‘‘বাংলার মাটিতে বিভাজনের আগুন নিয়ে খেলার জন্য মমতা ব্যানার্জিকে তৈরি করেছিল আরএসএস। তাঁকে দুর্গা সাজিয়েছিল। যখন ইন্ডিয়া ব্লক তৈরি হয়েছে বিজেপি’র হাওয়া পাতলা হচ্ছে। আগের ভোটে বিজেপি’র ভয় দেখিয়ে ভোট নিয়েছিলেন। যত বিজেপি’র হাওয়া পাতলা হচ্ছে। তত মমতা আর অভিষেকের হাওয়াও পাতলা হয়ে যাচ্ছে।’’
সোজা ভাষায় স্পষ্ট কথা বলছেন প্রার্থী। কেবল জনসভাই নয়, বলছেন পাড়ার মোড়ে, চা দোকানের সামনে। হয়ে যাচ্ছে জমায়েত। হাতে মাইক ধরে বিভাজনের রাজনীতিকে, দুর্নীতির রাজনীতিকে হারানোর ডাক দিচ্ছেন মহম্মদ সেলিম।
সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক প্রার্থী মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে। পরপর জনসভায় উপচে পড়েছে ভিড়। কিন্তু কেবল জনসভাই নয়। সেলিম যাচ্ছেন সরাসরি মহল্লায়। কখনও চায়ের দোকানে ঢুকে পড়ছেন। আবার কখনও পৌঁছে যাচ্ছেন মাটির দাওয়ায়। রাস্তার অবস্থা খারাপ। গাড়ি ঢুকবে না। কংগ্রেস সমর্থিত বামফ্রন্ট প্রার্থীকে দেখা যাচ্ছে দু’চাকায় সওয়ার হতে। কথা বলছেন মহিলাদের সঙ্গে। কেউ ঘরে ঢুকে থাকছেন। চলছে মতবিনিময়।
মুর্শিদাবাদে ভোট ৭ মে, রাজ্য এবং দেশের তৃতীয় দফায়। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী পাশের কেন্দ্রে সভা করেছেন। ‘সতর্ক’ করেছেন দলের নেতাদের। যাঁরা অনেকেই আসলে বিড়িশিল্পের মালিক।
গ্রামের সভায় হাতে মাইক নিয়ে সেলিম বলেছেন, ‘‘মমতা আসলে উসকানি দিচ্ছেন। সিপিআি(এম)’র নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা হয়েছে। গ্রামের মহিলারাই রুখেছেন। আর পুলিশ দলদাস হয়ে থাকার কাজে চূড়ান্ত মনোযোগী হয়েছে। তবে ভোট লুট করা যাবে না। জনতা ভোট দেবেনই।’’
সেলিম বলেছেন, ‘‘বিজেপি আছে বলে তৃণমূল আছে, আর তৃণমূল আছে বলে বিজেপি আছে। আপনারা অনেকে নির্মাণ শ্রমিক। রাজ্যে রাজ্যে কাজ করেন। আপনারা জানেন বাড়ি তৈরির সময় বাইরে থেকে চট দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। যাতে ধুলো ময়লা না যায়। তৃণমূল নেত্রীও ওরকম পর্দা লাগিয়েছেন। তৃণমূলের পর্দা লাগিয়ে ভেতরে ভেতরে আরএসএস’র বাড়ি নির্মাণ করেছেন।’’
মুর্শিদাবাদে প্রচার করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। শামিল থাকছেন কংগ্রেস কর্মীরা। বামফ্রন্ট বা কংগ্রেস, কর্মী এবং নেতাদের এখন প্রধান কথা, ‘ভোট লুট হতে দেব না। জনতা বলছে ভোটটা যেন দিতে পারি। ভোট তাঁরা দিতে পারবেনই।’
সেলিমের প্রচারে বিভিন্ন অংশ জুড়ে সোশাল মিডিয়ায় ভিডিও প্রকাশ করেছে সিপিআই(এম)। মহল্লা সভা থেকে জনসভায় বলা কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন সেলিম। বিভাজনের রাজনীতি চালিয়ে আসলে জনতার জীবিকাকে ধ্বংস করা হয়েছে দেশে এবং রাজ্যে। আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন নেভাতে একসঙ্গে লড়াইয়ে বাম এবং কংগ্রেস। মানুষ বিকল্প পাচ্ছেন, বিকল্প চাইছেন।
Comments :0