেন সরকারকে। যে সরকার সংবিধান মেনে চলতে বাধ্য, যে সংবিধানের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার স্বীকৃতি। 
বিজেপি’র মনোভাব স্পষ্ট হয়েছে লোকসভায় দলের অন্যতম সাংসদ নিশিকান্ত দুবের মন্তব্যে। ২২ জানুয়ারি রামমন্দির উদ্বোধনে অংশ না নেওয়ায় সমালোচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর। সেই সঙ্গে মন্তব্য, ‘‘আমরা হিন্দুরা যেমন মক্কায় যেতে পারি না, তেমনই অ-হিন্দুদের রামমন্দিরে প্রবেশের অধিকার নেই!’’ 
সেই সুরেই ভাষণ মোদীরও। প্রধানমন্ত্রীর নিজেই নিজের তারিফ করেছেন তিন তালাক রোধ আইনের জন্য। বাস্তবে, আইন পাশের আগেই সুপ্রিম কোর্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করে দিয়েছিল। 
এ সবই চলেছে সংসদে। তবে তার আগেই উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন ব্রিটাস থেকে বেণুগোপালরা। বিরোধীরা বলেছেন, ফের গ্যারান্টি দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। বলছেন, ‘মোদী কি গ্যারান্টি’। আগের গুলির কী হলো? বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরি, একশো দিনের মধ্যে বিদেশ থেকে কালো টাকা ফিরিয়ে আনা, প্রত্যেক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ করে টাকা?

ব্রিটাস মনে করিয়েছে প্রথম ইউপিএ সরকারে বামপন্থীদের সমর্থনের প্রসঙ্গ। তিনি বলেছেন, ‘‘অতীতে অর্থমন্ত্রী সীতারামনই তো বলেছিলেন ২০০৪-০৯ সুসময় এসেছিল অর্থনীতিতে। এখন তিনিই শ্বেতপত্র প্রকাশ করে সেই সময়ের নিন্দা করছেন?’’ ব্রিটাস কেরালার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনারও কড়া সমালোচনা করেন। 

Comments :0

Login to leave a comment