রাহুল গান্ধী হেঁটে যাওয়ায় ‘অপবিত্র’ হয়ে গিয়েছে বারাণসীর রাস্তা। তাই গঙ্গাজল ঢেলে জয় শ্রীরাম জপতে জপতে ‘শুদ্ধিকরণ’ করলো বারাণসীর বিজেপি কর্মীরা। সেকথা নিঃসঙ্কোচে বলেছে তারা। ‘অপবিত্র’ সড়কের ‘পবিত্রতা’ ফেরানোর সময়ই মোদী বাহিনীর এক কর্মীর কথায়, ‘‘রাহুল গান্ধী সনাতন ধর্মে বিশ্বাস করেন না। আমিষ খাবার খান। ওঁর উপস্থিতিতে এই রাস্তা অপবিত্র হয়ে গিয়েছে।’’ গত শনিবার গোধুলিয়া মোড়ের কাছে নন্দী ক্রসিংয়ের উপর দিয়ে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ গিয়েছে। তারপর রাস্তা ফাঁকা হতেই স্থানীয় বিজেপি কর্মীরা বালতি ভরে গঙ্গা জল এনে রাস্তায় ঢালতে শুরু করে এবং জয় শ্রী রাম ধ্বনিও তোলে।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে দ্বন্দ্ব, বাক্যুদ্ধ, প্রতিবাদ-আন্দোলন খুব স্বাভাবিক। কিন্তু রাজনৈতিক বিরোধিতা করতে গিয়ে ঘৃণা-বিদ্বেষ এবং অস্পৃশ্যতার বাতাবরণ তৈরি করে দেওয়া হলো। বারাণসীর বিজেপি কর্মীদের এই ঘৃণ্য আচরণও তারই উদাহরণ। মতাদর্শগত বিরোধিতাকে বিদ্বেষে রূপান্তরিত করে দেওয়া হলো খুব সহজেই। সেই রাজনীতিক কি খান, তিনি কোন ধর্মে বিশ্বাস রাখেন— সেটি’কে মাপকাঠি বানিয়ে ঘৃণা ছড়ালো বিজেপি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে রাহুল সেদিন কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন বিজেপি’কে। তিনি বলেছিলেন, ভারত বিদ্বেষের দেশ নয়। দেশকে ঐক্যবদ্ধ করাই হলো দেশপ্রেম। দেশের বেকারত্ব নিয়ে মোদী সরকারকে তুলোধনা করেন কংগ্রেস নেতা। সরব হন মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধেও। রাহুলের প্রতিটি বক্তব্য বাস্তব সত্য উঠে আসায় বিজেপি এই নিকৃষ্ট পথে তাঁকে আক্রমণ করল।
Comments :0