ssc scam

এসএসসি চাকরি বাতিল মামলার রিভিউ পিটিশন খারিজ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে

জাতীয় রাজ্য

এসএসসি’র চাকরি বাতিলের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার সমস্ত আবেদন খারিজ করে দিলো সুপ্রিম কোর্ট। প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার জন্য রিভিউ পিটিশন করেছিল রাজ্য সরকার, এসএসসি, চাকরিহারা শিক্ষকদের একটি অংশ। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ সব আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। 
এদিন শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছে, নিয়োগ পরীক্ষার ওএমআর শিট পাওয়া যায়নি। বহু সুযোগ দেবার পরেও যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের আলাদা করা হয়নি। তাছাড়া সিবিআই এবং বিচারপতি বাগ কমিটির তদন্তে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। রাজ্য সরকার সহ অন্যান্যদের আবেদনের শুনানি গত ৫ আগস্ট শেষ হয়েছিল। মঙ্গলবার বিচারপতিরা আদালতে তাঁদের নিজস্ব ঘরে বসেই এই মামলার রায় দিয়েছেন। শীর্ষ আদালত বলেছে, এই মামলায় পুনর্বিবেচনার কোন অবকাশ নেই। 
এর আগে গত ৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট বলে, তিন মাসের মধ্যে নতুন করে এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ শেষ করতে হবে। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, কলকাতা হাইকোর্ট যে চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল সেখানে কোন হস্তক্ষেপ করা যায় না। শুধুমাত্র সেই নির্দেশের কিছু পরিমার্জন করা যায়। সেদিন শীর্ষ আদালত তার নির্দেশে এই মামলায় সিবিআই তদন্ত বহাল রেখেছিল। 
সুপ্রিম কোর্ট পর্যবেক্ষণে বলেছিল, সমস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়াতে একটি জালিয়াতি এবং প্রতারণা হয়েছে, যা সংবিধানের ১৪ এবং ১৬ অনুচ্ছেদের পরীপন্থী। সংবিধান অমান্য করেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ৪১ পৃষ্ঠার নির্দেশে বলা হয়েছিল, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার কোনও তথ্য এবং নথি নিজেদের কাছে রাখেনি এসএসসি। ফলে যোগ্য এবং অযোগ্য প্রার্থীদের তারা বাছাই করতে পারেনি। এসএসসি সুপ্রিম কোর্টে কোন যুক্তিগ্রাহ্য নথি জমা না দেওয়ায় ২০১৬ সালের পুরো প্যানেল বাতিল হয়ে যায়। 
এই চাকরি বাতিলের পরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন জানিয়ে বলা হয়েছিল, সমস্ত শিক্ষকের চাকরি বাতিল হয়ে গেলে রাজ্যের স্কুলগুলিতে ছাত্রদের পড়াশোনার ক্ষতি হয়ে যাবে। ফলে এই শিক্ষকদের আরও কিছুদিন তাঁদের কাজে বহাল করা প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্ট মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সেই আবেদন গ্রহণ করে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশে বলা হয়েছিল, শুধুমাত্র যোগ্য শিক্ষকরাই এই সময়ে কাজে যোগ দেবেন। চিহ্নিত অযোগ্য শিক্ষকরা কাজে যোগ দিতে পারবেন না। এই সময়ে শিক্ষাকর্মীরা স্কুলে যেতে পারবেন না। সেই নির্দেশের পর এসএসসি’র একটি আবেদনের ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ চলতি বছরের ৩১ মে’র মধ্যে শুরু করতে হবে। শেষ করতে হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে। শীর্ষ আদালতের সেই নির্দেশ মেনে এসএসসি শিক্ষক নিয়োগে নতুন প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

Comments :0

Login to leave a comment