ANURAG THAKUR HATE SPEECH

অনুরাগদের ঘৃণা ভাষণ মামলার শুনানি ফের অক্টোবরে

জাতীয়

ANURAG THAKUR HATE SPEECH

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ভাষণ দিয়েছিলেন দুই বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর এবং প্রবেশ ভার্মা। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবদন জানিয়েছিলেন সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাত। ৩ অক্টোবর অবধি সেই আবেদনের শুনানি স্থগিত করল দেশের সুপ্রিম কোর্ট। 

প্রসঙ্গত, ওই দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার আবেদন জানিয়ে নিম্ন আদালতে মামলা হয়। নিম্ন আদালত সেই দাবি খারিজ করে দেয়। নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে পিটিশন  দাখিল হয়। ২০২২ সালের ১৩ জুন সেই পিটিশনও খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্ট। তার পরিপ্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান বৃন্দা কারাত। অনুরাগ ঠাকুর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে প্রথম দেশে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্বের সংস্থান করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। প্রতিবাদের জেরে আইন প্রয়োগ যদিও করতে পারেনি। কিন্তু আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে ‘গোলি মারো’ স্লোগান পর্যন্ত দিয়েছেন বিজেপি’র নেতা সাংসদরা। ছড়িয়েছেন বিদ্বেষ। 

এদিন বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি পঙ্কজ মিথলের এজলাসে মামলার শুনানি শুরু হয়। শুনানি চলাকালীন অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল এসভি রাজু শুনানি স্থগিত রাখার আবেদন জানান। সর্বোচ্চ আদালত ৩ অক্টোবর অবধি শুনানি স্থগিত করলেও জানিয়েছে এরপরে আর এই মামলায় কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে না। 

এর আগে ১৭ এপ্রিল দিল্লি পুলিশকেও সুপ্রিম কোর্টের তরফে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কারাতের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত পুলিশের কাছে জানতে চেয়েছে, কেন ওই দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের  হয়নি

বৃন্দা কারাতের পাশাপাশি বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের আবেদন জানিয়ে পিটিশন দাখিল করেছেন কেএম তিওয়ারি। আবেদনকারীরা পিটিশনে জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ২৭ জানুয়ারি দিল্লির সভা থেকে সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ান দুই বিজেপি সাংসদ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে বলতে শোনা যায়, "দেশ কি গাদ্দারোকো, গোলি মারো **।" অর্থাৎ রাষ্ট্রের প্রতি যারা বেইমানি করবে,  তাদের গুলি করে মারা হোক। তার সঙ্গে যুক্ত হয় আশ্রাব্য গালিগালাজ। 

প্রসঙ্গত দিল্লির শাহিনবাগে শান্তিপূর্ণ ভাবে সিএএ-বিরোধী আন্দোলনে সামিল হন বহু মানুষ। মহিলারা নজিরবিহীন ভাবে এই আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন। বিজেপি প্রথম থেকেই চেষ্টা করে এই আন্দোলনকে সম্প্রদায়িক রঙ দেওয়ার। এই আন্দোলন ভাঙার চেষ্টাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিল্লি। শুরু হয় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ। 

আবেদনকারীদের অভিযোগ, ওই বছরের ২৮শে জানুয়ারির সভা থেকে ঘৃণা ভাষণ  দেন বিজেপি সংসদ প্রবেশ ভার্মাও। বিজেপির প্রথম সারির দুই নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের আবেদন জানিয়ে  ২০২১ সালে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হন  আবেদনকারীরা। দাবি খারিজ করে ২৬ আগস্ট নিম্ন আদালত জানায়, এই সংক্রান্ত বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে উপযুক্ত অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাই এফআইআর দায়েরের  নির্দেশ দেওয়া সম্ভব নয়। 

সুপ্রিম কোর্টে করা পিটিশনে কারাত এবং তিওয়ারি আবেদন জানিয়েছেন, অভিযুক্ত বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩-এ ১৫৩-বি, ২৯৫-এ, ২৯৮, ৫০৪, ৫০৫ এবং ৫০৬ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের হোক। প্রসঙ্গত, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বৈরিতা ছড়ালে, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে শান্তি ভঙ্গ করলে কিংবা প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার মত গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে এই ধারাগুলিতে মামলা দায়ের হয়। এই ধারায় দোষী সাব্যস্ত হলে, সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছরের কারাবাস।

Comments :0

Login to leave a comment