ANAYAKATHA — TAPAN KUMAR BIRAGYA | CAROLUS LINNAEUS HORSES— MUKTADHARA | 23 JUNE 2024

অন্যকথা — তপন কুমার বৈরাগ্য | ক্যারোলাস লিনিয়াসের ঘোড়া — মুক্তধারা | ২৩ জুন ২০২৪

সাহিত্যের পাতা

ANAYAKATHA  TAPAN KUMAR BIRAGYA  CAROLUS LINNAEUS HORSES MUKTADHARA  23 JUNE 2024

অন্যকথা

ক্যারোলাস লিনিয়াসের ঘোড়া
তপন কুমার বৈরাগ্য

মুক্তধারা

ক্যারোলাস লিনিয়াস উদ্ভিদ জগতের মধ্যে খুঁজে
পেয়েছিলেন জ্ঞান বিজ্ঞানের সকল বিষয়।ছোটবেলা
থেকেই তাঁর ছিল গাছেদের প্রতি সীমাহীন ভালোবাসা।
তিনি স্বপ্ন দেখতেন পৃথিবীর একজন শ্রেষ্ঠ উদ্ভিদবিজ্ঞানী
হবেন। পরবর্তীতে তাঁর এই স্বপ্ন সার্থক হয়েছিল।
ক্যারোলাস লিনিয়াসের জন্ম ১৩ই মে ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে।
ইউরোপের সুইডেন দেশের স্মল্যান্ড নাম এক প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যে ভরা গ্রামে।তিনি ছিলেন প্রখ্যাত সুয়েডীয় উদ্ভিদ
বিজ্ঞানী।তিনিই আধুনিক দ্বিপদী নামকরণের ভিত্তি
স্থাপন করেন। আধুনিক শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যার তিনি জনক।
তিনি সাতহাজার প্রজাতির উদ্ভিদের নামকরণ করেন।
উদ্ভিদবিদ্যা পড়তে গেলে তাঁকে আগে জানতেই হবে।
তাঁর পিতা নিলস লিনিয়াস তাঁর কৈশোর বয়েসে একটা
ঘোড়া কিনে দিয়েছিলেন।পিতা ছিলেন একজন গির্জার
যাজক।লিনিয়াস ঘোড়াটার নাম দিলেন ডেলেকার্লিয়ান।
ঘোড়াটা ছিল তাঁর অতি প্রিয়। লিনিয়াসের সংগ্রামে এই
ঘোড়াটা চিরদিন সাক্ষী হয়ে থাকবে।
এই ঘোড়াটায় তাঁকে নিয়ে যেত বিভিন্ন অরণ্য অঞ্চলে।
ঘোড়ার পিঠে ঝুলিয়ে রেখেছিলেন তিনি একটা হ্যাভারস্যাক।
যার মধ্যে ছিল নানান যন্ত্রপাতি।যেমন দূরবীণ, ছুরি,
অনুবীক্ষণ যন্ত্র,ডায়েরী এবং আরো প্রয়োজনীয় 
অনেক কিছু। ডেলেকার্লিয়ান তাঁর সাথে ঘন্টার পর
ঘন্টা কাটাতে কোন সময় বিরক্ত বোধ করত না।
সে যেন তাঁকে বলত--তুমি ভেঙে পড়ো না।আমি তোমার
পাশে আছি।একবার লিনিয়াস বনে বনে ঘুরতে ঘুরতে
অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঘোড়াটা দ্রুত বাড়ি পৌঁছে তাঁর
বাবাকে সেই বনে নিয়ে আসে।সেদিন তাঁর বাবা ছেলেকে
সাবধানে বাড়ি নিয়ে যায়।ঘোড়ার এই অভাবনীয়
কান্ড দেখে তাঁর বাবা সেদিন খুবই বিস্মিত হয়েছিলেন।
লিনিয়াস ভালো হয়ে ঘোড়ার গলাটা আনন্দে
জড়িয়ে ধরেছিলেন।এই ঘোড়াটার জন্যই তিনি হাজার
হাজার দুর্মূল্য প্রজাতির উদ্ভিদের সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন।
ধীরে ধীরে তিনি একজন বিখ্যাত উদ্ভিদ বিজ্ঞানী হয়ে
ওঠেন।লিনিয়াসের জন্যই উদ্ভিদতত্ত্বকে বিশ্ববিদ্যালয়ের  

পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে এই ঘোড়াটা অসুস্থ 

হয়ে মারা গেলে লিনিয়াস খুবই ব্যথা পেয়েছিলেন।বেশ কিছুদিন 
তিনি খান নি এবং কারো সাথে কথা পর্যন্ত বলেন নি।
এরপর স্বাভাবিক হয়ে তিনি লিখে ফেললেন তিনটে বই।
এই বইগুলো হলো স্পিসিস প্লান্টারাম,জেনেরা প্লান্টারাম,
সিস্টেমা ন্যাচারাই। ১৭৭৮খ্রিস্টাব্দের ১০ই জানুয়ারি
এই বিজ্ঞানতাপসের  দেহাবসান হয়।
আগামীদিনে পৃথিবীর অস্তিত্ব বজায় রাখতে হলে তাঁর
পথ অনুসরণ করে আমাদের বৃক্ষকে ভালোবাসতেই হবে। 


 

Comments :0

Login to leave a comment