Birbhum Molestation

একই দিনে দুই নাবালিকার যৌন হেনস্তা বীরভূমে

জেলা

 দুপুরে এক নাবালিকার যৌন হেনস্তা হলো। রাতেই আবার আরেক আদিবাসী নাবালিকা দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার। একই দিনে বীরভূমের দুই প্রান্তে দুই বর্বরতা আবারও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর রাজত্বে নাবালিকারা কতটা নিরাপদ? 
আর জি করের ঘটনায় গোটা রাজ্য, দেশজুড়ে প্রতিক্রিয়ার পরেও গত এক বছরে ধর্ষণ, শ্লীলতাহানির সংখ্যা কমেনি বরং বেড়েছে। শাসকের মনোভাব, প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তাই যে অপরাধীদের অক্সিজেন জোগাচ্ছে তা ঘটনাপরম্পরাতেই স্পষ্ট। 
সোমবার দুপুরে নলহাটি থানা এলাকায় পাঁচ বছরের এক নাবালিকাকে যৌন হেনস্তার ঘটনা ঘটে। সেই রাতেই আরেকটি ঘটনায় এক আদিবাসী নাবালিকা শিকার হয়েছে দলবদ্ধ ধর্ষণের। ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে মল্লারপুর থানা এলাকায় একটি গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে। 
জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় একটি মেলা বসেছিল। সেই মেলা দেখতে রামপুরহাট থানা এলাকার বছর তেরোর এক নাবালিকা তার আত্মীয়ের সঙ্গে সেখানে যায়। রাত এগারোটার পর দু’জনে যখন বাইকে করে ফিরছিল তখন ৬জন তাদের পথ আটকায়। সঙ্গীকে আটকে রেখে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় নাবালিকাকে। নাবালিকা তারস্বরে চিৎকার করে। সেই চিৎকার কানে যায় পথচলতি অনেকের। এলাকায় পুলিশের গাড়িও ছিল টহলে। তাদের কানে খবর পৌঁছতে তারা এসে অভিযুক্ত ৬ জনের মধ্যে একজনকে ধরতে সমর্থ হয়। তাকে জেরা করে বাকি ৫ জনেরও হদিশ মিলে যায়। গ্রেপ্তার করা হয় ৬জনকে। ধৃতদের এদিন রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়েছিল। আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে নির্যাতিতার পরিবার-পরিজনেরা রীতিমত তেড়ে আসে। ধৃতদের কিল-ঘুষি মারতে থাকে আদালত চত্বরে বাইরে। পুলিশ কোনোক্রমে ধৃতদের আদালতে ঢোকায়। 
আদালতে সরকারি আইনজীবী দেবপ্রসাদ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘‘বিচারক ধৃতদের ছ’দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতদের বিরুদ্ধে পকসো সহ অন্যান্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার করা হয়েছে রামপুরহাটের এসডিপিওকে।’’ 
নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, ‘‘টোটোতে করে এসে ৬জন আমার মেয়ের পথ আটকে ছিল বলে জানিয়েছে আমায়। ৬জনই ওই গ্রামের বাসিন্দা। তারাই আমার মেয়ের উপর অত্যাচার করেছে।’’ ঘটনা ঘিরে চরম শোরগোল পড়েছে এলাকায়। এমন ঘটনায় প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন এলাকাবাসী। বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, ‘‘ঘটনাস্থলের কাছেই পুলিশের গাড়ি টহলদারিতে ছিল। চিৎকার শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে একজনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিরা পালিয়ে যায়। তবে ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যেই বাকিদেরও গ্রেপ্তার করা হয়।’’ পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, অভিযুক্ত ৬ জনের মধ্যে একজন আদিবাসী ও দু’জন নাবালক রয়েছে।
ওইদিনই দুপুর বেলায় অপর ঘটনাটি ঘটেছিল নলহাটিতে। পাঁচ বছরের এক নাবালিকাকে ষৌন হেনস্তায় উদ্যত এক যুবককে হাতেনাতে ধরে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে। গ্রামবাসীদের অল্পবিস্তর প্রহারও পড়েছে অভিযুক্তের উপর। জানা গিয়েছে, বছর পাঁচেকের নাবালিকা খেলা করছিল দুপুরের দিকে। সেই সময় গ্রামেরই যুবক জিৎ সেন তাকে ভুলিয়ে গ্রাম লাগোয়া এক নির্জন পুকুরের ধারে নিয়ে যায়। অপরদিকে মেয়েকে দেখতে না পেয়ে তার মা ও ঠাকুমা খুঁজতে খুঁজতে সেই পুকুরে ধারে গেলে রীতিমত চমকে ওঠেন। নলহাটি থানায় করা অভিযোগে নাবালিকার পরিবার জানিয়েছেন, পুকুরে ধারে মেয়ের পোশাক খুলে তার শরীরে স্পর্শ করেছিল যুবক। উদ্দেশ্য ছিল, নাবালিকার সাথে আরও ন্যক্কারজনককাণ্ড ঘটানো। কিন্তু সেই সময় বাড়ির লোক ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ছেলেটি চম্পট দেয়। গ্রামে ফিরে ঘটনা জানানো হয়। তখনই গ্রামবাসীরা তাকে ধরে চড়-থাপ্পড় দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তকে। 

Comments :0

Login to leave a comment