TMC BJP

ইডি-সিবিআই তৃণমূলের কথাতেও চলে, অভিযোগ খোদ তৃণমূলেরই

রাজ্য

 ইডি-সিবিআই শুধু বিজেপি’র কথা শুনে চলে তা নয়। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বসে, আলোচনা করেই তল্লাশি অভিযান চালায়। এমন বিস্ফোরক দাবি খোদ তৃণমূলেরই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন এরাজ্যে, ঠিক সেই সময়েই এমন অভিযোগ সামনে এল। তৃণমূলের সঙ্গে বসেই কেন্দ্রীয় সংস্থা তল্লাশি অভিযান করে বা সমন পাঠায় এমন অভিযোগ সামনে এলেও আশ্চর্যজনকভাবে এবিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী থেকে সুকান্ত মজুমদাররা মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
তৃণমূলের বিধায়ক তাপস রায়ের দাবি গত জানুয়ারি মাসে তাঁর বাড়িতে যে ইডি’’র তল্লাশি অভিযান চলেছিল তা আসলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অঙ্গুলিহেলনেই। বিধানসভায় তৃণমূলের খোদ মুখ্যসচেতকের দাবি, তাঁর বাড়িতে ইডি পাঠিয়েছে তাঁরই দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের সামনে এদিন তাপস রায় বলেছেন, সুদীপ ব্যানার্জির সঙ্গে ইডির কিছু লোকজনের ব্যক্তিগতভাবে ভালো সম্পর্ক আছে। আমায় তৃণমূলের রাজ্যসভা, লোকসভার সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, নেতা মিলিয়ে অন্তত ৫০ জন বলেছেন, ওই ইডিকে পাঠিয়েছিল! আমার বাড়িতে কবে ইডি যাবে  তাও ওঁর বাড়িতে আলোচনা হয়েছিল’।  
লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতার বাড়িতে আলোচনা করে ইডি তৃণমূলের বিধানসভার মুখ্য সচেতকের বাড়িতে হানা দিচ্ছে, এ ভয়ানক অভিযোগ। এরকম অভিযোগের পরেও রাজ্য বিজেপি চুপ। তাহলে কি কেন্দ্রীয় এজেন্সি এখন তৃণমূলের শীর্ষ মহলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে, আলোচনা করে, পরামর্শ নিয়েই এরাজ্যে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, লোকসভা ভোটের আগে তাহলে কী তদন্তের গতি বাড়ানোর নামে আসলে পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক দ্বিমেরু তত্ত্ব তৈরি করার নকশা সাজানো হচ্ছে,
সিপিআই(এম) বারংবার অভিযোগ করেছে,  এরাজ্যে শাসক তৃণমূল কার্যত বিজেপি’’র প্রেসক্রিপশন মেনেই চলছে। সংবাদমাধ্যমের একাংশের সাহায্যে পরিককল্পিতভাবে একটা ভাষ্য তৈরি করা হচ্ছে জনমানসে। 
‘‘লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে একজন মোদী ভক্ত’। লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা বিজেপি’র লোক, মোদীর পা ধরে জেলের বাইরে আছেন। উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি’র দুজন প্রার্থী। একজন পদ্মফুলের প্রতীকে আর একজন জোড়া ফুলের প্রতীকে। তৃণমূলের মধ্যেই রয়েছে বিজেপি’র লোক। তৃণমূলের দলনেতা ‘বড় সাইজের শাহজাহান’।’’ তৃণমূলে থেকে মুখোশ পড়ে বিজেপি’র হয়ে কাজ করার এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে করেছেন অভিষেক ব্যানার্জির ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। 
শুধু তাই নয়  তৃণমূলের এই প্রাক্তন সাংসদ একধাপ এগিয়ে কয়লা পাচারের তদন্তেও সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছে। এক্স হ্যান্ডেলে ইডি-সিবিআই’কে ট্যাগ করেই অভিষেক ঘনিষ্ঠ এই তৃণমূল নেতার দাবি, ‘সুদীপ ব্যানার্জির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং তাঁর হয়ে ভুবনেশ্বর অ্যাপোলো হাসপাতালের বিল মেটানোর নথি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তিনি যখন জেলে বন্দি ছিলেন,  তাঁকে বড় অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়েছিল, না কি তাঁর হয়ে হাসপাতালের বিল অন্য কেউ মিটিয়ে দিয়েছিলেন,  তদন্ত করে দেখতে হবে। যদি প্রমাণ পাওয়া যায়,  তবে কয়লা ‘দুর্নীতি’র সঙ্গে ওই টাকার যোগ থাকতে পারে। তাহলে সুদীপ ব্যানার্জিকে গ্রেপ্তার করা উচিত। যদি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এটি এড়িয়ে যায়, আমি আদালতের দ্বারস্থ হবো।’ সুদীপ ব্যানার্জির সঙ্গে কয়লা কাণ্ডের যোগ সামনে এসে ইডি-সিবিআই’কে তদন্তের অনুরোধ জানাচ্ছে খোদ দলেরই নেতা!
সন্দেশখালিকাণ্ডে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে যখন গোটা রাজ্যজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল বিরোধী ক্ষোভ সামনে আসছে সেই সময়ে দৃষ্টি ঘোরাতে শাসক তৃণমূল ও বিজেপি’র পরিকল্পিত নকশার অংশ হিসাবেই কি তথাকথিত দলীয় ঝামেলা’ সামনে আনা হয়েছে? শাসক তৃণমূলের শীর্ষ মহলের কেউ কি নিজেকে জেলের বাইরে রাখছে বিজেপি’কে লোকসভা নির্বাচনে বাড়তি কোনও সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার খেলায় মত্ত?
 

Comments :0

Login to leave a comment