Group-D- Calcutta High Court

গ্রুপ-ডি নিয়োগ মামলাতেও ইডি-কে যুক্ত করার নির্দেশ

রাজ্য

Group-D- Calcutta High Court

চাকরির আড়ালে মোটা টাকা আদায় হয়েছে, এই মন্তব্য করে গ্রুপ-ডি নিয়োগ মামলায় ইডি’কে যুক্ত করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। হাজার হাজার ওএমআর শিট জালিয়াতির পিছনে আর্থিক লেনদেন রয়েছে বলে মনে করছে আদালত। বুধবার গ্রুপ-ডি শিক্ষাকর্মী নিয়োগ মামলায় ইডি’কে যুক্ত করে দ্রুত রিপোর্ট চেয়েছে আদালত। এদিনই বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর এজলাসে এসএসসি প্রাক্তন সচিব সুবীরেশ ভট্টাচার্যের জামিনের আবেদন খারিজ করে আদালত মন্তব্য করেছে, ‘‘শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে। সবটা খুঁজে বের করা দরকার। ‘‘শিক্ষক নিয়োগে এই দুর্নীতি সামাজিক অবক্ষয়।’’ 


এদিন গ্রুপ-ডি পদে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মামলাকারী লক্ষ্মী টুঙ্গার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলায় ইডি’কে যুক্ত করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই’র কাছে জানতে চান ধৃত সুবীরেশ ভট্টাচার্য বয়ানে কার কার নাম পাওয়া গিয়েছে। ওএমআর শিট ম্যানিকুলেশন করা হয়েছে আর্থিক লেনদেনের কারণে। দেখতে হবে কার নির্দেশে এই কাজ হয়েছে। দেখতে হবে কোনও ব্যক্তি যেন ছাড় না পান। কেউ যাতে পালিয়ে যেতে না পারেন। এদিনই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ১০০টি ওএমআর শিট জালিয়াতির রিপোর্ট জমা দিয়েছেন আইনজীবীরা। একটি ওএমআর শিটে দেখা গিয়েছে, শূন্য বা ১, ২ নম্বর পেয়েছেন এমন প্রার্থীদের নম্বর বেড়ে ৪৩ থেকে ৫০ হয়েছে। আদালত বলেছে সিবিআই যে ২৮২৩টি ওএমআর শিট জালিয়াতির রিপোর্ট দিয়েছে। এই ওএমআর শিট খতিয়ে দেখবেন আইনজীবীরা। আগামী ১০ দিনের মধ্যে এই ২৮২৩টি ওএমআর শিটের রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে। 


এসএসসি কর্মশিক্ষায় নিয়োগের জন্য যে অতিরিক্ত শূন্যপদ সৃষ্টি করেছিল তা অবৈধ বলে আগেই জানিয়েছিল আদালত। সুপার নিউমারিক পোস্ট তৈরি করাকে কেন্দ্র করে গোটা রাজ্য মন্ত্রীসভা জড়িয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় আদালতের নির্দেশে এই পদে নিয়োগও বন্ধ রয়েছে। বুধবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলা চলাকালীন সময়ে মুর্শিদাবাদের একটি স্কুলে বেআইনি নিয়োগের অভিযোগে একটি মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। বিচারপতি বসু বলেন, এই মামলায় যে পদ তৈরি হয়েছিল তা তিনটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন হিসাবে বিজ্ঞাপিত করতে হবে। তিনটি সংবাদপত্রের নামও আদালতে আলোচনার মধ্যে ছিল। এই সময় ঠাট্টার ছলে আইনজীবী শীর্ষান্নো ব্যানার্জি বলেন, একটি বিজ্ঞাপন ‘জাগো বাংলা’ কাগজে দেওয়া যায়। এই সময় মামলাকারী সোমা রায়ের আইনজীবী ফিরদৌস সামিমও ঠাট্টা করে বলেন ‘গণশক্তি’তে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ রয়েছে, সেখানেও বিজ্ঞাপন চালু করতে হবে। এই কথোপকথন নেহাতি টিকা টিপ্পনির স্তরে ছিল।


গত ১৮ নভেম্বর এই অতিরিক্ত শূন্যপদে নিয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল হাইকোর্ট। ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসএসসি’র তৈরি করা এই সুপার নিউমারিক পদে কোনও নিয়োগ করা যাবে না বলেছিল। পরে এই স্থগিতাদেশের মেয়াদ বেড়েছে। এর মধ্যেই রাজ্য সরকার এবং এসএসসি’কে হলফনামা দিয়েছে আদালতে। বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু অতিরিক্ত শূন্যপদ কীভাবে তৈরি হলো তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন। রাজ্য সরকারের তরফে এজি সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতকে জানিয়েছিলেন এসএসসি যেভাবে নতুন অতিরিক্ত পদ তৈরি করেছিল আইনসঙ্গত হয়নি। বরখাস্ত হওয়া বা বেআইনিভাবে নিয়োগ হয়েছে এমন কোনও প্রার্থীকে চাকরি দেবে না স্কুল সার্ভিস কমিশন।
 

Comments :0

Login to leave a comment