BUDGET REACTION

বঞ্চনা-বিশ্বাসঘাতকার দলিল কেন্দ্রীয় বাজেট, বলছে মহিলা-ছাত্র—খেতমজুরদের

জাতীয়

মোদীর বাজেট হলো ছাত্র-যুব, মহিলা, মজদুরের বঞ্চনা ও বিশ্বাসঘাতকতার দলিল। ছাত্র, মহিলা খেতমজুর থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা এভাবেই দেখছেন মোদীর ঢাউস প্রচারিত বাজেটকে। মোদীর মহিলাদের ক্ষমতায়নের বহুল প্রচার হলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন নেই বাজেটে। দেশের ধসে পড়া অর্থনীতিতে দরিদ্র মহিলারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লাখপতি দিদির নামে স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রকল্পে নাম মাত্রই বরাদ্দ বেড়েছে। নির্বাচনী ইশতেহারে শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও শিক্ষায় সর্বক্ষেত্রে বিপুল বরাদ্দ কমানো হয়েছে। উপেক্ষিত খেতমজদুরেরা। তাদের সামান্য অঙ্কের সামাজিক প্রক্ল্পে বরাদ্দ তাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোদীর বহু ঘোষিত ঢালাও সামাজিক প্রকল্পের রূপায়নের সরকারি খতিয়ানে ফাঁকি ধরা পড়ে গেছে। ২ও ৩ ফেব্রুয়ারি বাজেট পোড়াও কর্মসূচী গ্রহণ করেছে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
এদিন মোদী সরকারের ‘নারী শক্তি’ যে একেবারে অর্থহীন প্রচার তা বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার স্পষ্ট করে দিয়েছে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি। এদিন বিবৃতিতে সমিতি জানিয়েছে মহিলা ক্ষমতায়ন বলে মোদীর যে প্রচার চলছে তা দেশের ধসে পড়া অর্থনীতির প্রেক্ষিতে দেখা উচিত। যেখানে মানুষের আয় কমছে, বেকারি বাড়ছে, সেখানে মহিলাদের আলাদা ভাবে ক্ষমতায়ন ও সম্বৃদ্ধি হয় না। উলটে মহিলারা এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সমিতি উদাহরন হিসাবে জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘোষণা করা হলো এতে ৭০ শতাংশ মহিলাদের আবাসন দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এবছর তার বরাদ্দ ২৬ শতাংশ হারে কমেছে। সরকারের  কাজের খতিয়ানে দেখা গেল  ২০২২-২৩ সালেএই প্রকল্পে ৫৩ লক্ষ আবাসন তৈরির কথা থাকলেও মাত্র ১৩ লক্ষ আবাসন নির্মান হয়েছে। মহিলাদের এতে আবাসন বিলিতে গুরুত্ব দেওয়া হলেও ৫শতাংশ মহিলাদের আবাসন মেলেনি। তাতে মহিলাদের গুরুত্ব মেলেনি।বাজেট লক্ষ্য মাত্রা অনুযায়ী মহিলাদের জন্য আবাসন নির্মান হয়নি। সমিতি আরো জানাচ্ছে, বাজেটে সব থেকে কম বরাদ্দ হয় নারী শিশু কল্যান দপ্তরে।এতে বাজেটে মোট খরচের মাত্র ০.৫ শতাংশ বরাদ্দ হয়। মহিলাদের সামাজিক কল্যানে নির্ভয়া তহবিল তৈরি হয়েছিল কিন্তু তহবিলের ৭০ শতাংশ অর্থ খরচ হয়নি। মহা সমারোহে গত বছর কন্যাশিশু সঞ্চয় প্রকল্প গত বছর ঘোষণা হলেও তা আজও চালু হয়নি। মহিলা ক্ষমতায়ন বলা হচ্ছে অথচ দেখা গেছে মহিলা দিন মজুরের কাজ মেলে না, মজুরি কম মেলে। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড জানাচ্ছে, মোদী জমানায় (২০১৪-২০২৩) অভাবে জর্জরিত দিনমজুর মহিলা শ্রমিকদের মধ্যে আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েছে ১৩৭ শতাংশ হারে।
এদিন এসএফআই তার বিবৃতিতে জানিয়েছে্, মোদী সরকার ছাত্র সমাজের প্রতি প্রতারনা করেছে।তারা নির্বাচনী ইশতেহারে জানিয়েছিল জিডিপির ৬শতাংশ শিক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দ করবে। কিন্তু শিক্ষায় সবক্ষেত্রে বরাদ্দ কমেছে। গত বছরের তুলনায় শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমেছে ১৭ শতাংশ। উচ্চশিক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) খাতে বরাদ্দ কমেছে ৬০ শতাংশ হারে। সাধারন শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমেছে ২০ শতাংশ। প্রচারে বিপুল বরাদ্দ ঘোষনা করে এতে বিপুল হারে বরাদ্দ কমানো হয়েছে যা প্রতারণা বলে জানাচ্ছে এসএফআই।
এদিন খেতমজদুর ইউনিয়ন জানাচ্ছে মোদী সরকার দরিদ্র খেত মজদুরের সামাজিক প্রকল্পেও বরাদ্দ কমাচ্ছে। তারা জানায়  বরাদ্দ কমানোর ফলে রেশনে ডাল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে অপুষ্টি বাড়ছে খেত মজদুরেদের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী অন্নদাতা আয় সংরক্ষন প্রকল্প, কিষাণ মান ধন যোজনা প্রকল্পে কমানো হয়েছে বরাদ্দ।
এদিন অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কাস অ্যন্ড হেল্পার জানাচ্ছে মোদী আমলে কর্মী ও সহায়িকা দের কাজের চাপ বাড়লেও তাদের এক পয়সাও ভাতা বাড়ানো হয়নি। বর্তমানে এরে বরাদ্দ কমিয়ে এই প্রকল্পকে কর্পোরেট  এনজিও-র হাতে তুলে দেওয়া উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।আগামী ২ও ৩ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রের জনবিরোধী বাজেটের প্রতিবাদে  সারা দেশে বাজেট পোড়াও কর্মসূচী পালনের ডাক দিয়েছে ফেডারেশন।

Comments :0

Login to leave a comment