বিডিও দপ্তরে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি। নবান্নের ফোনে ফোন করেও মেলেনি আবাস যোজনা প্রকল্পের ঘর। এই বঞ্চিতদের মধ্যে রয়েছেন দীনমজুর, খেতমজুর, বিড়ি শ্রমিক, তাঁত শ্রমিক, মৎস্যজীবী ছাড়াও প্রতিবন্ধীরা। এই বঞ্চিত গরিব মানুষদের বাড়ি কালনা ১ ব্লকের নান্দাই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নতুনগ্রাম, ঘুঘুডাঙ্গা, আশ্রমপাড়া প্রভৃতি গ্রামে। এই গরীব মানুষগুলোর অভিযোগ ২০২২ সালের সমীক্ষায় আবাসন প্রকল্পের তালিকায় তাদের নাম ওঠে। কিন্তু পরবর্তীতে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য এবং অঙ্গনওয়াড়ি সহায়িকা কারো বাড়িতে না গিয়ে ঘরে বসে সংশোধিত তালিকা তৈরি করে। সেই তালিকা থেকে বাদ পড়ে অনেকের নাম। তখনকার সেই সংশোধিত তালিকা ধরে ২০২৪-এ সমীক্ষা হয়। সেই সমীক্ষাতে আবাসন প্রকল্পের তালিকায় এলাকার ধনীদের নাম নথিভুক্ত হয়। এই ধনীদের মধ্যে এমনও আছেন কেউ কেউ, যাদের দোতালা মার্বেলের মোজায়েক করা বাড়ি। নতুনগ্রামের বাসিন্দা মকবুল শেখ দুই সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। পেশায় তিনি একজন ঠিকা কৃষক।
প্রতিবন্ধী সানাবুল শেখ তার ভাঙ্গা বাড়িতে বসে।
এদিন তিনি জানান ২০১৬ সালে তৎকালীন কালনা থানার ওসি সনৎ দাসের গাড়িতে নিমতলা বাজারে তার মেয়ে মহসিনা খাতুনকে ধাক্কা মারে। তারপর থেকেই তার মেয়ে মহসিনা শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। সে ঠিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারেনা। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর তৎকালীন কালনা ওসি সনৎ দাস আশ্বাস দিয়েছিলেন তার মেয়ের চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবেন। প্রথমদিকে সামান্য কিছু অর্থ সাহায্য করলেও পরের দিকে তিনি আর কোনরকম যোগাযোগই রাখেননি। চিকিৎসা ও সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে একাদশ শ্রেণিতে পাঠরত মহাসিনা খাতুন তার মায়ের সঙ্গে বিড়ি বাঁধে। ভাঙাচোরা বাড়িতে অতিকষ্টে দিন কাটাচ্ছে এই পরিবার। এই গ্রামের আরও এক প্রতিবন্ধী সানাবুল শেখের নামও তালিকা থেকে বাদ চলে যায়। স্ত্রী আনহারা বিবিকে নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটছে তাদের। পোষা গরুর দুধ বিক্রি করে আর আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় অতি কষ্টে দিন গুজরান হয়। এই কনকনে ঠান্ডায় ভাঙাচোরা বাড়িতে কোনরকমে বসবাস করে এই পরিবার। তাদের আবেদন আবাসন প্রকল্পের তালিকায় নাম তোলা হোক।
Comments :0