Shahjahan seikh

জেলা পরিষদের পদ হারালো ফেরার শাহজাহান

রাজ্য

বেড়মজুর-২গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হাজি সিদ্দিক মোল্লা বলছেন, শেখ শাহজাহান কোথাও পালিয়ে যান নি। আমার চোখের সামনে সে আছে। এক সপ্তাহের মধ্যে মানুষের সামনে আসবেন। বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলছেন এলাকাতেই আছেন। মানুষ বৃথা রটাচ্ছে তিনি বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন। তার আইনজীবী ইডির সাথে কথা বলছেন। হাইকোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি পালিয়ে যাওয়ার মানুষ নন। বিধায়ক, প্রধান জানেন অথচ পুলিশ জানে না শেখ শাহজাহান এখন কোথায়? বিধায়ক, প্রধানের দাবিকে সমর্থন করে বহু সাধারণ মানুষের জোরালো দাবি শাহজাহান এলাকাতেই আছে এবং এলাকাতেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। যদিও ভাই শেখ আলমগীর জানান দাদা কোথায় আছে জানি না। 
তিন দিন কেটে যাওয়ার পরেও রেশন দুর্নীতি কান্ডে অভিযুক্ত সন্দেশখালি-১ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি শেখ শাহজাহান ও ইডি আধিকারীক, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও সাংবাদিকদের উপর হামলায় নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত সরবেড়িয়া আগারহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান জিয়াউদ্দিন মোল্লা সহ বাকি অভিযুক্তরা আজও অধরা। পুলিশের এহেন ভূমিকায় ইতিমধ্যে নানা মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে কী পুলিশের সাহায্য নিয়ে শাহজাহান বহাল তবিয়তে আছে? তিনি বাড়িতেই গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন। এমন কথাও বলছেন কেউ কেউ।
অন্যদিকে উত্তর ২৪পরগনা জেলা পরিষদের মৎস ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ শেখ শাহজাহানকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে আপাতত দায়িত্ব নিজের হাতেই রাখলেন সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। এই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নারায়ণ বলেন শাহজাহান কোথায় আছেন জানা নেই। মানুষ তার পরিষেবা থেকে যাতে বঞ্চিত না হন তার জন্যই তিনি নিজেই দায়িত্ব সামলাবেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির আধিকারীক, কেন্দ্রীয় বাহিনী, সাংবাদিকদের উপর হামলার প্রসঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণভাবে তিনি বলেন আইন আইনের পথে চলবে। আইনের উর্দ্ধে কেউ নন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা হোক রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা হোক তাদের তদন্তে প্রত্যেককে সাহায্য করা উচিৎ। সেই সাথে তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী বিভিন্ন সংস্থার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতেও ছাড়েন নি। দলের ভাবমূর্তি ফেরাতে সভাধিপতির এহেন পদক্ষেপ কী শেখ শাহজাহানের ডানা ছাঁটা শুরুর প্রাথমিক পর্যায়? যদিও দলের একটি সূত্রের দাবি, ইডি যেহেতু শাহজাহানের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিস জারি করেছে, তাই আইনি কারণেই শাহজাহানকে জেলা পরিষদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল।
শাহজাহানের ছবি দিয়ে ইতিমধ্যে বিএসএফকে সতর্ক করেছে ইডি। শুধু তা নয়, গোয়েন্দা নেটওয়ার্কে শাহজাহানের খোঁজ শুরু হয়ে গিয়েছে। শাহজাহান পালিয়ে গেলেও তাঁর বাড়িতে ফের তল্লাশি অভিযান চালানোরও প্রস্তুতি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি।
সূত্রের খবর, শাহজাহানের খোঁজ লাগাতে তাঁর পরিবারের লোকজনকেও জেরা করা হতে পারে। তবে তার আগে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আধা সামরিক বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন ইডি কর্তারা। হতে পারে এরপর থেকে আরও বড় বাহিনী নিয়ে তল্লাশি চালানো হবে। অন্যদিকে দিল্লিতে ইডির সদর দপ্তরে শুক্রবারের ঘটনার রিপোর্ট পেশ করেছে ইডি। রিপোর্টে চআঞ্চল্যকর অভিযোগ জানানো হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে রেশন দুর্নীতির গুরুত্বপূর্ণ নথি ও কোটি কোটি টাকা শেখ শাহজাহানের বাড়িতেই রাখা ছিল।তাই আগাম নোটিস বা সতর্ক করে না করেই তল্লাশিতে যাওয়া হয়।সেই কারণেই পরিকল্পনা করেই হামলা চালানো হয়। সোমবার ইডি সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। অন্যদিকে বনগাঁয় রেশন দুর্নীতি কান্ডে আর এক অভিযুক্ত শঙ্কর আঢ্যের বাড়িতে তল্লাশিতে যাওয়ার আগে বনগাঁর এস পি ও লোকাল থানাকে জানিয়ে তল্লাশিতে যায় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারীকরা। তারপরও সেখানেও ইডির উপর হামলা চালানো হয়। পুলিশের ইন্ধনে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে এদিন প্রেস বিবৃতিতে জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি।
 

Comments :0

Login to leave a comment