SUPERSTITION KILLED CHILD

অসুস্থ শিশুকে ডোবানো হলো হরিদ্বারের গঙ্গায়, নিস্পন্দ শরীর

জাতীয়

হরিদ্বারের ঘাটে তখন চোবানো হচ্ছে শিশুকে।

অসুস্থ শিশুর রোগ সারাতে বাড়ির লোক ডুবিয়েছিলেন গঙ্গায়। হরিদ্বারে গঙ্গাস্নানের পরই নিথর হয়ে যায় পাঁচ বছরের সেই শিশু। হরিদ্বারের হর কি পৌরি ঘাটের সেই দৃশ্যের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। পুরো ঘটনায় স্তম্ভিত বহু অংশ। কুসংস্কারের জেরে মর্মান্তিক ঋই পরিণতি ঢাকতে সচেষ্ট বলে অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ডোবানের আগেই শিশুর মৃত্যু হয়েছিল বলে প্রচারে সক্রিয় পুলিশ।
শিশুটির চিকিৎসা চলছিল দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে। ধরা পড়ে রক্ত এবং হাড়ের ক্যান্সার। গঙ্গারাম হাসপাতালের চিকিৎসকরা মা ও বাবাকে জানান যে আর কিছু করার নেই। 
দিল্লি থেকে গাড়ি ভাড়া করে সোজা অসুস্থ শিশুকে কম্বলে মুড়ে বাড়ির লোক নিয়ে আসে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে। হর কী পৌরি ঘাটে ডোবানো হয় শিশুকে। 
দেশজুড়ে বিজ্ঞানমনস্কতা হটিয়ে অলৌকিকত্বের ওপর ভরসার নানাবিধ প্রচার চলছে। সাংবিধানিক পদে আসীন ব্যক্তিবর্গ নিজেরা পৌরানিক চরিত্রকে ঐতিহাসিক বলে দাবি করে চলেছেন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ ছাড়াই। বাতাবরণের প্রভাব পড়ছে সমাজে। তার আরেকটি নমুনা এই ঘটনা। 
উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের পুলিশ যদিও দাবি করছে যে বুধবার গঙ্গাস্নানের আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছিল। যে গাড়িতে পরিবার দিল্লি থেকে হরিদ্বার পৌঁছেছে তার চালকও বলেছেন যে সম্ভবত শিশুটির দেহে প্রাণ ছিল না। রাস্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। 
ঘটনার একটি ভিডিও’তে দেখা গিয়েছে ঘাটে দাঁড়ানো স্তানীয় এক মহিলা হাসিমুখে পরিবারকে বলছেন, ‘‘ইয়ে বাচ্চা খাড়া হো জায়েগা, ইয়ে মেরা বচন হ্যায়। মেরি গঙ্গা মাইয়া কা বচন হ্যায়।’’ যার অর্থ, মহিলার দাবি শিশুটিকে চোবানো হলেই দাঁড়িয়ে পড়বে। তিনি কথা দিচ্ছেন, গঙ্গা মা কথা দিচ্ছেন। 
আরেকটি ক্লিপে দেখা গিয়েছে এক মহিলা শিশুকে ডুবিয়ে রেখেছেন কনকনে ঠাণ্ডায় হরিদ্বারের গঙ্গার বরফগলা জলে। ঘাটে অন্য একজন শিশুটিকে টেনে তুলতে যাওয়ায় ওই মহিলা রেগে উঠছেন। 
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে শিশুটিকে প্রায় তিন থেকে চার মিনিট ডুবিয়ে রাখা হয়। ঘাটে দাঁড়ানো অন্য কয়েকজন পরিবারের অমতে জোর করে তাকে টেনে তোলে। পরে দেখা যায় শিশুটির দেহে আর প্রাণ নেই, নিস্পন্দ হয়ে গিয়েছে শরীর। 
হরিদ্বারের অতিরিক্ত এসপি স্বতন্ত্র সিং সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন তাঁদের কিছু করার নেই। শিশুটির পরিবার অলৌকিক ফল লাভের আশায় তাকে এনে গঙ্গায় ডোবায়। তবে মনে হচ্ছে শিশু মারা গিয়েছিল ডোবানোর আগেই।’’ 
আগেই মৃত্যু হয়েছিল না তিন-চার মিনিট ডুবিয়ে রাখার পর জানার জন্য পোস্টমর্টেম রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ। তবে স্পষ্ট যে অবিজ্ঞানের হাত ধরার এই প্রবণতা ঠেকানো না গেলে এমন ঘটনা আরও বাড়বে।

Comments :0

Login to leave a comment