কোভিডের ভাইরাস অচেনা ছিল। এইচএমপিভি মোটেই নতুন ভাইরাস নয়। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক নয়। ফলে আতঙ্ক না ছড়িয়ে সতর্কতা এবং সচেতনতা জরুরি।
দেশময় এইচএমপিভি সংক্রমণ জনিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলেছেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী।
ডা. সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমভিপি) নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই। এই ভাইরাস কোভিডের মতো নতুন নয়। বহুদিন ধরে মানবজগতে আছে। ২০০১ সালে আবিষ্কার হয়েছে, কিন্তু এই ভাইরাস তারও অনেক আগে থেকে ছিল।’’
মঙ্গলবার নাগপুরে আরও দুই নমুনায় এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। দেশে সংক্রমণ দেখা গিয়েছে মোট ৭ জনের। এর মধ্যে শিশু-কিশোররাই মুখ্যত রয়েছে।
গোস্বামী বলেন, ‘‘এই ভাইরাস সারা পৃথিবীতে আছে। আমেরিকা, চীন, ইউরোপ এমনকি আমাদের দেশেও আছে। চীনের যে এত সংখ্যার কথা বলা হচ্ছে তার কারণ বহুদিন ধরে সেদেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী। দ্রুত নির্ণয় করতে পারে।’’
চীনে সংক্রমণের খবরের কারণেও এই ভাইরাসের সঙ্গে কোভিড পরিস্থিতির তুলনা শুরু হয়েছে। সংবাদমাধ্যমে খবরের পাশাপাশি সোশাল মিডিয়াতেও এ সংক্রান্ত বহু কথা চালাচালি হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ডা. গোস্বামী বলেছেন, ‘‘কোভিডের পর থেকে বিভিন্ন রোগের উপর যে নজরদারির ব্যবস্থা তা আরও মজবুত হয়েছে চীনে। ফলে সেখানের সমস্ত ভাইরাল সংক্রমণ বাড়ছে কি না তা নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে। সেই জন্যই মনে হচ্ছে কেবল চীনে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘গত বছর আমাদের রাজ্যে শিশুদের মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছিল। কোনও বছর অ্যাডিনো ভাইরাস আবার কোনও বছর হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাসে সংক্রমণ বেশি থাকে। শীতকালে সব সময় শ্বাসনালীর সংক্রমনজনিত অসুখ কিছু বেশি হয়। সেটা এই বছরেও আমাদের দেশে এবং রাজ্যে দেখা যাচ্ছে।’’
এই ভাইরাসের উপসর্গ কী?
চিকিৎসক গোস্বামী জানাচ্ছেন, "সদ্যোজাত থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যায়। কিন্তু তা সাধারণ ঠাণ্ডা লাগার মতো। যেখানে জ্বর, সর্দি, কাশি হয়। আলাদা কিছুই নয়। সাধারণ জ্বর সর্দি হলে যে চিকিৎসা প্রয়োজন সেই পরামর্শই আমরা দিয়ে থাকি। তাই আমরা বিশেষ পরীক্ষা করাই না এবং রাজ্যের সর্বত্র এই পরীক্ষার সুযোগও নেই। সরকারিভাবে গোটা রাজ্যে ৪-৫টি জায়গায় পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা করার প্রয়োজনও হয় না। কিছু ক্ষেত্রে যাদের জটিল রোগ আছে বা কোনও কো-মরবিডিটি আছে এমন রোগীদের বাড়তি সমস্যা দেখা দিতে পারে। শ্বাসকষ্ট হতে পারে।’’
এই চিকিৎসকের ক্ষোভ, ‘‘মাত্রাতিরিক্ত আতঙ্ক ছড়াচ্ছে গণমাধ্যমের একাংশ। যার ফলে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে যায়। এদের সঙ্গে যুক্ত আছে বহুজাতিক ফার্মা কোম্পানি। তারা চায় মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রোগ নিয়ে ভয় ঢুকিয়ে দিয়ে ব্যবসা বৃদ্ধি করতে। এর ফাঁদে পা না দিয়ে সচেতন থাকুন।"
কী কী সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত?
ডাঃ গোস্বামী বলেছেন, “কোভিডের সময় আমরা যে সাধারণ স্বাস্থ্যবিধির কথা বলেছি তা আগে অনুসরণ করা উচিত, আপনার চোখ, মুখ, হাত স্পর্শ করার আগে আপনাকে অবশ্যই 30 সেকেন্ডের জন্য সাবান দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে জনাকীর্ণ জায়গায় বা নির্দিষ্ট জায়গায় মাস্ক যাতে কেউ কাশি না করে, এই সময়ে শিশুদের স্কুলে পাঠানো উচিত নয়। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, যদি কেউ A2c স্ট্রেনে আক্রান্ত হন, তাহলে তাদের পরীক্ষা করতে হবে স্ট্রেন পাওয়া গেছে কিনা।
HMPV
এইচএমপিভি নতুন নয়, দরকার সতর্কতা: ডা. সুবর্ণ গোস্বামী
×
Comments :0