Awas Yojana

স্কুলের জন্য জমি দান, বসবাস ভাঙা ঘরেই, মেলেনি আবাস

জেলা

ভাঙ্গা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে ঝুকু বাউরী ও তাঁর স্ত্রী।

গ্রামের ছোট ছোট পড়ুয়ারা মিড ডে মিলের খাবার খেত খোলা আকাশের নিচে বসে‌ সেটা দেখে ভালো লাগেনি পুরুলিয়ার নিতুরিয়া ব্লকের বিন্দুইডি গ্রামের দিনমজুর ঝুকু বাউরীর। একদিন হাঁটি হাঁটি পায়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে। গিয়ে তার পৈত্রিক ভিটের সাড়ে তিন ডেসিমেল জমি দান করতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন ঝুকু বাউরি‌ অবাক হয়েছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। দিনমজুরি করে সংসার চালানো একজন মানুষ গ্রামের শিশুদের কথা চিন্তা করে নিজের জীবনের শেষ সম্বলটুকু দান করে দিয়েছিলেন। এখন সেখানেই ডাইনিং শেড তৈরি করা হয়েছে। আর ঝুকু বাউরী যে ঘরে বসবাস করেন সেখানে  প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকেও রোদ বৃষ্টি বাতাস কোন কিছুই আটকানো যায় না। একটা আবাস যোজনার ঘরের জন্য প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরেছেন, শাসকদলের নেতাদের পেছনে পেছনে গেছেন। কিন্তু লাভ হয়নি কোন। তাই ভাঙ্গা ঘরেই বসবাস করছেন ঝুকু বাউরী তার পরিবার-পরিজন নিয়ে।
বহু বছর আগে মাটির বাড়ি তৈরি করেছিলেন। সে বাড়িতেই বসবাস ঝুকু বাউরীর। বয়সের কারণে এখন আর দিনমজুরি করতে যেতে পারেন না। ছেলেও দিনমজুর। সেই রোজগারেই সংসার চলে। ঘর ভেঙে গেছে অনেক দিনই। ছাদ সারাবার মত সামর্থ্য নেই। প্লাস্টিক জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু জল বাতাস আটকানো যায় না। ঝুকু বাউরীর বক্তব্য আবাস যোজনার ঘরের জন্য বিভিন্ন জায়গায় বহুবার আবেদন করেছেন। অনেকেই তার চোখের সামনে আবাস যোজনার ঘর পেলেও তার নাম কোনদিন  তালিকায় ওঠেনি। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রধান ,পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি - সকলেরই বক্তব্য আবাস যোজনা তালিকা অনেক দিন আগে তৈরি হয়েছে। নতুন করে কোন তালিকা তৈরি হয়নি। ঝুকু বাউটির ঘর পাওয়া উচিত ছিল, পরেরবার সেটা দেখা হবে। কিন্তু আদৌ তিনি ঘর পাবেন কিনা সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারেনি। অথচ এই মানুষটি একদিন মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে গ্রামেরই ছোট ছোট শিশুদের স্বার্থে নিজের পৈত্রিক ভিটের শেষ সম্বল সাড়ে তিন ডেসিমেল জমি দান করে দিয়েছিলেন। তারপর অসহায়ের মতো সেই মানুষটা একটা আবাস যোজনার ঘরের জন্য প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছেন। সামান্য একটা আবাস যোজনার ঘর ঝুকু বাউরী পাননি।

Comments :0

Login to leave a comment