রাজ্যের বিজেপি সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করল তামিলনাডুর পুলিশ। পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর হামলার ভুয়ো খবর ছড়ানোর জন্য তাঁকে দায়ী করা হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিএমকে নেতা এমকে স্ট্যালিন।
বিহার থেকে কাজে যাওয়া হিন্দিভাষী শ্রমিকদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন ভিডিও গত সপ্তাহে প্রচারিত হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। তামিলনাডু পুলিশের ডিজি বিশেষ বার্তা দিয়ে জানান যে ভুয়ে ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে। তদন্তে নেমে, শনিবার, বিজেপি’র এক নেতা প্রশান্ত উমরাওয়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ দায়ের করে পুলিশ।
রবিবার একই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে রাজ্যের বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাইয়ের বিরুদ্ধে। পুলিশের অভিযোগ, ভুয়ো ভিডিও এবং ভুয়ো বার্তা সোশাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছেন আন্নামালাই। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা তৈরির অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করেছে পুলিশ। সমাজে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগও দায়ের হয়েছে।
আন্নামালাই পালটা টুইট করে লিখেছেন, ‘‘সাত দশক ধরে উত্তর ভারতীয়দের সঙ্গে বিদ্বেষমূলক আচরণ চালাচ্ছে ডিএমকে। তা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।’’
ডিএমকে আন্নামালাইয়ের বক্তব্য খারিজ করেছে। দলের তরফে মনে করানো হয়েছে যে দীর্ঘদিন ধরে তামিলনাডুতে বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ কাজ করছেন। শান্তিতে রয়েছেন তাঁরা।
এর আগে স্ট্যালিন নিজে বিবৃতি দিয়েছেন। অন্য রাজ্যের যে শ্রমিকরা তামিলনাডুতে কাজে আসেন তাঁদের পরিজন আখ্যা দিয়ে সুরক্ষার পূর্ণ প্রতিশ্রুতি দেন স্ট্যালিন। ভুয়ো খবর ছড়ালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন। সব জেলা শাসককে বিবৃতি দিতে বলেন তিনি। হিন্দিতে জারি করা বিবৃতিতে হেল্পলাইনও দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে কোথাও কোনও সমস্যা মনে হলে হেল্পলাইনে জানাতে।
তামিলনাডুর পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে বিহারেও। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন স্ট্যালিনের সঙ্গে। বিহার চার আধিকারিকের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে তামিলনাডুতে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। রিপোর্ট দেবেন মুখ্যমন্ত্রীকে। পুলিশের ডিজি এবং মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি তিরুপ্পুর জেলাতেও যাবে বিহারের প্রতিনিধিদল। এই জেলায় বিহারের শ্রমিকদের ওপর আক্রমণের বিভিন্ন বার্তা ছড়িয়েছে। কোনও কোনও সংবাদমাধ্যমও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
বিজেপি বিরোধী সরকার তামিলনাডুতে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার কড়া প্রতিবাদ করেছে সরকারে আসীন ডিএমকে। কেন্দ্রের পাঠানো রাজ্যপালের সঙ্গে বিরোধও তীব্র হয়েছে বেশ কয়েকবার।
বিজেপি এখনও এ রাজ্যে প্রভাব ছড়াতে পারেনি। সোশাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী বেশ কিছু অংশ নিয়ম করে ডিএমকে এবং স্ট্যালিন সরকারকে আক্রমণের মুখে ফেলছে। উত্তর ভারত বনাম দক্ষিণ ভারত ভাষ্য খাড়া করতে কেন্দ্রের হিন্দি নীতিকে হাতিয়ার করা হচ্ছে। বিহারে বিজেপি-বিরোধী সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলতে এই ভাষ্য কাজে লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে।
স্ট্যালিন যদিও স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন ভুয়ে খবর ছড়ালে কড়া ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
Comments :0