বন্দে ভারত ট্রেন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে গেরুয়া পতাকার ছড়াছড়িতে তীব্র আপত্তি জানালেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এখন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে মমতার আপত্তি কেন।
শুক্রবার হাওড়া স্টেশনে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনে জমায়েতের একাংশ ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেয়। সরকারি অনুষ্ঠানে ধর্মীয় বা রাজনৈতিক স্লোগান তোলার কড়া বিরোধিতা সেদিনই করেছে সিপিআই(এম)। অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও স্লোগানের আপত্তি জানিয়ে মঞ্চে ওঠেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
শনিবার কলকাতায় মুজফ্ফর আহমদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। সেলিমের ব্যাখ্যা, ‘‘কংগ্রেসের হাত ছেড়ে মমতা যখন বিজেপির হাত ধরে তখন বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর দেশ জুড়ে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান গোটা দেশে ছড়ানো হয়। মমতা তো তখন বিজেপির সঙ্গে।’’
তাঁর সংযোজন, ‘‘স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ক্ষুদিরাম থেকে ভগত সিং ‘বন্দেমাতরম’ বা ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান তুলেছেন ফাঁসির মঞ্চে। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দেননি তাঁরা। সরকারি স্লোগান হচ্ছে ‘জয় হিন্দ’। কিন্তু বিজেপি-আরএসএস জয় হিন্দের সঙ্গে জয় শ্রীরামকে গুলিয়ে দিতে চাইছে। এটাই আরএসএস’র রাজনীতি।’’
এই পরিপ্রেক্ষিত মনে করিয়ে সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের প্রশ্ন, ‘‘এখন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে মমতা ব্যানার্জির আপত্তি কেন?’’
গোটা হাওড়া স্টেশন বিজেপির পতাকা দিয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছিল বিজেপি কর্মীদের পক্ষ থেকে। তার সমালোচনার পাশাপাশি রাজ্য এবং কেন্দ্রের দুই শাসক দলকে একযোগে আক্রমণ করেছেন সিপিআই(এম)’র রাজ্য সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি ও তৃণমূল দুই-ই দল এবং সরকারের মধ্যে কোনও ফারাক রাখছে না। রাজ্যে সরকারি অনুষ্ঠান তৃণমূলের পতাকা দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়। হাওড়ায় দেখা গিয়েছে বিজেপি’র পতাকা। মমতা রেলমন্ত্রী থাকাকালীনও একই জিনিস হয়েছে এই রাজ্য।’’
তিনি মনে করিয়েছেন কলকাতায় মেট্রো রেল উদ্বোধনের প্রসঙ্গ। সেলিম বলেন, ‘‘কলকাতায় যখন মেট্রোর উদ্বোধন হয় তখন কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার। তখন তো কংগ্রেসের পতাকা দিয়ে বা সিপিআই(এম)’র পতাকা দিয়ে মেট্রো স্টেশনগুলি মুড়ে ফেলা হয়নি।’’
এদিন সাংবাদিক সম্মেলন হয় নন্দকুমারে আবাস বিক্ষোভে পুলিশের নির্যাতনের প্রতিবাদে। ৩ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের এই নন্দকুমারেই মিছিল করবে সিপিআই(এম)। সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিও।
পার্টি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, পঞ্চায়েতের মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়া মানুষের অধিকার। জব কার্ড থেকে আবাস, সর্বত্র সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে তৃণমূল করতে হবে। তাতেও কেবল হবে না, টাকাও দিতে হবে। সেই কারণেই গরিব মানুষকে ঘর দেওয়া হচ্ছে না। বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতেও একই কাজ চলছে।’’
Comments :0